গর্গকে সরানোয় কি আদানি-যোগ

গর্গের নাম সরাসরি না বললেও কংগ্রেসের অভিযোগ, আদানি গোষ্ঠীর হাতে দু’টির বেশি বিমানবন্দর তুলে দেওয়ার বিষয়ে আপত্তি তুলেছিল আর্থিক বিষয়ক দফতর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৯ ০২:২৩
Share:

সুভাষচন্দ্র গর্গ।

শুধুই বিদেশ থেকে ডলারে ঋণ নেওয়ায় আরএসএস-এর আপত্তি নয়। অর্থ মন্ত্রক থেকে সুভাষচন্দ্র গর্গকে সরিয়ে দেওয়ার পিছনে আরও একটি কারণ রয়েছে বলে দাবি করল কংগ্রেস। তা হল, নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত শিল্পপতি গৌতম আদানিকে বাড়তি সুবিধা দেওয়ায় আপত্তি তুলেছিলেন গর্গ।

Advertisement

গর্গের নাম সরাসরি না বললেও কংগ্রেসের অভিযোগ, আদানি গোষ্ঠীর হাতে দু’টির বেশি বিমানবন্দর তুলে দেওয়ার বিষয়ে আপত্তি তুলেছিল আর্থিক বিষয়ক দফতর। গর্গই এই দফতরের দায়িত্বে ছিলেন। সেই আপত্তি নাকচ করে মোদী সরকার আদানি গোষ্ঠীর হাতে পাঁচটি বিমানবন্দর তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনটির ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ইতিমধ্যেই ছাড়পত্র দিয়ে দিয়েছে।

আজ, রবিবারেও দলের সদর দফতরে সাংবাদিক সম্মেলন করে কংগ্রেস এই অভিযোগ তোলায় নতুন করে দিল্লির রাজনীতিক ও আমলাদের মধ্যে হইচই পড়েছে। কারণ, নতুন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বাজেটের পরেই বিদেশ থেকে ডলারে ঋণ নেওয়ার ঘোষণায় আপত্তি তোলেআরএসএস। যা অর্থসচিব তথা আর্থিক বিষয়ক দফতরের সচিব সুভাষচন্দ্র গর্গের মস্তিষ্কপ্রসূত বলেই সরকারি সূত্রে বলা হয়। গর্গকে সরিয়ে দেওয়ার পরে সরকারের একাংশের দাবি ছিল, প্রধানমন্ত্রীর দফতর অর্থ মন্ত্রককে ডলারে ঋণ নেওয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে বলেছে। কিন্তু অর্থমন্ত্রী সীতারামন আজই এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, এমন কোনও কথা তাঁর জানা নেই। তিনি বলেন, ‘‘আমি কোনও পুনর্বিবেচনা করছি না। আমাকে কেউ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতেও বলেনি।’’ সরকার ডলারে ঋণ নেওয়ার বিষয়ে এগোবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্নে নির্মলার জবাব, ‘‘আমি তো বাজেটে এই ঘোষণা করেছি।’’

Advertisement

এখানেই প্রশ্ন উঠেছে। নির্মলার কথা সত্যি হলে আরএসএস-এর আপত্তি সত্ত্বেও ডলারে ঋণ নিয়ে মোদী সরকার পিছু হঠছে না। তা হলে গর্গকে বিদ্যুৎ মন্ত্রকে পাঠানো হল কেন?

কংগ্রেসের মুখপাত্র পবন খেরার অভিযোগ, দেশের ১২৩টি বিমানবন্দরের মধ্যে ২৫টি বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে মাত্র ১৪টি বিমানবন্দর লাভজনক। আর এই ১৪টির মধ্যে ৫টিই তুলে দেওয়া হচ্ছে আদানি গোষ্ঠীর হাতে। আমদাবাদ, লখনউ, ম্যাঙ্গালুরু, তিরুবনন্তপুরম, জয়পুরের মধ্যে প্রথম তিনটির ক্ষেত্রে মন্ত্রিসভা সিলমোহরও দিয়েছে। দরপত্র ডেকে নিয়ম মেনে হলেও, আর্থিক বিষয়ক দফতরের এতে আপত্তি ছিল। ইউপিএ আমলে জিএমআর গোষ্ঠী দিল্লি ও মুম্বই বিমানবন্দরের জন্য সর্বোচ্চ দর হাঁকলেও,
মন্ত্রকের আপত্তিতে দু’টির ভার তাদের দেওয়া হয়নি। আর্থিক বিষয়ক দফতর ও নীতি আয়োগ এ বার সেই দৃষ্টান্ত মেলে ধরেছিল। অনভিজ্ঞতার প্রসঙ্গও তোলা হয়। কিন্তু সচিবদের গোষ্ঠী সেই আপত্তি খারিজ করে দেয়।

যাঁকে নিয়ে বিতর্ক, সেই গৌতম আদানি আজ ছিলেন লখনউয়ে, উত্তরপ্রদেশ সরকারের শিল্প সম্মেলনে। যেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আদানি সেখানে অমিত শাহর ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ২৫ বছর বয়স থেকেই তিনি অমিতকে চেনেন। সে সময় অমিত পিভিসি পাইপের ব্যবসা করতেন। ব্যবসা ভালই বুঝতেন। কংগ্রেসের অভিযোগ,
মোদী নিজের শিল্পপতি বন্ধুকে এই বরাত পাইয়ে দিয়েছেন। তার জন্য এবার যাত্রীদের পরিষেবা ফি-র দেড় গুণ ‘বিমান নিরাপত্তা ফি’ গুণতে হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement