—ফাইল চিত্র।
অতীতে বিরোধী আসনে বসে আকছাড় প্ল্যাকার্ড হাতে সংসদে স্লোগান তুলতেন বিজেপি সাংসদরা। মুখে কালো কাপড় বেঁধে আসা, হাতে কালো ফিতে বাঁধা এ সবও বহুবার হয়েছে সংসদে। এমনকী পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে গলায় পচা পেঁয়াজের মালাও পরে এসেছিলেন একবার এক সাংসদ।
কিন্তু এ সবে নিষেধাজ্ঞা জারি করে আজ নতুন বিতর্ক উস্কে দিলেন লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজন। তাঁর স্পষ্ট ফরমান, সংসদে কালো কাপড় হাতে বেঁধে আসা বা কালো ফ্ল্যাগ দেখানো কিংবা প্ল্যাকার্ড তুলে ধরা সংসদীয় রীতির বিরুদ্ধে। ভবিষ্যতে তা করলে শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। এমনকী প্ল্যাকার্ড তুলে ধরার জন্য সংশ্লিষ্ট সাংসদদের আজ সভা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার নির্দেশও দেন তিনি। যদিও সেই নির্দেশ সাংসদরা মানেননি, উল্টে স্পিকারের নির্দেশ নিয়েই সভায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ বিরোধী দলের সাংসদরা।
আজ সকালে ব্যাপারটি ঘটে লোকসভায়। ললিত কাণ্ডে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের ইস্তফা চেয়ে কংগ্রেসের সাংসদরা আজ হাতে কালো ফিতে বেঁধে আসেন। রাহুল গাঁধীও তাই করেন। শুধু সনিয়া গাঁধীই বাকি ছিলেন। সেই সঙ্গে বিরোধী বেঞ্চে বসে কংগ্রেসের সাংসদরা প্ল্যাকার্ড তুলে ধরেন। তাতে কোনওটায় লেখা, ‘‘বড়ে মোদী মেহরবান, তো ছোটে মোদী পহলবান’’। আবার কোনওটায় লেখা ছিল, ‘‘মোদীজি চুপ্পি তোড়ো, সুষমাজি কো বরখাস্ত করো।’’ সভা শুরু হতেই এ সব দেখে স্পিকার এক প্রস্ত হুঁশিয়ার করেন কংগ্রেস সাংসদদের। কিন্তু কে কার কথা শোনে! অধিবেশন প্রথম দফায় মুলতবি হয়ে যাওয়ার পর সভা বেলা ১২টায় ফের শুরু হলে তখন লিখিত বিবৃতি পড়তে শুরু করেন স্পিকার। সংসদীয় রীতি নীতির ৩৫১ ও ৩৫২ ধারা উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, সংসদে কালো কাপড় দেখানো বা প্ল্যাকার্ড তোলা শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না। সাংসদরা যেন সংযত হন। কিন্তু স্পিকারের এ কথা শুনে জোরালো আপত্তি করেন সি পি এম সাংসদ মহম্মদ সেলিম। হই-হই করে ওঠেন কংগ্রেস সাংসদরাও। বরং তাঁরা পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে তাহলে ব্যবস্থাই নিন স্পিকার। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে শেষ পর্যন্ত সভা মুলতবি করে দেন স্পিকার।
লোকসভার স্পিকারের বিবৃতি নিয়ে সমালোচনা করা যায় না। তাই এ ব্যাপারে সংসদের বাইরে কংগ্রেস আর মন্তব্য করতে চায়নি। তবে কংগ্রেস নেতাদের মতে, এর নেপথ্যে সরকারেরই ভূমিকা রয়েছে। লোকসভার এক কংগ্রেস সাংসদের কথায়, নরেন্দ্র মোদী যে ভাবে গুজরাত বিধানসভাকে অপ্রাসঙ্গিক করে দিয়েছিলেন, এখন লোকসভার ক্ষেত্রেও তাই করতে চাইছে। কিন্তু কাল সংসদে ফের প্ল্যাকার্ড হাতে নামবে কংগ্রেস।