ছবি: পিটিআই।
করোনার আতঙ্কের মধ্যেও পড়ুয়াদের সমস্যাকে থোড়াই কেয়ার করে পরীক্ষা চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠছে শিক্ষা মন্ত্রকের বিরুদ্ধে। কিন্তু মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্কের পাল্টা দাবি, পরীক্ষার্থীদের অনুরোধেই সেপ্টেম্বরে সর্বভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষা (জেইই-মেন) এবং ডাক্তারির প্রবেশিকা (নিট-ইউজি) নেওয়ার বন্দোবস্ত করেছেন তাঁরা। ওই দুই পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের হল-এ পৌঁছতে যাতে কোনও অসুবিধা না-হয়, সমস্ত রাজ্যকে তা নিশ্চিত করার অনুরোধ জানিয়েছে আয়োজক সংস্থা এনটিএ-ও।
জেইই-মেন এবং নিট-ইউজি পিছোনোর বিষয়ে চাপ তৈরির জন্য বুধবার আলোচনায় বসতে চলেছেন বিরোধী নেতারা। বিক্ষোভ জারি পড়ুয়াদের একাংশের তরফ থেকেও। এই প্রেক্ষিতে এ দিন এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শিক্ষামন্ত্রীর দাবি, “বহু পড়ুয়া এবং অভিভাবকেরাই লাগাতার আমাদের জিজ্ঞাসা করে গিয়েছেন যে, নিট, জেইই-র পরীক্ষা কেন নেওয়া হচ্ছে না? পড়ুয়ারা কত দিন পড়তে থাকবেন? শেষ পর্যন্ত কী হবে? কত দিনের মধ্যে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হবে? এর আগে পরিস্থিতি বুঝে পরীক্ষা দু’বার পিছোনো হয়েছে।…জেইই-মেনের জন্য যে ৮.৫৮ লক্ষ পড়ুয়া নাম নথিভুক্ত করিয়েছিলেন, গত কাল পর্যন্ত তাঁদের মধ্যে ৭.২৫ লক্ষ অ্যাডমিট কার্ড ডাউনলোড করেছেন।” অর্থাৎ শিক্ষামন্ত্রীর ইঙ্গিত, পরীক্ষা দিতে আপত্তি নেই অধিকাংশ পরীক্ষার্থীরই।
নিশঙ্ক জানিয়েছেন, পড়ুয়াদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। চেষ্টা করা হয়েছে প্রত্যেককে তাঁদের পছন্দ অনুযায়ী সুবিধাজনক কেন্দ্র দেওয়ার। তাঁর আশ্বাস, “আমরা পরীক্ষার্থীদের পাশে রয়েছি। তাঁদের প্রত্যেকটি অসুবিধার কথা মাথায় রাখা হচ্ছে।”
এ দিনই জারি করা বিবৃতিতে এনটিএ-রও দাবি, পড়ুয়াদের সুরক্ষার সঙ্গে কোনও আপোস করা হবে না। মানা হবে প্রতিটি স্বাস্থ্যবিধি। তারা জানিয়েছে, ২০১৯ সালের নিট পরীক্ষায় পশ্চিমবঙ্গে ৬৭,৭৭৬ জন পরীক্ষার্থীর জন্য কেন্দ্র ছিল ১১২টি। এ বছর ৭৭,০৬১ জনের জন্য কেন্দ্রের সংখ্যা ১৮৯। সারা দেশে গত বছর ১৫.১৯ লক্ষ পরীক্ষার্থীর জন্য যেখানে ২৫৪৬টি কেন্দ্র ছিল, সেখানে এ বার ১৫.৯৭ লক্ষ পরীক্ষার্থীর জন্য রয়েছে ৩৮৪২টি। একই ভাবে পরীক্ষা কেন্দ্র বাড়ানো হয়েছে জেইই-মেনেরও। পরীক্ষার দিনে (জেইই-মেন ১ থেকে ৬ সেপ্টেম্বর আর নিট-ইউজি ১৩ সেপ্টেম্বর) পড়ুয়াদের যাতে সময়ে কেন্দ্রে পৌঁছতে অসুবিধা না-হয়, তা নিশ্চিত করার অনুরোধ জানিয়ে সমস্ত রাজ্যকে ইতিমধ্যে চিঠিও দিয়েছে তারা।
মন্ত্রী এবং এনটিএ আশ্বাস দিলেও পড়ুয়াদের একাংশের ক্ষোভ মেটেনি। মঙ্গলবার তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন কিশোরী সুইডিশ পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের খবর, পরিবেশকে অগ্রাহ্য করার জন্য দুনিয়ার তাবড় নেতাদের ‘বকাঝকা করে শিরোনামে আসা’ গ্রেটা বলেছেন, “অতিমারির সময়ে এমন গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় পড়ুয়াদের বসতে বলা ঠিক নয়।”