উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে উদ্ধারকাজ চলছে। —ফাইল চিত্র।
উত্তরকাশীর ভাঙা সুড়ঙ্গ থেকে অবশেষে বার করে আনা হবে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিককে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হয়েছিল বুধবার রাতের মধ্যেই উদ্ধারকাজ সফল হতে পারে। কিন্তু তা হয়নি। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যেই শেষ হবে উদ্ধারকাজ। সুড়ঙ্গে ঢুকে ইতিমধ্যেই অনেকটা এগিয়ে গিয়েছেন ২১ জন উদ্ধারকারী। তাঁরা জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্য। সূত্রের খবর, আর মাত্র ১০ মিটার খোঁড়া বাকি আছে। তার পরেই শ্রমিকদের নাগাল পাওয়া যাবে।
অক্সিজেন মাস্ক পরে পাইপের মাধ্যমে সুড়ঙ্গে ঢুকেছেন উদ্ধারকারী দলের সদস্যেরা। তাঁদের কাছে পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি রয়েছে। প্রয়োজন মতো রাস্তা খুঁড়ে খুঁড়ে তাঁরা এগিয়ে যাবেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন উত্তরাখণ্ডের পুষ্কর সিংহ ধামী। ব্যবস্থা করা হয়েছে হাসপাতালের। ৪১টি আসনের অস্থায়ী হাসপাতালের ব্যবস্থাও করা হয়েছে সুড়ঙ্গের কাছে।
আমেরিকায় তৈরি অত্যাধুনিক খননযন্ত্র বুধবার সন্ধ্যায় সুড়ঙ্গের ধ্বংসস্তূপের আরও ছ’মিটার খুঁড়ে ফেলতে সক্ষম হয়েছে। ১৮ মিটার বাকি থাকতেই উদ্ধারকারীরা জানিয়েছিলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উদ্ধারকাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। আরও ছ’মিটার খোঁড়া হয়ে গেলে রাতের মধ্যেই শ্রমিকদের উদ্ধারের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
উদ্ধারস্থলে ইতিমধ্যে ২০টি অ্যাম্বুল্যান্স পৌঁছে গিয়েছে। শ্রমিকেরা সুড়ঙ্গ থেকে বেরিয়ে এলে তাঁদের অ্যাম্বুল্যান্সে তোলা হবে এবং হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার বন্দোবস্ত করা হবে।
উত্তরাখণ্ড পর্যটন দফতরের কর্তা ভাস্কর খুলবে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমরা আরও ছ’মিটার এগোতে পেরেছি। আশা করছি, আগামী দু’ঘণ্টার মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে। ৬৭ শতাংশ খনন সম্পন্ন হয়েছে।’’
উত্তরকাশীর উদ্ধারস্থলে পৌঁছে গিয়েছেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামিও। অ্যাম্বুল্যান্সের পাশাপাশি সেখানে ওষুধপত্রও মজুত রাখা হয়েছে। জরুরি পরিস্থিতির জন্যও প্রস্তুত উদ্ধারকারীরা।
গত ১২ নভেম্বর ভোরে উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে ধস নামে। ভিতরে আটকে পড়েন ৪১ জন শ্রমিক। তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা বার বার ব্যর্থ হয়েছে। সুড়ঙ্গের যে অংশে শ্রমিকেরা আটকে আছেন, কিছুতেই সেখানে পৌঁছতে পারছিলেন না উদ্ধারকারীরা। গত ১১ দিন ধরে বদ্ধ সুড়ঙ্গেই আটকে আছেন শ্রমিকেরা। তাঁদের সঙ্গে প্রথম থেকেই যোগাযোগ রাখা হয়েছিল। পাইপের মাধ্যমে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন পরিজনেরাও। পাইপ দিয়েই পৌঁছে দেওয়া হচ্ছিল খাবার এবং অন্যান্য দরকারি জিনিসপত্র। বুধবার উদ্ধারকাজ প্রায় শেষের পথে।