ছবি: পিটিআই।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে কর্নাটক বিধানসভার স্পিকার কে আর রমেশ কুমারের সঙ্গে আজ সন্ধেয় দেখা করলেন বিক্ষুব্ধ বিধায়কেরা। নতুন করে তাঁদের ইস্তফাপত্র পাওয়ার পরে স্পিকার জানিয়েছেন, বয়ান ঠিক আছে। আজ সারারাত তিনি ইস্তফাপত্রগুলি খতিয়ে দেখবেন। সেগুলি গৃহীত হয়েছে কি না জানতে চাওয়া হলে স্পিকার বলেন, ‘‘আমি কি আলোর গতিতে কাজ করব? আমাকে সংবিধান মেনে এগোতে হবে।’’
ইস্তফা গ্রহণ নিয়ে ঢিলেমির অভিযোগ খারিজ করে স্পিকার বলেছেন, তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য বিধায়কদের সুপ্রিম কোর্ট ঘুরে আসতে হচ্ছে কেন, সেই বিষয়টিও ভেবে দেখা উচিত। মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী বলেছেন, তাঁর ইস্তফার প্রশ্নই নেই। তাঁর যুক্তি, ২০০৯-১০ সালে ১৮ জন বিধায়ক তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পার বিরোধিতা করলেও তিনি ইস্তফা দেননি। এ দিকে, আজ রাতেই কর্নাটক পর্যটন নিগমের অতিথিশালায় রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপি নেতা মুরলীধর রাওয়ের সঙ্গে কথা হয় জেডিএসের পর্যটন মন্ত্রী মহেশের। অনেকের মতে, কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে জেডিএসের সঙ্গে রফা করতে চাইছে বিজেপি। যদিও কুমারস্বামী টুইটারে লেখেন, ‘এই ঘরোয়া আলোচনাকে গুরুত্ব দেওয়া নিষ্প্রয়োজন।’ মুরলীধর পাল্টা টুইট করেন, ‘জেডিএসের মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের খবর অসত্য। প্রকাশ্য জায়গায় এমন (সাক্ষাৎ) হওয়াটা নেহাত কাকতালীয়।’ জল্পনা যদিও থামছে না। কারণ, দেবগৌড়ার সাংসদ নাতি রেবন্না আজ বৈঠক করেছেন কর্নাটকের বিজেপি নেতা ও মোদী সরকারের মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশীর সঙ্গে।
পদত্যাগী ১০ বিধায়ককে আজ সকালেই স্পিকারের সঙ্গে দেখা করতে বলেছিল কোর্ট। বিধায়কদের দাবি, সংখ্যালঘু সরকারকে টিকিয়ে রাখতেই তাঁদের ইস্তফা গ্রহণ করছেন না স্পিকার। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আজ সন্ধ্যা ৬টায় বিধায়কেরা যাতে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করুন স্পিকার। বিধায়কদের নিরাপত্তা দিতে কর্নাটকের ডিজিকে নির্দেশ দেয় কোর্ট। স্পিকার যাতে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেন, সেই নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। স্পিকার কী সিদ্ধান্ত নেন, আগামিকাল শীর্ষ আদালতে তা জানাতে বলা হয়।
এই নির্দেশের কিছু ক্ষণের মধ্যেই স্পিকারের তরফে আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি শীর্ষ আদালতে যান। বিধায়কদের ইস্তফা নিয়ে আজকের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ বদলের আর্জি জানান তিনি। স্পিকারের যুক্তি, এই বিধায়কদের সদস্যপদ খারিজের আর্জিও বিবেচনাধীন। নিয়ম অনুযায়ী তিনি প্রথমে সেই ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে শুধু ইস্তফাপত্র নিয়ে ফয়সালার কথাই বলা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট জানায়, আজ যে-হেতু নির্দেশ দেওয়া হয়ে গিয়েছে, তাই স্পিকারের আবেদনের শুনানি হবে আগামিকাল।
এর পরে বিধায়কেরা মুম্বই থেকে বেঙ্গালুরু পৌঁছে স্পিকারের সঙ্গে দেখা করেন। পরে স্পিকার বলেন, ‘‘আমি দেশ ও সংবিধানকে ভালবাসি বলেই ফয়সালায় দেরি করেছি। ১৩টির মধ্যে ৮টি ইস্তফাপত্রের বয়ান ঠিক ছিল না। বাকিগুলির ক্ষেত্রেও দেখতে হচ্ছে, সেগুলি স্বেচ্ছায় দেওয়া হয়েছে কি না।’’ কার জন্য তাঁকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে, সেই প্রশ্নও তোলেন স্পিকার। বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে দেখা না-করে বিধায়কেরা রাজ্যপালের কাছে গেলেন, সুপ্রিম কোর্টে গেলেন। দেখা করতে কে আটকেছিল? ওঁরা মুম্বইয়ে বসে থেকে ঢিলেমির অভিযোগ আনলেন আমার বিরুদ্ধে!’’
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।