ফাইল চিত্র।
লোকসভায় বিরোধী সাংসদদের ‘অভব্য’ আচরণে তিনি মনোঃক্ষুণ্ণ হলেও আপাতত কোনও বিরোধী দলের সাংসদকেই সাসপেন্ড করা হচ্ছে না বলে আশ্বাস দিলেন স্পিকার ওম বিড়লা। তবে গতকাল যে ভাবে স্পিকারের চেয়ারের উদ্দেশে কাগজ, কাগজের বল বানিয়ে ছোড়ার মতো ঘটনা ঘটেছে, তা ভবিষ্যতে হলে সংসদের গরিমা বজায় রাখতে সে সব সাংসদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি আজ দিয়ে রাখলেন লোকসভার স্পিকার।
বাদল অধিবেশনের শুরুর দিন থেকেই বিরোধীদের বিক্ষোভের সাক্ষী থেকেছে লোকসভা। গতকাল পরিস্থিতি চরমে ওঠে। সংসদে বেলা বারোটা নাগাদ শাসক শিবিরের মন্ত্রী-সাংসদেরা যখন বিভিন্ন বিষয়ে সরকারি বিবৃতি জমা দিচ্ছিলেন, সে সময়ে কংগ্রেসের একাধিক সাংসদকে ওয়েলে নেমে স্পিকার ও ট্রেজারি বেঞ্চের উদ্দেশ্যে কাগজ ছুড়ে মারতে দেখা যায়। বিরোধী এক সাংসদের হাতে থাকা প্ল্যাকার্ড উড়ে গিয়ে পড়ে স্পিকারের সামনে। তুমুল হট্টগোলে অধিবেশন সাময়িক বন্ধ হয়ে যায়। পরে ঝামেলা বাধানোর কারণে কংগ্রেসের দশ সাংসদকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এমনকি প্রয়োজনে লোকসভার বাকি তিন বছর ওই সাংসদদের সাসপেন্ড করার বিষয়েও ভাবনাচিন্তা শুরু হয়। কংগ্রেস সাংসদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সরব হয় বিজেপিও।
পরিস্থিতি সামলাতে আজ আসরে নামেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা অধীর চৌধুরী। স্পিকারের সঙ্গে দোষী সাংসদদের প্রসঙ্গটি নিয়ে আলোচনা করেন। পরে লোকসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে কেন বিরোধীরা এমন আচরণ করেছেন, তার ব্যাখ্যা দিয়ে অধীর বলেন, ‘‘অতীতে স্পিকারের আসনের গরিমা বজায় রাখার জন্য বিরোধী দলগুলি এগিয়ে এসেছে। এই স্পিকারের নেতৃত্বে অতীতে রেকর্ড সময় কাজ করেছে লোকসভা। স্পিকার নিজেও তা স্বীকার করেছেন। কিন্তু কেবল সরকারের একগুঁয়ে মনোভাবের কারণে বিরোধীরা নিজেদের বক্তব্য রাখতে পারছেন না।’’ পরে স্পিকার মুখ খুলে বলেন, ‘‘গত কালের ঘটনায় আমি আঘাত পেয়েছি। বিশেষ করে স্পিকারের আসনের উদ্দেশে কাগজ ছুড়ে মারা বা স্পিকারের আসনকে অসম্মান করা সংসদীয় গরিমার সঙ্গে মোটেই খাপ খায় না।’’ সাংসদেরা যদি সংসদীয় নিয়ম না মেনে চলেন, তা হলে কী ভাবে সংসদীয় ব্যবস্থা মজবুত হবে সেই প্রশ্নও রাখেন সাংসদদের সামনে।
স্পিকার আশ্বাস দিয়ে জানান, আগামী দিনে সাংসদেরা যাতে তাঁদের বিষয়গুলি সংসদে বলার সুযোগ পান, সে দিকে তিনি নজর দেবেন। একই সঙ্গে স্পিকারের ভূমিকা নিয়ে কারও কোনও বক্তব্য থাকলে, তা স্পিকারের চেম্বারে গিয়ে বলার উপরেও জোর দিয়েছেন তিনি। তবে গতকালের মতো ‘অভব্যতা’ তিনি যে মেনে নেবেন না, তা আজ স্পষ্ট করে দিয়ে স্পিকার বলেন, ‘‘গতকালের মতো ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না হয়। যদি পুনরাবৃত্তি হয়, সে ক্ষেত্রে সংসদের গরিমা বজার রাখতে সেই দোষী সাংসদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়ে সব সাংসদের সাহায্য প্রয়োজন হবে স্পিকারের।’’