সোনিয়া গাঁধী এবং উদ্ধব ঠাকরে। —ফাইল চিত্র।
দু’বছর আগে মহারাষ্ট্রে জোট সরকার গঠনের জন্য কংগ্রেসের সমর্থন চেয়ে উদ্ধব ঠাকরে সনিয়া গাঁধীকে ফোন করেছিলেন। সেই সরকার দু’বছর পূর্ণ করে ফেলার পরে এ বার জাতীয় স্তরে বিরোধী জোট তৈরির জন্য ফের সনিয়া-উদ্ধবের ফোনে কথা হল। কংগ্রেস সূত্রের খবর, স্বাভাবিক নিয়মেই আলোচ্য বিষয় ছিল, বিজেপির বিরুদ্ধে মজবুত জোট গঠন।
সনিয়া গাঁধী গতকালই ১০, জনপথে শরদ পওয়ার-সহ ডিএমকে, ন্যাশনাল কনফারেন্সের মতো ইউপিএ-র পুরনো শরিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। শিবসেনার সঞ্জয় রাউতও হাজির ছিলেন। তারপরে সনিয়া খোদ শিবসেনা প্রমুখের সঙ্গে ফোনে কথা বলায় কংগ্রেস, শিবসেনার জাতীয় স্তরে কাছাকাছি আসার সম্ভাবনাও জোরদার হয়ে উঠেছে। কংগ্রেস নেতারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব এখনও পুরোপুরি সুস্থ হয়ে কাজে যোগ দেননি। তার মধ্যেই সনিয়ার সঙ্গে তাঁর ফোনে কথাবার্তা তাৎপর্যপূর্ণ।
সনিয়ার প্রথমে শরদ পওয়ারকে বাড়িতে ডাকা, তারপরে উদ্ধবের সঙ্গে ফোনালাপ আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বার্তা দেওয়া কি না, তা নিয়ে রাজনৈতিক শিবিরে চর্চা শুরু হয়েছে। শরদ পওয়ার ও উদ্ধব
ঠাকরের সঙ্গে দেখা করার কর্মসূচি নিয়েই দু’সপ্তাহ আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুম্বই গিয়েছিলেন। পওয়ারের সঙ্গে মমতা, অভিষেকের বৈঠক হলেও উদ্ধব হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের জন্য ভর্তি থাকায় মমতার সঙ্গে দেখা হয়নি। তবে আদিত্য ঠাকরে মুম্বইয়ের হোটেলে গিয়ে মমতার সঙ্গে দেখা করেছিলেন। মুম্বইয়ে কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বিজেপি বিরোধী জোটের বার্তা দিয়েছিলেন মমতা। ইউপিএ-র অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন, পওয়ারের পাশে দাঁড়িয়েই।
রাজনৈতিক শিবিরে প্রশ্ন উঠেছে, মমতার এই চ্যালেঞ্জের মুখে সনিয়া কি আবার ইউপিএ-কে জাগিয়ে তুলতে চাইছেন? শিবসেনা কি সেই ইউপিএ-তে যোগ দিতে চলেছে?
কংগ্রেস সূত্রের দাবি, মমতা ইউপিএ-র অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুললেও পওয়ার এ বিষয়ে মমতার সঙ্গে একমত নন। সনিয়ার সঙ্গে বৈঠকে তিনি স্পষ্ট করেছেন, তিনি কংগ্রেসকে নিয়েই বিরোধী জোটের পক্ষে। সেটা ইউপিএ হোক বা ইউপিএ-২। মহারাষ্ট্রে পওয়ারই বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখতে মতাদর্শগত ভাবে বিপরীত মেরুতে থাকা কংগ্রেস, শিবসেনাকে এককাট্টা করেছিলেন। ইউপিএ-তে যোগ দেওয়ার বিষয়টি খোলসা না করলেও শিবসেনা
দলের মুখপত্র যুক্তি দিয়েছে, কংগ্রেসকে ছাড়া বিরোধী জোট সম্ভব নয়। শিবসেনার হয়ে রাউত গত এক সপ্তাহের মধ্যেই রাহুল ও প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে আলাদা ভাবে বৈঠক করেছেন। সেখানে তিনি রাহুলকে বিরোধী জোটের নেতৃত্বে এগিয়ে আসতে বলেছেন।
কংগ্রেসের অনেক নেতা মনে করছেন, মমতা কংগ্রেসকে নিশানা করে, ইউপিএ-র অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে উপকারই করেছেন। গাঁধী পরিবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এত দিন বিজেপির দিকে ঝুঁকে থাকা কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের টিআরএস-ও এখন বিজেপি বিরোধী হয়ে উঠেছে। তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রাও ছেলের হাতে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব তুলে দিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে ফিরতে চাইছেন বলে ইঙ্গিত মিলছে। কংগ্রেস সে
দিকে নজর রাখছে।