গাঁধীদের জন্য বরাদ্দ ন’বছরের পুরনো গাড়ি

এসপিজি-র নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সনিয়া ও প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার জন্য ওই নিরাপত্তা সংস্থার কোটা থেকে ‘বুলেটপ্রুফ’ রেঞ্জরোভার গাড়ি বরাদ্দ ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:২৭
Share:

ছবি: পিটিআই।

ন’বছরের পুরনো টাটা সাফারি গাড়ি এবং বাড়িতে সিআরপিএফ-এর নিরাপত্তা। এসপিজি-র নিরাপত্তা তুলে দেওয়ার পরে সনিয়া গাঁধী ও রাহুল গাঁধীর জন্য এই নিরাপত্তা বরাদ্দ হয়েছে। তা নিয়ে আজ ফের লোকসভায় সরব হল কংগ্রেস। দলের অভিযোগ, প্রতিহিংসার রাজনীতি থেকেই মোদী সরকার গাঁধী পরিবারের নিরাপত্তা কাটছাঁট করেছে। এর প্রতিবাদে আগামিকাল সংসদ ঘেরাও করার পরিকল্পনা করেছে যুব কং‌গ্রেস। এরই মধ্যে সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, রাহুল বিদেশে থাকায় তাঁর নিরাপত্তার ব্যবস্থা এখনও করতে পারেনি সিআরপিএফ। কারণ, নিরাপত্তা দিতে এসপিজি-র বিদেশে যাওয়ার অনুমতি থাকলেও সিআরপিএফের নেই।

Advertisement

এসপিজি নিরাপত্তা সরিয়ে দেওয়া নিয়ে কংগ্রেসের লাগাতার প্রতিবাদের মধ্যে আজ কেন্দ্রীয় সরকারি সূত্রে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে, নিরাপত্তার ঝুঁকি যাচাই করেই গাঁধী পরিবারের তিন সদস্য, সনিয়া-রাহুল-প্রিয়ঙ্কার জন্য এসপিজি-র বদলে জ়েড প্লাস নিরাপত্তা বরাদ্দ হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের ব্যাখ্যা, এত দিন মূলত মাওবাদী, শিখ সন্ত্রাসবাদী ও এলটিটিই-র থেকে গাঁধী পরিবারের উপরে হামলার আশঙ্কা ছিল। কিন্তু এখন দেশে সন্ত্রাসবাদ বা জঙ্গি আন্দোলন কমে আসার ফলে গাঁধী পরিবারের উপরে হামলার আশঙ্কাও কমে গিয়েছে।

এসপিজি-র নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সনিয়া ও প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার জন্য ওই নিরাপত্তা সংস্থার কোটা থেকে ‘বুলেটপ্রুফ’ রেঞ্জরোভার গাড়ি বরাদ্দ ছিল। রাহুলের জন্য বরাদ্দ ছিল ফরচুনার। কিন্তু এখন তার বদলে ২০১০-এর টাটা সাফারি বরাদ্দ হয়েছে। অথচ টাটা সাফারি গাড়ি ৭.৬২ এমএম বুলেট আটকাতে পারে না বলেই তা বদলানো হয়েছিল। সিআরপিএফ এখন গাঁধী পরিবারের জন্য আগের গাড়িই রেখে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছে। তা নিয়ে অবশ্য কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। পুরনো গাড়ি বরাদ্দ হওয়ায় নিরাপত্তার ঝুঁকি থাকছে না কি?

Advertisement

আরও পড়ুন: লোকসভায় নেই প্রধানমন্ত্রী মোদী, বৈঠকে ব্যাখ্যা তাঁর কাজের

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কর্তাদের যুক্তি, ওই গাড়িও যথেষ্ট শক্তপোক্ত। জ়েড প্লাস নিরাপত্তায় ১০০ জনের মতো সিআরপি জওয়ান মোতায়েন থাকবেন। খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-ও জ়েড প্লাস নিরাপত্তা পান। তাঁর নিরাপত্তাও সিআরপি-র কাঁধে। এত দিন সনিয়ার নিরাপত্তা প্রায় প্রধানমন্ত্রীর সমান ছিল। নতুন ব্যবস্থায় সনিয়ার জন্য ‘অ্যাডভান্সড সিকিউরিটি লিয়াজোঁ’ টিম রয়েছে। যারা সনিয়া কোথাও যাওয়ার আগে নিরাপত্তা ব্যবস্থার মহড়া সেরে আসবে। এর সঙ্গে ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী, বাড়ির নিরাপত্তারক্ষী, ‘অ্যাকসেস কন্ট্রোল’ নজরদারি ও ‘অ্যান্টি-সাবোতাজ চেক’ ব্যবস্থা বজায় থাকছে।

আজ লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেন, ‘‘সনিয়া ও রাহুল গাঁধী কোনও সাধারণ নিরাপত্তা-প্রাপ্ত ব্যক্তি নন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী গাঁধী পরিবারের জন্য এসপিজি নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করেছিলেন। ১৯৯১ থেকে ২০১৯-এ দু’বার কেন্দ্রে এনডিএ সরকার এসেছে। কিন্তু এসপিজি নিরাপত্তা তোলা হয়নি।’’

গাঁধী পরিবারের আগে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহেরও এসপিজি নিরাপত্তা সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ফলে ৩ হাজারের বেশি এসপিজি-বাহিনী শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে। সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা, মনমোহনের এসপিজি নিরাপত্তা সরলেও তাঁর জন্য আগের মতোই এসপিজি কোটা থেকে বুলেটপ্রুফ গাড়ি বরাদ্দ হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement