উত্তরপ্রদেশের ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদীরা কি মথুরা নিয়ে নতুন করে অশান্তির সলতে পাকানো শুরু করছে? ছবি: সংগৃহীত।
অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বর্ষপূর্তির পক্ষকাল আগে উত্তরপ্রদেশের ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদীরা কি মথুরা নিয়ে নতুন করে অশান্তির সলতে পাকানো শুরু করছে? বিধানসভা ভোটের আগে নতুন জিগিরে হিন্দু ভোট একজোট করার চেষ্টা যে তারা করবে, বুধবার রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা কেশবপ্রসাদ মৌর্য টুইট করে বুঝিয়ে দিয়েছেন। তাতে তিনি বলেছেন, ‘অযোধ্যা ও কাশীতে বিশাল মন্দির নির্মাণ চলছে, এর পরে মথুরায় মন্দিরের প্রস্তুতি শুরু হবে।’
মৌর্যের বার্তা বিনা মেঘে বজ্রপাত নয়। বস্তুত ঈশান কোণে মেঘ ঘনাচ্ছিল কয়েক বছর ধরেই। মথুরায় কৃষ্ণের জন্মস্থান বলে ভক্তদের বিশ্বাস। কিন্তু সেটা শাহি ইদগা মসজিদের অভ্যন্তরেই বলে দাবি হিন্দুত্ববাদীদের। কৃষ্ণের ‘জন্মস্থান’ থেকে মসজিদ অন্যত্র সরিয়ে নতুন মন্দির নির্মাণের আর্জি জানিয়ে করা মামলা গত বছর খারিজ করে দেয় একটি আদালত। বিচারক যুক্তি দেন, আইনে রয়েছে— ১৯৪৭ সালে যেখানে যে ধর্মস্থান ছিল, তার অবস্থান পরিবর্তন করা যাবে না। কিন্তু তার পরে ফের আর একটি মামলা আদালত গ্রহণ করে শাহি ইদগা মসজিদ কমিটিকে তাদের বক্তব্য জানানোর জন্য নোটিস দিয়েছে। এই মামলায়ও মসজিদ উচ্ছেদ করে সেখানে কৃষ্ণ মন্দির স্থাপনের দাবি জানানো হয়েছে। আবেদনে বলা হয়েছে, মোগল সম্রাট ঔরঙ্গজেব মসজিদের একাংশ দখল করে মসজিদটি গড়েন। যদিও এই দাবির কোনও ঐতিহাসিক প্রমাণ নেই।
অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভা নামে একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন সোমবার মথুরা অভিযানের ডাক দিয়েছে। সংগঠনটি বলেছে, এই অভিযানের উদ্দেশ্য মসজিদের মধ্যে কৃষ্ণের বিগ্রহ স্থাপন। বিষয়টি নিয়ে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি জটিল হতে পারে বলে আশঙ্কা অনেকের। নির্বাচনের আগে হিন্দু ভোটকে সংহত করতে বিজেপি মথুরাকে হাতিয়ার করতে চায় বলে অভিযোগ করছেন এসপি নেতা অখিলেশ যাদব। তিনি বলেন, “ভোটের দিকে তাকিয়েই এই সব অভিযান। তবে এ বার আর রথযাত্রা বা অভিযান করেও পার পাবে না বিজেপি। কারণ, মানুষ বুঝেছেন— বিজেপির একটিই কর্মসূচি, গরিবের পকেট শূন্য করে মুষ্টিমেয় কয়েক জন ধনীকে আরও ধনী করে তোলা। ভোটেই তার জবাব দেবেন সাধারণ গরিব মানুষ।” উপ-মুখ্যমন্ত্রী মৌর্যের টুইট বার্তারও তিনি নিন্দা করেন।