ছাত্রছাত্রীদের মিছিল। ছবি: এক্স।
বিক্ষোভে বিপ্লবে কী যে ঠিক চাই, সেটা স্পষ্ট নয় তাঁদের প্রায় কারও কাছেই। নয়ডা ও গ্রেটার নয়ডার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন ছাত্রছাত্রীদের স্লোগান-কল্লোলিত মিছিল বুধবার নয়াদিল্লিতে কংগ্রেসের সদর দফতরে হাজির হয়েছিল। একটি হিন্দি সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তাঁদের দাবিদাওয়া-চাহিদা নিয়ে সেই প্রতিবাদীরা যা সব বলেছেন, তা সামনে আসতেই হাসির রোল উঠেছে সমাজমাধ্যমে।
এক্স হ্যান্ডলে জনৈক লক্ষ্মী শর্মা বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের তরফে (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) আজ দাবি করেন, অভ্যন্তরীণ পরীক্ষায় পুরো নম্বর, পদ্মনেত্রী ও অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউতকে চাক্ষুষ করার সুযোগ মিলবে জানিয়ে তাঁদের নিয়ে গিয়ে হাতে ধরানো হয়েছিল ছাপা প্ল্যাকার্ড। বলা হয়েছিল, কংগ্রেসের বিরুদ্ধে কড়া
কড়া কথা বললেই হবে। ‘সরকারি অনুষ্ঠান, মজা হবে’— এমন আহ্বানের
হোয়াটসঅ্যাপ বার্তাও সমাজমাধ্যমে সামনে এসেছে (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার)। এই প্রসঙ্গে কেউ কেউ তরুণ প্রজন্মের সার্বিক রাজনৈতিক সচেনতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন। লক্ষ্মীর দাবি, তাঁরা ‘মূলত রাজনৈতিক’।
দেশে ধনবণ্টনের অসাম্য ও স্যাম পিত্রোদার উত্তরাধিকার আইন সংক্রান্ত একটি মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তাহারের সমালোচনামূলক বিভিন্ন বক্তব্যই বেশি চোখে পড়েছে ওই মিছিলের প্ল্যাকার্ডে। কিন্তু ইস্তাহার পড়া তো দূর, বিষয়গুলি সম্পর্কে ওই প্রতিবাদীদের যে কোনও ধারণাই নেই, সেটা ক্যামেরার সামনে মুখ খুলতেই স্পষ্ট হয়েছে এবং লাজুক হেসে ক্ষান্ত দিয়েছেন তাঁরা। কেউ হোঁচট খেয়েছেন হাতের প্ল্যাকার্ডের ‘আর্বান নকশাল’ কথাটি পড়তে, তার পরে পুরোপুরি ধরাশায়ী হয়েছেন অর্থ বলতে গিয়ে!
বিজেপি আমলের শিক্ষানীতি নিয়ে তোপ দেগে কংগ্রেসের, বিজেপির কিছু নেতার কালো টাকা সাদা করার উদ্দেশ্যে ব্যাঙের ছাতার মতো গজাচ্ছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়; অধিকাংশই ‘হোয়াটসঅ্যাপ ইউনিভার্সিটি’, অর্থাৎ সমাজমাধ্যমের রটনাকেই পড়াশোনা বলে ধরা হয়। কংগ্রেস নেত্রী সুপ্রিয়া শ্রীনতে বলেন, ‘আফসোস, ভারতের ভবিষ্যৎ হোয়াটসঅ্যাপের-মিথ্যা আর সত্যের ফারাক জানে না’। মিছিলে নাম জড়ানো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাপত্রে বাসন বাজানোর শব্দ-তরঙ্গে করোনা দূর হয় বলে দাবি করা হয়েছে, এমন ছবিও (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) চাউর হয়েছে। তৃণমূলের নেত্রী মহুয়া মৈত্রের কটাক্ষ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ডিগ্রি নির্ঘাৎ ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের। কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম বলেছেন, বিক্ষোভটি গণতন্ত্র ও প্রতিবাদের মৌলিক অধিকার নিয়ে মশকরা হয়ে উঠেছিল।
বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য এখন এই ‘ছাত্র-মিছিল প্রসঙ্গ’ থেকে গা বাঁচিয়েই চলছেন।