কর্মসংস্থান না হলে কিন্তু শেষ মোদীর রূপকথা

বরাবর ঠোঁটকাটা। ২০০৮ সালে নোবেল পাওয়া সেই ক্রুগম্যান বলছেন, অসীম সম্ভাবনার দরজায় কড়া নাড়ছে ভারত। তার ডানায় জোর আছে চিনেরও উপরে ওড়ার।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৮ ০২:৪৪
Share:

হুঁশিয়ারি: পল ক্রুগম্যান

কাজ চাই। কারখানায়। নইলে বেকারত্বের খাদেই তলিয়ে যাবে ভারতীয় অর্থনীতির উড়ানের গল্প। কোনও বামপন্থী নেতা নন, দিল্লির এক অনুষ্ঠানে এসে এই হুঁশিয়ারি নোবেলজয়ী মার্কিন অর্থনীতিবিদ পল ক্রুগম্যানের।

Advertisement

বরাবর ঠোঁটকাটা। ২০০৮ সালে নোবেল পাওয়া সেই ক্রুগম্যান বলছেন, অসীম সম্ভাবনার দরজায় কড়া নাড়ছে ভারত। তার ডানায় জোর আছে চিনেরও উপরে ওড়ার। কারণ, এ দেশ উপচে পড়ছে কাজ করতে সক্ষম, এমন মানুষে। তাঁরা ‘স্মার্ট’, ইংরেজিতে দড়। কিন্তু এই বিপুল সম্ভাবনা পূরণের প্রথম শর্ত, তাঁদের হাতে কাজ জোগানো। কিন্তু এ দেশের কল-কারখানা সেই বন্দোবস্ত করতে পারছে কই? যা শুনে অনেকেরই প্রশ্ন, এই বার্তা ৭ রেসকোর্স রোডের বাসিন্দার কানে পৌঁছবে তো?

গত লোকসভা ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদী প্রতিনিয়ত প্রতিশ্রুতি দিতেন বছরে দু’কোটি কর্মসংস্থানের। অথচ এখন বছরে গড়ে দু’লক্ষ কাজের সুযোগ তৈরি করতে হিমসিম খাচ্ছেন।

Advertisement

বিরোধীদের অভিযোগ, যেটুকু কাজ রয়েছে, তাতেও থাবা বসিয়েছে নোটবন্দি ও তড়িঘড়ি জিএসটি চালুর জোড়া ধাক্কা। অনেকে বলছেন, শিল্প আদৌ হচ্ছে কোথায়, যে কাজ হবে? সরকার বলছে শিল্পের চাকা ঘুরছে দ্রুত। কিন্তু কোথায়, তার হদিশ নেই।

আরও পড়ুন:বিদেশি মুদ্রায় আয় কমেছে, জানাল কেন্দ্র

পরিস্থিতি কী, তার হাতেগরম উদাহরণ ক’দিন আগে সরকারি অফিসে ৩৬৬টি পিওনের পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি। আবেদন জমা পড়েছিল ২৩ লক্ষ! ২৫৫ জন পিএইচডি।

২ লক্ষের বেশি ইঞ্জিনিয়ার। ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের। ছবি সারা দেশেরই।

আশঙ্কার ঠিক এই ছবিটিই তুলে ধরেছেন ক্রুগম্যান। তাঁর কথায়, অনেক সম্ভাবনা সত্ত্বেও জাপান যে অর্থনীতির সেরা শক্তি হয়ে উঠতে পারল না, তার মূল কারণ কর্মক্ষম মানুষের সংখ্যায় টান। এখন ওই একই রাস্তায় গড়াচ্ছে চিন। তার সঙ্গী ধারে কেনাকাটার বহর বাড়ার বিপজ্জনক বুদ্বুদ। যা ফাটলেই বড় আর্থিক সঙ্কটে পড়বে চিন। এই অবস্থায় নতুন আর্থিক শক্তি হয়ে ওঠার মোহনায় দাঁড়িয়ে ভারত।

ক্রুগম্যান বলেন, সত্তরের দশকেও যে দেশ ১-১.৫% বৃদ্ধিতে খুঁড়িয়ে হাঁটত, গত দু’দশক তারা প্রথম সারিতে। তা-ও মূলত পরিষেবা রফতানিতে ভর করে! কিন্তু যন্ত্র আর প্রযুক্তির কাছে কাজ খোয়ানোর এই জমানায় তার সামনে চ্যালেঞ্জ নতুন কাজের সুযোগ তৈরি। কারখানায়।

শুধু পকোড়া বেচে চিনকে টেক্কা দেওয়া বোধহয় যাবে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement