সুকান্ত মজুমদার এবং শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।
ব্যক্তি হিসেবে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের বিরোধিতা করা হয়নি। রাজ্যপালের বক্তৃতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার নিজেদের কাজের যে প্রশংসা করেছিল, গত কাল বিজেপি বিধায়কেরা বিধানসভায় তারই প্রতিবাদ করেছিলেন বলে আজ যুক্তি দিলেন পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তবু রাজ্যপাল প্রশ্নে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও সুকান্তের অবস্থানের পার্থক্য অনেকটাই স্পষ্ট বলে মনে করছেন অনেকে।
কাল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে নিজের বক্তৃতায় বোস রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশংসাসূচক অনুচ্ছেদ পড়া শুরু করতেই বিরোধীরা প্রতিবাদ জানান। শুভেন্দুর নেতৃত্বে ‘লজ্জা, লজ্জা’ ধ্বনি তুলে কক্ষত্যাগ করে বিজেপি। পরে শুভেন্দু বলেন, ‘‘রাজ্যপালকে অনুরোধ করেছিলাম অসত্য ভাষণ না পড়ে তা ‘টেবিল’ করে দিতে। তিনি তা না করায় ভিতরে-বাইরে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।’’ শুভেন্দুর দাবি, রাজ্য সরকার রাজ্যপালকে দিয়ে যা করাচ্ছে, সেই প্রেক্ষিতে তাঁরা ‘লজ্জা’ শব্দটি বলেছিলেন।
আজ সুকান্ত বলেন, ‘‘ব্যক্তি হিসেবে রাজ্যপালের বিরোধিতা করেনি দল। মুখ্যমন্ত্রী যে ভাষণ রাজ্যপালকে লিখে দিয়েছিলেন, আমরা তার বিরোধিতা করেছিলাম।’’ সুকান্তের দাবি, বিজেপির প্রথমে ওই ভাবে বিক্ষোভ দেখানোর কোনও পরিকল্পনা ছিল না। কিন্তু বক্তৃতায় রাজ্যপালেরই মর্যাদাহানি হওয়ায় দলের নেতারা বিক্ষোভের পথে হাঁটেন।
জগদীপ ধনখড়ের পরে রাজ্যপাল হিসেবে বোসের জমানায় তাঁর সঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বের ‘সখ্য’ মানতে পারছেন না রাজ্য বিজেপির একটি বড় অংশ। শুভেন্দু কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে এ নিয়ে তাঁর ক্ষোভ জানালেও পরিস্থিতি বিশেষ পাল্টায়নি। কেন্দ্রের শীর্ষ নেতৃত্বের মতে, বোস যা করছেন তা কেন্দ্রের পূর্ণ সম্মতিতেই করছেন। রাজ্যপাল প্রসঙ্গে শুভেন্দুর এমন ভূমিকায় কি বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের সম্মতি রয়েছে? সুকান্ত বলেন, ‘‘এ নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না।’’ আর রাজ্য বিজেপি ধনখড়ের ‘অভাব’ বোধ করছে কি না, সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘ওঁর যা দায়িত্ব ছিল, তা পালন করেছেন।’’
সুকান্তের দাবি, বোস যে বক্তৃতায় রাজ্যের লিখে দেওয়া সব বক্তব্য একেবারে মেনে নিয়ে গত কাল তা পাঠ করেছেন, বিষয়টি এমন নয়। তিনি জেনেছেন, রাজ্যপালকে প্রথমে যে খসড়া বক্তৃতা পাঠানো হয়েছিল, তাতে কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনামূলক মন্তব্য করা হয়েছিল। রাজ্যপাল তা পড়তে রাজি হননি। তাই চূড়ান্ত বক্তৃতায় ওই অংশটি বাদ যায়।