ঘড়িতে তখন দুপুর পৌনে ১টা। বাড়িতে ছিলেন বৃদ্ধ দম্পতি। হঠাৎ বাইরের লোহার দরজায় কিছুর শব্দ হওয়ায়, তা খতিয়ে দেখতে যান ওই বাড়ি মালিক। ঘরের মধ্যেই ছিলেন তাঁর স্ত্রী। বেরিয়ে ওই বৃদ্ধ দেখেন, পাঁচ জন যুবক গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন। জিজ্ঞাসা করায় তাঁরা বৃদ্ধকে জানান, ক্যুরিয়ার সার্ভিসের লোক। কিছু জিনিস ডেলিভারি দিতে এসেছেন। সন্দেহ না হওয়ায় বাড়ির দরজা খুলে দেন ওই বৃদ্ধ। তৎক্ষণাৎ বৃদ্ধকে ঘিরে ধরেন ওই যুবকেরা। মুখে চাপা দিয়ে ঘরের মধ্যে নিয়ে যান। তার পর বৃদ্ধ দম্পতিকে বেঁধে রেখে প্রায় চার কোটি নগদ এবং সোনার গয়না নিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার দিল্লির রোহিণীর প্রশান্ত বিহারে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ৮১ বছর বয়সি বৃদ্ধ এবং তাঁর স্ত্রীকে আটকে রেখে তাঁদের বাড়িতে লুটপাট চালায় চার-পাঁচ জন। তবে তাঁদের পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি। ওই বাড়িতে লাগানো সিসি ক্যামেরা অকেজো হওয়ায় সেখান থেকে কোনও সূত্র মেলেনি। পুলিশ এলাকার আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, দুষ্কৃতীরা ঘরে ঢুকে প্রথমেই দম্পতির মুখে কাপড় গুঁজে দেয়। হাতও বেঁধে দেয়। ওই বাড়িতেই থাকেন তাঁদের ছেলে। কিন্তু কাজের সূত্রে তিনি ঘটনার দিন বাড়িতে ছিলেন না। বৃদ্ধের জবানবন্দি অনুযায়ী, দুষ্কৃতীরা এসেই টাকাপয়সা কোথায় আছে জিজ্ঞেস করে। প্রথমে তা জানাতে অস্বীকার করায় বৃদ্ধকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। এমনকি, তাঁদের দিকে বন্দুক তাক করা হয়। শেষ পর্যন্ত অগত্যা টাকা এবং গয়নার কথা জানাতে বাধ্য হন। তার পরই আলমারি খুলে টাকা এবং সোনার অলঙ্কার নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। বাড়ি ছাড়ার সময় দম্পতিকে প্রাণনাশের হুমকিও দেয় তারা।
দুষ্কৃতীরা বাড়ি ছেড়ে গেলে, কোনও রকমে হাতের বাঁধন খোলেন বৃদ্ধের স্ত্রী। তার পর স্বামীকে বন্ধনমুক্ত করেন। ধাতস্থ হওয়ার পর পুত্রকে ফোন করে বিষয়টি জানান দম্পতি। তিনিই পুলিশকে বিষয়টি জানান।
ভারতীয় ন্যায় সংহিতার অধীনে ডাকাতির মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। রোহিণীর ডিসিপি অমিত গয়াল জানান, ঘটনার তদন্তে পুলিশের ছ’টি দল গঠন করা হয়েছে। তারা এলাকার সিসিটিভি ফু়টেজ খতিয়ে দেখে দুষ্কৃতীদের শনাক্ত করার কাজ চালানো হচ্ছে। খুব দ্রুত অভিযুক্তদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হবে জানান অমিত।