প্রতীকী ছবি।
ঝাড়খণ্ডের স্পেনীয় মহিলার গণধর্ষণের ঘটনা উস্কে দিয়েছে দিল্লির নির্ভয়া কাণ্ডের স্মৃতি। শুক্রবার রাতে জনা সাতেক যুবক দুমকার রাস্তায় বাইক থামিয়ে নির্যাতিতার উপর চড়াও হন বলে অভিযোগ। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। সেখান থেকেই শুক্রবার রাতের অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন ওই মহিলা। সমাজমাধ্যমে তিনি একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন। সেই পোস্টেই সেই ঘটনার কথা জানিয়েছেন। কী ভাবে তাঁর এবং তাঁর বন্ধুর উপর হামলা চালান অভিযুক্তেরা, মারধর করেন, তা সবই খুলে বলেছেন সেই ভিডিয়ো বার্তায়।
নির্যাতিতা ভিডিয়োর শুরুতেই বলেছেন, ‘‘আমরা এখন হাসপাতালে আছি। আমাদের সঙ্গে এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে, আমরা চাই না কারও সঙ্গে এমন হোক। সাত জন লোক মিলে আমাকে ধর্ষণ করেন। শুধু তা-ই নয়, আমাদের মারধর করে সঙ্গে থাকা জিনিস ছিনতাইও করেন। তবে বেশি কিছু নাননি তাঁরা, কারণ তাঁদের উদ্দেশ্যই ছিল আমাকে ধর্ষণ করা। হাসপাতালে আমরা এখন পুলিশি পাহারায় রয়েছি।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, দিন কয়েক আগে স্পেন থেকে ভারতে এসেছিলেন ওই স্পেনীয় মহিলা এবং তাঁর বন্ধু। ওই দুই পর্যটক ঝাড়খণ্ডে এসেছিলেন বৃহস্পতিবার। শুক্রবার দু’জনে মিলে দু’টি বাইক নিয়ে দুমকার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে বেরিয়েছিলেন। নির্যাতিতার দাবি, রাত ১০টা নাগাদ তাঁরা যখন বিশ্রাম নেওয়ার জন্য রাস্তার ধারে বসেছিলেন, তখন কয়েক জন যুবক এসে তাঁদের উপর চড়াও হন। তাঁদের মারধর করা হয় এবং নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে তাঁকে গণধর্ষণ করা হয়েছে বলে, পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছিলেন ওই স্পেনীয় মহিলা।
নির্যাতিতা আরও বলেন,‘‘অভিযুক্তেরা আমাদের ঘাড়ে ছুরি ঠেকিয়ে ভয় দেখান। আমাদের বলা হয়, যদি আমরা চিৎকার করি বা কাউকে কিছু জানাই, তবে আমাদের প্রাণে মেরে ফেলা হবে।’’ দুমকার পুলিশ সুপার পীতাম্বর সিংহ বলেন, ‘‘মহিলা এবং তাঁর সঙ্গী শুক্রবার মধ্যরাতে পুলিশের একটি টহল ভ্যানকে থামান। প্রাথমিক ভাবে ওই টহল ভ্যানে থাকা পুলিশ কর্মীরা ওই মহিলার কথা পুরোপুরি বুঝতে পারেননি, কারণ তিনি ইংরেজি এবং স্প্যানীশ ভাষায় কথা বলছিলেন। তবে তাঁরা মহিলা আবং তাঁর সঙ্গীকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যান।’’
এর পরই পীতাম্বর যোগ করেন, ‘‘চিকিৎসকেরা মহিলাকে পরীক্ষা করে জানান যে, তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে। আমি রাত দেড়টা নাগাদ ফোনে ঘটনার খবর পাই। তার পরই হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলি।’’ ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলেও তিনি জানান। ঝাড়খণ্ড পুলিশের ডিজি অজয় কুমার সিংহকে উদ্ধৃত করে ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ জানায়, সাত জন অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে চার জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। বাকি তিন অভিযুক্তের খোঁজ চলছে। খুব শীঘ্রই তাঁদের গ্রেফতার করা হবে।
নির্যাতিতা মহিলা তাঁর ভিডিয়ো বার্তায় আরও বলেন, ‘‘আমার মুখে আঘাত করা হয়েছে। তবে আমার সঙ্গীর অবস্থা আরও খারাপ। অভিযুক্তেরা তাঁকে নানা ভাবে মারধর করেন। তাঁর মাথায় হেলমেট এবং পাথর দিয়েও আঘাত করা হয়েছে।’’