রাহুলের বিকল্প খুঁজতে নাম উঠছে সনিয়ারও

লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর থেকে রাহুল গাঁধী নিজের ইস্তফার ব্যাপারে অনড়। যদিও কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটি তাঁর ইস্তফা খারিজ করে দিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০১৯ ০২:২৮
Share:

ছবি: পিটিআই।

রাহুল গাঁধী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, গাঁধী পরিবারের বাইরের কাউকেই তাঁর বিকল্প হিসেবে বেছে নিতে হবে দলকে। কিন্তু গাঁধী পরিবারকে বাইরে রেখে কোনও রকম বিকল্প খোঁজার পক্ষপাতী নন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা।

Advertisement

লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর থেকে রাহুল গাঁধী নিজের ইস্তফার ব্যাপারে অনড়। যদিও কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটি তাঁর ইস্তফা খারিজ করে দিয়েছে। কিন্তু দলের অনেকে মনে করেন, ওয়ার্কিং কমিটি কোনও প্রস্তাব পাশ করলেও কংগ্রেসের সভাপতির অধিকার আছে সেটিকে না মানার। গত কয়েক সপ্তাহে রাহুলকে সভাপতি পদে থাকার জন্য যথাসম্ভব চেষ্টা করেছেন দলের শীর্ষ নেতারা। কিন্তু মানছেন না তিনি। অগত্যা এখন রাহুলের বিকল্প নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করে দিয়েছেন দলের শীর্ষ নেতারা।

এমনই এক শীর্ষ নেতা আজ বলেন, ‘‘আমাদের কাছে আদর্শ উপায় হল, রাহুলকেই বুঝিয়ে সভাপতি পদে রেখে দেওয়া। কিন্তু যদি তিনি একান্তই না মানেন, তা হলেও গাঁধী পরিবারকে বাদ দিয়ে আমরা কোনও বিকল্পের সন্ধান করতে চাইছি না।’’ অথচ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে রাহুল স্পষ্ট বলেছেন, ‘‘আমি সভাপতি থাকব না বলে আমার বোনের (প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা) কথাও ভাববেন না। গাঁধী পরিবারের বাইরের কাউকে নতুন সভাপতি হিসেবে খুঁজুন।’’ রাহুলের এই অনড় মনোভাব দেখেই এখন ধন্ধে রয়েছেন নেতারা।

Advertisement

রাহুল এ নিয়ে আলোচনা করতে না চাইলেও শীর্ষ নেতারা সনিয়া ও প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে আলোচনা করেছেন। তাঁদের সঙ্গে দফায় দফায় গত কয়েক দিন ধরে আলোচনা করেছেন সনিয়ার একদা রাজনৈতিক সচিব আহমেদ পটেল, গুলাম নবি আজাদ, এ কে অ্যান্টনি, মল্লিকার্জুন খড়্গের মতো নেতারা। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের পরামর্শও নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে নেতারা ঠিক করেছেন, রাহুল যদি একান্তই সভাপতি পদে থাকতে না চান, তা হলে আপাতত এই দায়িত্ব সনিয়া গাঁধীকেই নিতে হবে।

এর কারণ হিসেবে কংগ্রেসের নেতারা বলছেন, ‘‘প্রথমত এই মুহূর্তে রাহুলের কোনও বিকল্প নেই। আর রাহুল রাজি না হলে একমাত্র সনিয়া গাঁধীই পারেন গোটা দলকে এক সঙ্গে রাখতে। অন্য যে কোনও নেতাকে দায়িত্ব দিলে দলের মধ্যে অরাজকতা তৈরি হতে পারে। নতুন সভাপতির কথা অন্য কোনও নেতা না-ও শুনতে পারেন।’’ ফলে রাহুল যত দিন না ফেরেন, তত দিন সনিয়াকে সামনে রেখেই কাজ চালাতে চান নেতারা। তবে এ ক্ষেত্রে সমস্যা হল, রোজকার খুঁটিনাটি থেকে অব্যাহতি নিয়েই রাহুলের হাতে দলের ভার তুলে দিয়েছিলেন সনিয়া। শারীরিক কারণেও তিনি আগের মতো সক্রিয় হতে পারবেন না।

এ সব ভেবে সনিয়াকে মাথায় রেখেই একজন বা দু’জন কার্যনির্বাহী সভাপতি করার কথা ভাবা হচ্ছে। দলের যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য অতীতের ধাঁচে একটি সংসদীয় বোর্ডও গঠন করা হতে পারে। কিন্তু সনিয়া বড় কোনও দলের থেকে ছোট কোর-গ্রুপেই বেশি স্বচ্ছন্দ। তিন দিনের কেরল সফর সেরে রাহুল আজই দিল্লিতে ফিরেছেন। সংসদের অধিবেশন শুরু হবে আগামী সপ্তাহ থেকে। তার আগেই এই বিষয়টি পাকা করে ফেলতে চাইছেন কংগ্রেস নেতারা। কিন্তু তাঁদের আশঙ্কা, সনিয়ার হাতে ভার তুলে দেওয়ার প্রস্তাবেও রাজি না হতে পারেন রাহুল। সে ক্ষেত্রে গাঁধী পরিবারের বাইরে কাকে সভাপতি করা যেতে পারে, সেটি বাছাই করাই সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ কংগ্রেসের কাছে। সে ক্ষেত্রে আজাদ, খড়্গে কিংবা পৃথ্বীরাজ চহ্বাণের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়তে পারে।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement