সংসদীয় দলে নেতৃত্বে সনিয়া, আস্থা রাহুলেই

গত লোকসভা ভোটের মতো এ বারেও মুখ থুবড়ে পড়েছে কংগ্রেস। তার পর থেকে সভাপতি পদ থেকে সরার প্রশ্নে গোঁ ধরে আছেন রাহুল। তবু ছেলের এই আক্রমণাত্মক মনোভাবেই আস্থা রাখছেন সনিয়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০১৯ ০২:০৯
Share:

পাশাপাশি: সিংভূমের কংগ্রেস সাংসদ গীতা কোড়ার সঙ্গে রাহুল গাঁধী, সনিয়া গাঁধী এবং প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। শনিবার দিল্লিতে। পিটিআই

সভাপতি পদ ছাড়তে এখনও অনড় রাহুল গাঁধী। সংসদীয় দলের প্রধানও হলেন না। ফলে সনিয়া গাঁধীই ফের চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হলেন। কিন্তু রাহুলের নেতৃত্বেই অগাধ ভরসা রাখলেন সনিয়া। হারের পর দলকে চাঙ্গা করতে অবশ্য রাহুল বিজেপির বিরুদ্ধে ইঞ্চি-ইঞ্চিতে লড়াইয়ের ডাক দিলেন।

Advertisement

আজ সকালে সংসদের সেন্ট্রাল হলে কংগ্রেসের জিতে আসা সাংসদদের সামনে সনিয়া গাঁধীকেই সংসদীয় দলের চেয়ারপার্সন করার প্রস্তাব করলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। ধ্বনিভোটে ফের নির্বাচিত হলেন তিনি। এ বারে তিনিই ঠিক করবেন, লোকসভায় কাকে দলের নেতা করবেন। রাহুল না অন্য কাউকে? লোকসভায় ৫২ জন সাংসদ নিয়ে এ বারেও বিরোধী দলের মর্যাদা পাবে না কংগ্রেস। দল বলছে, সরকারের কাছে ‘ভিক্ষা’ চাইবে না। যদিও রাহুলের সাফ কথা, ‘‘লড়াই হবে ইঞ্চিতে-ইঞ্চিতে। আগে ৪৫ সাংসদ নিয়ে ভাবতাম, বিজেপির ২৮২ জন সাংসদের মুখোমুখি কী করে হব? কয়েক সপ্তাহেই দেখলাম, ৪৫-ই যথেষ্ট। এ বারে ৫২ জন মিলে সিংহের সাহস দেখাব। স্পিকার আগে ৫ মিনিট দিতেন, এ বারে ২ মিনিট দেবেন। তবু বিজেপিকে ছাড়ব না।’’

গত লোকসভা ভোটের মতো এ বারেও মুখ থুবড়ে পড়েছে কংগ্রেস। তার পর থেকে সভাপতি পদ থেকে সরার প্রশ্নে গোঁ ধরে আছেন রাহুল। তবু ছেলের এই আক্রমণাত্মক মনোভাবেই আস্থা রাখছেন সনিয়া। আজ সকলকে বললেন, ‘‘রাহুলজিকে হৃদয় থেকে ধন্যবাদ। দিনরাত মেহনত করেছেন। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সরাসরি লড়াইয়ে নির্ভীক নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বেই অনেক রাজ্যে সংগঠন চাঙ্গা হয়েছে, তিন রাজ্যে জয় এসেছে। আজও যে আবেগমাখা বার্তা আসছে, সেটি তাঁর নেতৃত্বকেই প্রতিষ্ঠা করে। কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে কর্মী ও ভোটারদের শ্রদ্ধা-ভালবাসা আদায় করেছেন। তাঁর নিরলস কঠিন পরিশ্রম ও নেতৃত্বের জন্য আমরা সকলে কৃতজ্ঞ।’’

Advertisement

এ সব শুনে কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা পরে বলেন, ‘‘মনে কোনও সংশয় রাখবেন না, রাহুল গাঁধীই দলের সভাপতি। তিনিই দলের উপর থেকে নীচ পর্যন্ত খোলনলচে বদলাবেন। অপেক্ষা করুন।’’ রাহুলের বক্তব্যেও সেই ঝাঁঝটি দেখা গিয়েছে। বলেছেন, ‘‘ব্রিটিশদের সময় কংগ্রেস কোনও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গ পায়নি, তা-ও জিতেছে। এ বারেও কংগ্রেসের কেউ যাতে লোকসভায় আসতে না পারেন, তার জন্য শুধু কোনও রাজনৈতিক দল নয়, সব প্রতিষ্ঠান বিরুদ্ধে লড়েছে। তাই জয়ীরা গর্ব করুন, উপভোগ করুন, আরও একটু চিৎকার করুন, আর একটু আক্রমণাত্মক হোন। কংগ্রেস নির্ভীক হয়ে সংবিধান ও প্রতিষ্ঠান বাঁচাবে।’’

রাহুলের কথা শুনে বিজেপির অমিত মালব্য বলেন, ‘‘বিজেপির চিন্তা ছেড়ে আপনি বরং নিজের দল সামলান। আপনার নেতৃত্বে যেটি শেষ হতে চলেছে।’’ হারের কারণ ইতিমধ্যেই খুঁজতে শুরু করেছে কংগ্রেস। রাহুলও বলেন, ‘‘ভুল কোথায়, আত্মবিশ্বাসের খামতি কোথায়— খুঁজতে হবে। নিজেদের জাগাতে হবে।’’ সতর্ক করেন সনিয়াও। তাঁর কথায়, দলের চলতি সঙ্কটকে ‘জীবনের কঠিন লড়াই’ বলে তাঁর দাওয়াই, ‘‘সংসদে বাকি বিরোধী দলগুলিকে সঙ্গে নিয়ে নিরন্তর এমন সব বিষয় তুলতে হবে, যা মানুষের মনে দাগ কাটবে। সরকারকে চেপে ধরতে হবে। সরকার তথ্য লুকোচ্ছে। কিন্তু তাদের অনেক অর্থবল, অপপ্রচার ও জনমত ঘোরানোর ক্ষমতা আছে। লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement