বনকর্মীদের জীবন খুবই কঠিন। হিংস্র বন্যপ্রাণীদের মাঝে প্রায় সারাদিনই কাটাতে হয় তাঁদের। ভয় না পেয়ে তাদের সেবা করে যেতে হয়।
তবে একজন বনকর্মী কতটা সাহসী হতে পারেন? নিজের প্রাণের তোয়াক্কা না করে বন্যপ্রাণীদের জন্য কতটা নিজেকে উত্সর্গ করতে পারেন?
এর আদর্শ উদাহরণ উত্তরপ্রদেশের মহারাজগঞ্জ জেলার এই বনকর্মীরা। মহারাজগঞ্জ জেলা অরণ্যে চিতাবাঘের সংখ্যা খুব বেশি। বনকর্মীদের মাঝেমধ্যেই চিতাবাঘের সম্মুখীন হতে হয়।
চিতাবাঘের মুখোমুখি হলে যেখানে বেশিরভাগ বনকর্মীই স্বাভাবিক ভাবে নিজের সুরক্ষা আগে বিচার করেন, তাঁদের মধ্যে ব্যতিক্রম কিন্তু এই বনকর্মীরা।
২০১৮ সালে এক অসুস্থ চিতাবাঘকে বাঁচিয়ে নজির গড়ে তুলেছেন তাঁরা। তবে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সেই খবর প্রকাশিত হলেও, তাঁদের নাম বা ছবি ছাপাতে রাজি হননি তাঁরা। তাই আজও তাঁরা গোপনেই রয়েছেন।
মহারাজগঞ্জের দক্ষিণী চকে রাউন্ড দেওয়ার সময় ওই বনকর্মীরা আচমকাই ঝোপের মধ্যে একটি চিতাবাঘকে দেখতে পান। চিতাবাঘটা ভীষণ অসুস্থ ছিল এবং সম্পূর্ণ অচৈতন্য অবস্থায় সেখানে পড়েছিল।
তাঁরা তখনই সাহায্য চেয়ে ফরেস্ট রেঞ্জার দয়াশঙ্কর তিওয়ারিকে খবর দেন। তিনি আবার জেলা ফরেস্ট অফিসার মণীশ সিংহকে বিষয়টি জানান।
চিতাবাঘটিকে উদ্ধার করে পশু চিকিৎসালয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য খাঁচার প্রয়োজন ছিল। কারণ খাতা ছাড়া কোনও ভাবেই অসুস্থ চিতাবাঘকে উদ্ধার করা সম্ভব ছিল না।
কিন্তু অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেও খাঁচা এসে পৌঁছয়নি। এ দিকে চিতাবাঘের অবস্থারও ক্রমে অবনতি হচ্ছিল।
সেই দেখে আর অপেক্ষা করতে পারেননি ওই বনকর্মীরা। নিজেরাই এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পৌঁছে দেন।
নিজেদের সুরক্ষার কথা না ভেবে একটি মোটরবাইকে চাপিয়ে ওই চিতাবাঘটিকে প্রথমে বন দফতরের অফিসে নিয়ে যান তাঁরা।
সেখান থেকে খাঁচার ব্যবস্থা করে তাকে হাসপাতালে পৌঁছে দেন। ওই বনকর্মীদের প্রচেষ্টায় খুব দ্রুত চিকিৎসা পেয়ে বর্তমানে সুস্থ চিতাবাঘটি। ওই জঙ্গলেই তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।