ফাইল চিত্র।
মহারাষ্ট্রের জোট সরকারের সঙ্কটের মধ্যে বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে এনসিপি-র শীর্ষ নেতা শরদ পওয়ারের ‘গোপন বৈঠক’কে ঘিরে ব্যাপক জল্পনার সৃষ্টি হয়েছে। মহারাষ্ট্রের উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের ভবিষ্যৎ নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।
শিল্পপতি মুকেশ অম্বানীর বাসভবনের বাইরে রাখা গাড়িতে বিস্ফোরক উদ্ধার এবং সেই ঘটনার সঙ্গে পুলিশকর্তা সচিন ওয়াজ়ের যোগসাজশের অভিযোগ, পরে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা এনসিপি নেতা অনিল দেশমুখের বিরুদ্ধে মুম্বইয়ের প্রাক্তন পুলিশকর্তা পরমবীর সিংহের আনা তোলাবাজির অভিযোগকে ঘিরে বেশ কিছু দিন ধরে মহারাষ্ট্রের রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিজেপি দেশমুখের ইস্তফা দাবি করলেও এনসিপি তাতে রাজি নয়। মহারাষ্ট্রের জোট সরকারের প্রধান কারিগর পওয়ার মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে জানিয়েছেন, ওই অভিযোগ নিয়ে তদন্ত হতে পারে কিন্তু মন্ত্রীর ইস্তফা চেয়ে বিজেপির চাপের সামনে মাথা নোয়ানো চলবে না। এরই মধ্যে দেশমুখকে নিশানা করে শিবসেনা মুখপত্রে প্রকাশিত নিবন্ধ জোট রাজনীতিকে আরও ঘোরালো করে দিয়েছে। কংগ্রেস ও শিবসেনা কিছুটা সময় নিয়ে দেশমুখকে সরানোর পক্ষপাতী। পওয়ার তাতে নারাজ।
শনিবার পওয়ার ও তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতা প্রফুল্ল পটেল আমদাবাদে মোদী-ঘনিষ্ঠ এক শিল্পপতির বাসভবনে অমিত শাহের সঙ্গে নৈশভোজ সেরেছেন— এমন খবর সামনে এসেছে। পওয়ারের দলের মুখপাত্র নবাব মালিক এই বৈঠকের কথা অস্বীকার করলেও জল্পনা উস্কে দিয়েছে অমিত শাহের মন্তব্য। এই বৈঠককে নিয়ে প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের অমিত বলেছেন, ‘‘সব কিছু জনসমক্ষে নিয়ে আসা যায় না।’’ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর, শনিবার রাতে জয়পুর থেকে মুম্বই ফেরার পথে আমদাবাদে পৌঁছে ছিলেন পওয়ার ও পটেল। সেখানে ওই শিল্পপতির বাড়িতে যান তাঁরা। কিছু ক্ষণ পরে অমিত শাহ আসেন। একটি টিভি চ্যানেল পুলিশ সূত্রকে তুলে ধরে জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর গতিবিধি নিয়ে সেই রাতে বিশেষ গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়েছিল। তিন জনের কী আলোচনা হয়েছে, তা অবশ্য জানা যায়নি।
তবে জল্পনা শুরু হয়েছে, মহারাষ্ট্রে জোট রাজনীতির সমীকরণে কোনও পরিবর্তনের চেষ্টা হচ্ছে না তো? উদ্ধবকে ছেড়ে বিজেপি-এনসিপি-র মধ্যে তৈরি হচ্ছে না তো কোনও নতুন সমীকরণ? ইউপিএ চেয়ারপার্সন হিসেবে সনিয়া গাঁধীর জায়গায় পওয়ারকে নিয়ে আসতে আগ্রহী বিরোধী দলের অনেক নেতা। তাঁরা মনে করছেন, বিভিন্ন সম-মনোভাবাপন্ন আঞ্চলিক দল এ নিয়ে চাপ বাড়়ালে দলে নেতৃত্বের সঙ্কটের মধ্যে কংগ্রেস তা মেনে নিতে বাধ্য হবে। পওয়ারও বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াচ্ছেন। এই প্রেক্ষাপটে আমদাবাদের ‘গোপন বৈঠকে’ কী আলোচনা হল, তা অবশ্য পর্দার আড়ালেই রয়ে গিয়েছে।