বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় বিগত ইউপি সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে সংসদের ভিতরে-বাইরে পাল্টা আক্রমণে নামল কংগ্রেস। তাদের দাবি, সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর বক্তব্যের ব্যাখা দিতে হবে।
বিজেপির জাতীয় পরিষদের বৈঠকে গত শনিবার নরেন্দ্র মোদী অভিযোগ করেছিলেন “বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বালি সম্মেলনে ইউপিএ সরকার ভারতের কৃষকদের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়েছে। সঙ্কটে ফেলে দিয়েছে খাদ্য-সুরক্ষার বিষয়টিকে।” খোদ প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এমন অভিযোগ আসায় কংগ্রেস নেতৃত্ব আজ প্রথমে রাজ্যসভায় এ নিয়ে সরব হন। মোদীর বক্তব্যকে মিথ্যা প্রচার বলে দাবি করে রাজ্যসভার তাঁর ব্যাখ্যা দাবি করেন তাঁরা। পরে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী আনন্দ শর্মা বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যের ব্যাখ্যা না দেওয়া পর্যন্ত হাল ছাড়ার প্রশ্ন নেই। বাজেট অধিবেশনের বাকি তিন দিন ধারাবাহিক ভাবে সংসদে এই দাবি জানিয়ে যাবে কংগ্রেস।
দলের জাতীয় পরিষদের বৈঠকে বস্তুত ইউপিএ-কে দুষে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় নিজের সরকারের অবস্থান সম্পর্কে কৃতিত্ব নিতে চেয়েছিলেন মোদী। তাঁর কথায়, “গোটা দুনিয়ায় একঘরে হয়ে গেলেও এনডিএ সরকার খাদ্য-সুরক্ষার প্রশ্নে কোনও আপস করবে না।” ইউপিএ জমানায় বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বালি সম্মেলনে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আনন্দ শর্মা। তিনি মোদীর বক্তব্য খণ্ডন করে বলেন, “খাদ্য-সুরক্ষার বিষয়টি যে কোনও দেশের সার্বভৌম অধিকার। তা কখনওই বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার আলোচ্যসূচিতে ছিল না। এটা খুবই অস্বস্তির বিষয় যে, প্রধানমন্ত্রী গণবন্টন ব্যবস্থায় মজুত ও খাদ্য-সুরক্ষার মধ্যে ফারাক বোঝেন না। দেশের প্রধানমন্ত্রীর অন্তত এটুকু জ্ঞান ও বোধ থাকা উচিত। হয় তাঁর সেটা নেই। নয়তো দেশকে ভুল বোঝাচ্ছেন তিনি।” কংগ্রেসের আক্রমণের জবাব দেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তাঁর কথায়, “বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় ইউপিএ এবং এনডিএ সরকারের কৌশল ও মতের মধ্যে ফারাক রয়েছে। প্রতিটি সরকার তার বিবেচনা মতো সিদ্ধান্ত নেয়।” কংগ্রেস কিন্তু অর্থমন্ত্রীর ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হতে পারছে না। তাদের ধারণা, প্রধানমন্ত্রী কখনওই নিজে এ ব্যাপারে সংসদে ব্যাখ্যা দিতে চাইবেন না। কংগ্রেস তাই তাঁর কাছ থেকেই ব্যাখ্যা চায়।