উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজের এই স্কুলটির নাম শ্রী মহাপ্রভু পাবলিক স্কুল। অভুক্ত মানুষদের নিজেদের টিফিনের একটা অংশ শেয়ার করে নজির গড়ে তুলেছে এই স্কুলের পড়ুয়ারা।
আর সবচেয়ে বড় বিষয় হল টিফিন শেয়ার করা বা অভুক্তদের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার বিষয়ে পড়ুয়াদের থেকেই প্রথম প্রস্তাব আসে।
১৬অক্টোবর ছিল বিশ্ব খাদ্য দিবস। তার কয়েকদিন আগেই স্কুলের নবম ও দশম শ্রেণির পড়ুয়ারা বিশ্বজুড়ে অভুক্তদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে।
পড়ুয়াদের এই উদ্বেগ স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল-শিক্ষকদেরও ভাবিয়ে তোলে। শেষে পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁরা স্থির করেন, ১৬ অক্টোবর বিশ্ব খাদ্য দিবসের দিন অভুক্তদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হবে।
কিন্তু কী ভাবে রূপায়িত হবে সেই পরিকল্পনা? স্কুলেই ফুড ব্যাঙ্ক তৈরি করার পরিকল্পনা নেন তাঁরা।
তবে শুধু ১৬ অক্টোবরই নয়, সেই দিন থেকেই প্রত্যেক পড়ুয়া তাদের টিফিন থেকে একটা রুটি শেয়ার করতে শুরু করে। সেই রুটি পৌঁছে যায় স্কুলের কাছের একটি হাসপাতালের বাইরে।
ওই দিন থেকেই চলতে শুরু করে শ্রী মহাপ্রভু পাবলিক স্কুলের ফুড ব্যাঙ্ক। প্রথম দিনেই ফুড ব্যাঙ্কে দুহাজার রুটি সংগ্রহ হয়।
এর জন্য প্রতি ক্লাসে একজন করে মনিটর স্থির করে দেন শিক্ষকরা। স্কুলের প্রথম ক্লাস শুরু হওয়ার আগেই সমস্ত পড়ুয়া একটা করে রুটি ক্লাস মনিটরকে দিয়ে দেয়। মনিটর সেটা ক্লাস-টিচারের কাছে জমা করে।
এর পর ক্লাস-টিচার প্রতি ফ্লোরে রাখা নির্দিষ্ট বাস্কেটে সেই রুটি জমা করেন। তারপর সেই সমস্ত বাস্কেট চলে যায় স্কুলের ফুড ব্যাঙ্কে। স্কুলের প্রিন্সিপ্যাল স্কুল ফান্ড থেকে এর সঙ্গে চাটনির ব্যবস্থাও করেছেন।
প্রতিদিন নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত কয়েকজন পড়ুয়া এবং দুজন শিক্ষক সেই রুটি পৌঁছে দেন স্বরূপরানি নেহরু হাসপাতালের বাইরে। অর্থের অভাবে রোগীদের আত্মীয়স্বজনরা অনেকেই হাসপাতালের বাইরে অভুক্ত থেকে যান। তাঁদের মুখেই খাদ্য তুলে দিচ্ছে পড়ুয়ারা।
প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ১১টার মধ্যে ফুড ব্যাঙ্ক পৌঁছে যায় এই হাসপাতালে। শুধু এই হাসপাতালকেই বেছে নিল কেন তারা?
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আশেপাশের এলাকায় খোঁজ খবর নিয়ে জানা গিয়েছে, এই হাসাপাতালে প্রচুর গরীব রোগীদের চিকিৎসা হয়। তাঁদের পরিবার অনেক সময় না খেয়েই হাসপাতালে দিন কাটান। সেই জন্যই এই হাসপাতালকে বেছে নেওয়া হয়েছে।