রায়বরেলীতে সনিয়া গাঁধী। বুধবার। পিটিআই
গোটা দেশ ভেসেছে মোদীর উগ্র জাতীয়তাবাদী হাওয়ায়। কংগ্রেসের গড়ের পতন হয়েছে পাশের কেন্দ্র অমেঠীতেও। তার মধ্যেও গাঁধী পরিবারের ‘বহুরানি’-র ওপর ফের ভরসা রেখেছে রায়বরেলী। কন্যা প্রিয়ঙ্কাকে সঙ্গে নিয়ে তাই ভোটারদের ধন্যবাদ জানিয়ে গেলেন সনিয়া গাঁধী। রায়বরেলীর আড়াই হাজার কংগ্রেস কর্মীকে সন্ধ্যার ঘরোয়া অনুষ্ঠানে জানালেন কৃতজ্ঞতা।
লোকসভা নির্বাচনে পরাজয়ের দায় নিয়ে কংগ্রেস সভাপতির পদ ছাড়ার বিষয়ে অনড় রাহুল গাঁধী। তাঁর ইচ্ছা, গাঁধী পরিবারের বাইরের অন্য কোনও নেতা এ বার সে দায়িত্ব তুলে নিন। তাঁদের পরিবারের ছত্রচ্ছায়া থেকে এ বার বেরিয়ে আসুক কংগ্রেস। কারণ পরিবারতন্ত্রের অভিযোগ বাড়তি অস্ত্র তুলে দিচ্ছে প্রতিপক্ষকে। কিন্তু রায়বরেলীর ভোটারেরা সে সব বোঝেন না। বিজেপির অভিযোগ, জেতার পরে সনিয়া আর তাঁর কেন্দ্রের দিকে ফিরেও তাকান না। বিপদে-আপদে কেন্দ্রের মানুষের পাশে থাকেন না। এত দিন গাঁধী পরিবারকে জিতিয়েও উন্নয়নের প্রশ্নে তাই পিছিয়েই রয়েছে রায়বরেলী। কিন্তু এ বারের ভোটও জানাচ্ছে, গাঁধী পরিবারের আনুগত্যে এখনও অটল এই কেন্দ্র। সনিয়া জিতেছেন ১ লক্ষ ৬৭ হাজার ১৭৮ ভোটে। উত্তরপ্রদেশের ৮০টি আসনের মধ্যে কংগ্রেসের ঝুলিতে যাওয়া একমাত্র আসন এই রায়বরেলী।
পূর্ব উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বে থাকা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কাকে নিয়ে ফুরসতগঞ্জ বিমানবন্দরে এ দিন দুপুরে নামে সনিয়ার কপ্টার। সেখান থেকে তাঁদের গাড়ির বহর যায় অতিথি নিবাসে। রায়বরেলীর ভোটদাতাদের উদ্দেশে একটি লিখিত বিবৃতি এ দিন প্রকাশ করেন সনিয়া। তাতে তিনি বলেন, ‘সামনে খুবই কঠিন দিন আসছে আমি জানি। কিন্তু মানুষের আস্থা ও ভালবাসা নিয়ে কংগ্রেস সব চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় সক্ষম হবে, এই ভরসা আমার আছে।’ সনিয়া জানিয়েছেন, দেশের প্রয়োজনে যে কোনও ত্যাগ স্বীকারে তিনি প্রস্তুত। রায়বরেলীর মানুযকে তিনি পরিবারের লোক বলেই মনে করেন।
সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টি রায়বরেলীতে সনিয়ার বিরুদ্ধে প্রার্থী দেয়নি। সনিয়া তাই তাঁর জয়ের জন্য কংগ্রেসের কর্মীদের পাশাপাশি এসপি, বিএসপি এবং স্বাভিমান দলের সমর্থকদেরও ধন্যবাদ জানিয়েছেন। কিন্তু সন্ধ্যার কর্মিসভায় এই ইঙ্গিতও দিয়েছেন, বিধানসভার আসন্ন উপনির্বাচনে কংগ্রেসকে নিজের জোরেই লড়তে হবে। কারণ, এসপি-বিএসপি-র মহাজোট ভেঙে গিয়েছে। বিজেপি-বিরোধী সব দলই একলা চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলের কর্মীদের সনিয়া জানিয়েছেন, তাঁরাই রায়বরেলীতে কংগ্রেসের মুখ। আবার কেন্দ্রে সাংসদ সনিয়ার প্রতিনিধিও কর্মীরা। পাঁচ বছর তাঁরা মানুষের পাশে ছিলেন বলেই মানুষ ফের আস্থা রেখেছেন কংগ্রেসে, জয়ী করেছেন সনিয়াকে। তবে পাশের কেন্দ্র অমেঠীতে এ দিন যাননি সনিয়া-প্রিয়ঙ্কা। যে অমেঠীর ভোটারেরা রাহুলের বদলে এ বার বেছে নিয়েছেন বিজেপির স্মৃতি ইরানিকে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।