এই ব্যাট দিয়েই আকাশ পিটিয়েছিলেন পুর আধিকারিককে। —ফাইল ছবি
বিজেপির ‘ব্যাটম্যান’ আকাশ বিজয়বর্গীয় সম্পর্কে কড়া মনোভাব নিয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। এমনও বলেছেন যে, এক বিধায়ক খোয়া গেলেও কোনও ক্ষতি নেই। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পরেও কড়া কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হল না বিজেপির সাধারণ সম্পাদক ও পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র ছেলে, আকাশের বিরুদ্ধে।
কারণ কী? উত্তর দিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেসের নেতা দিগ্বিজয় সিংহ। তাঁর মতে, নরেন্দ্র মোদী আর অমিত শাহের মধ্যে মতান্তরই এর কারণ। মোদী ক্ষুব্ধ হলেও অমিত শাহ চাইবেন না কৈলাসের ছেলের কোনও ক্ষতি হোক। কারণ, কৈলাস আসলে অমিত শাহের ‘বন্ধু’।
ইনদওরে এক পুর-আধিকারিককে ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে পিটিয়ে শিরোনামে এসেছেন আকাশ। জেলেও কাটাতে হয় কয়েক রাত। ছাড়া পাওয়ার পর তাঁকে স্বাগত জানাতে বিজেপির কর্মীরা শূন্যে গুলি ছোড়েন। ছেলের কীর্তিকে সমর্থন করেন কৈলাসও। আকাশ নিজেও জেল থেকে বেরিয়ে এমন আশ্বাস দেননি যে, এমন ঘটনা আর ঘটবে না।
প্রধানমন্ত্রী সেই সময় ছিলেন বিদেশে। গত কাল দলের লোকসভা ও রাজ্যসভা মিলিয়ে প্রায় চারশো সাংসদের সামনে ওই ঘটনা নিয়ে অসন্তোষ জানান প্রধানমন্ত্রী। এই ধরনের নেতা ও তাঁদের সমর্থনকারীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের কথা বলেন। তাঁর কথায়, ‘‘এই ধরনের ব্যক্তিদের দলে রাখার কোনও অর্থ নেই। সে তিনি যাঁরই ছেলে হোন। এক জন বিধায়ক কম হলে দলের কিছু যায় আসে না।’’
প্রধানমন্ত্রী যখন এ সব বলছেন, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ সামনে বসেছিলেন। ছিলেন কৈলাসও। আকাশের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা যায়, তা নিয়ে দলের মধ্যে গত কাল থেকেই আলোচনা হচ্ছে। দলের একাংশ চাইছিল, প্রজ্ঞা ঠাকুরের মতোই আকাশকে নোটিস দিয়ে বিষয়টি শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হোক। তাতে ক’দিনের মধ্যে বিতর্ক ধামাচাপা পড়ে যাবে। কিন্তু খোদ প্রধানমন্ত্রী এত কড়া কথা বলে ফেলায় দলের নেতারাও ধন্দে। এখন কড়া পদক্ষেপ না করলে প্রধানমন্ত্রীরই ‘সম্মান’ নিয়ে টানাটানি পড়বে। বিজেপির অন্দরেই প্রশ্ন উঠবে, প্রধানমন্ত্রী বলার পরেও তবে পার পাওয়া যায়!
দিগ্বিজয়রা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন এখন থেকেই। আজ তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আকাশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি জেল থেকে বেরোনোর পর বিজেপির যে কর্মীরা স্বাগত জানিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। বাস্তবে তা হলে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন। আর না-হলে তাঁর কথা ও কাজে ফারাক ধরা পড়ে যাবে। আমার মনে হয় না, নিজের বন্ধু কৈলাসের ছেলের কোনও লোকসান চাইবেন অমিত শাহ। দেখা যাক।’’