ফাইল চিত্র।
আর্থিক ভাবে দুর্বল ব্যক্তিরাই এ যাবৎ ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্পের সুবিধা পেতেন। আগামী দিনে কেন্দ্র দেশের সব মানুষকেই ওই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনা নিয়েছে বলে আজ জানালেন প্রধানমন্ত্রী। আজ স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লার বক্তৃতা থেকে ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্পের পরিধি বাড়ানোর সঙ্গেই করোনা আবহে দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উজ্জীবিত করতে দেশের প্রতিটি ব্লকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা সংক্রান্ত ল্যাবরেটরি ও হাসপাতাল গড়ার কথা ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
কেরল, মহারাষ্ট্র, উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাব এখনও রয়ে গিয়েছে। সংক্রমণের হারও ওই রাজ্যগুলিতে ঊর্ধ্বমুখী। এ দিকে বছরের শেষে তৃতীয় ধাক্কা আসার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তৃতীয় ধাক্কার প্রভাব যাতে দ্বিতীয় ধাক্কার মতো ক্ষতি করতে না পারে, তার জন্য গণটিকাকরণকেই হাতিয়ার করেছে মোদী সরকার। সরকারের লক্ষ্যই হল, ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের সব মানুষকে টিকাকরণের আওতায় নিয়ে আসা। যদিও টিকাকরণের যা গতি, তাতে তা কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তবে যে ভাবে দেশীয় বিজ্ঞানী ও প্রতিষেধক উৎপাদনকারী সংস্থা এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা দিন-রাত এক করে কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছেন, তা প্রশংসনীয় বলে এ দিন মন্তব্য করেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘কোভিডের সময়ে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, সাফাই কর্মী, প্রতিষেধক উৎপাদনকারী বিজ্ঞানীরা ছাড়াও কয়েক কোটি মানুষ, যাঁরা এই লড়াইয়ের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন, তাঁদের সকলে আমাদের প্রশংসার পাত্র। ভারতে এই মুহূর্তে বিশ্বের সবথেকে বড় টিকাকরণ কর্মসূচি চালু রয়েছে। কিন্তু বিজ্ঞানী ও দেশীয় প্রতিষেধক উৎপাদনকারী সংস্থার কারণে ভারত ওই টিকাকরণ কর্মসূচি চালিয়ে যেতে কোনও অন্য দেশের উপর নির্ভরশীল নয়।
বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের মতো কিছু রাজ্য ছাড়া অধিকাংশ রাজ্যেই কেন্দ্রের আয়ুষ্মান প্রকল্প চালু রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে আর্থিক দিক থেকে দুর্বল ব্যক্তিদের চিকিৎসা খাতে আর্থিক সাহায্য করার জন্যই ওই প্রকল্প চালু করেছিল কেন্দ্র। আগামী দিনে ওই প্রকল্পের পরিধি বাড়ানোর কথা জানিয়ে আজ মোদী বলেন, ভবিষ্যতে যাতে দেশের সব মানুষের কাছে আয়ুষ্মান ভারত কার্ড থাকে, তা নিশ্চিত করাই হবে সরকারের লক্ষ্য। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে অক্সিজেনের ঘাটতির সাক্ষী থেকেছে গোটা ভারত। অক্সিজেনের অভাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে করোনা রোগীদের মৃত্যুও হয়েছে। যদিও কেন্দ্র বা রাজ্য কোনও পক্ষই তা স্বীকার করতে চায়নি। এ নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর চালু থাকলেও অতীতের ঘাটতির কথা মাথায় রেখে আগামী দিনে ওই সমস্যা দূর করতে দেশের প্রায় সব বড় হাসপাতালেই অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসানো হচ্ছে বলে আজ দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী। কেন্দ্র জানিয়েছে, সরকারের লক্ষ্যই হল দেশের সব জেলায় অন্তত একটি করে অক্সিজেন প্ল্যান্ট নির্মাণ, যাতে আগামী দিনে অক্সিজেনের অভাবে প্রাণ নিয়ে টানাটানি না হয় রোগীদের। স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নয়নে গ্রামীণ ভারতে ৭৫ হাজার স্বাস্থ্যকেন্দ্র গঠন করা হয়েছে বলে আজ দাবি করেন মোদী।