মটক প্রার্থী না দেওয়ার প্রতিবাদে তিনসুকিয়া জেলায় বন্ধ ডেকেছিল মটক যুব ছাত্র সংগঠন। চাবুয়ায় ছিল পথ অবরোধ। তার জেরে আজ রাহুল গাঁধী ডিগবয়ের সভায় পৌঁছনোর আধঘণ্টা আগে সেখানে শ’পাঁচেক লোক হাজির হয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত আশপাশের চা বাগান ও গ্রাম থেকে আরও হাজার দু’য়েক দর্শক এনে রাহুলের সামনে কোনওমতে মুখরক্ষা করলেন তিনসুকিয়া জেলা কংগ্রেসের কর্মকর্তারা।
কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সভায় নেতাদের একই বক্তব্যের টেলিভিশন সম্প্রচার দেখে উজানি অসমের বাসিন্দাদের তা কার্যত মুখস্থ হয়ে গিয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে জনসভাগুলিতে উপস্থিতি ক্রমেই কমছে। লোক না আসায় হাইলাকান্দিতে গুলাম নবি আজাদের সভা বাতিল করা হয়। তার মধ্যে তিনসুকিয়ার ডিগবৈ, মরাণ আর শোণিতপুর জেলার তেজপুরে প্রথম পর্যায়ের ভোটের শেষ দিনের সফর শেষ করে গেলেন রাহুল গাঁধী।
এ দিনও রাহুলের ভাষণে ঘুরেফিরে এসেছে ১৫ বছর আগের 'অনুন্নত' অসমের সঙ্গে আজকের 'বিকশিত' অসমের তুলনা। বিভিন্ন রাজ্যে সংঘর্ষের জন্য বিজেপি ও আরএসএসকে দায়ী করা। রাহুল বলেন, ‘‘ক্ষমতা পেলে অসমের মতো বিভিন্ন জাতি-ধর্ম-ভাষার রাজ্যেও আরএসএসের মত চাপিয়ে দেবে বিজেপি। স্তব্ধ হবে বিকাশ। বইবে রক্ত।’’ তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মুখে অসমের ভাল করার কথা বলে কার্যক্ষেত্রে রাজ্যের বিশেষ সুবিধা বন্ধ করে দিয়েছেন। গত ১৫ বছরে গড়া সড়ক, মেডিক্যাল কলেজ, বিভিন্ন প্রকল্পের উদাহরণ টেনে কংগ্রেস নেতা জানান, লোকসভার আগে দেওয়া একটিও প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে না পারায় বিহারের মানুষ মোদীকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। অসমের মানুষ যেন মোদীকে তাঁর দেওয়া প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
রাহুলের অভিযোগ, সব ধনী ব্যক্তি, অভিনেতা বা বারাক ওবামাদের সঙ্গে ‘সেলফি’ তোলা মোদী বোঝেন না দেশ আদতে চালান দরিদ্র কৃষকরা। মোদী ও তাঁর মন্ত্রীরা বিজয় মাল্য, ললিত মোদীদের মতো হাজার হাজার কোটি প্রতারণা করা ব্যবসায়ীদের পালাতে সাহায্য করেছেন।
রাহুলের প্রতিশ্রুতি, ভোটে জিতলে কংগ্রেস ১০ লক্ষ বেকারকে ও ২ লক্ষ শিক্ষককে চাকরি দেবে। আমলা বা পুলিশকর্তা হতে চাওয়া প্রতি জেলার ১০০ ছাত্রকে দেওয়া হবে বৃত্তি ও বিশেষ প্রশিক্ষণ। তাঁর ভরসা, চা বাগানে গৃহ প্রকল্পের অধীনে পাঁচ বছরের মধ্যে সকলের পাকা ঘর হবে। মোদী চা বাগানের রেশন বন্ধ করে দিয়েছিলেন। কংগ্রেস তা হতে দেবে না। বিনামূল্যে রেশন পাবেন সব চা শ্রমিক।