গয়া বিমানবন্দর। —ফাইল চিত্র।
আট বছর ধরে বৌদ্ধ সন্ন্যাসী সেজে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় কাটিয়েছেন। অবশেষে বিহারের গয়া বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার হলেন বাংলাদেশের এক বাসিন্দা। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম বাবু জো বড়ুয়া। আদতে বাংলাদেশের বাসিন্দা ওই প্রৌঢ় ছদ্মবেশে দীর্ঘ সময় বিহারের গয়ায় একটি মঠে বাস করতেন।
গ্রেফতার হতে পারেন, বিভিন্ন সূত্রে ওই খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ভারত ছাড়তে চেয়েছিলেন বাংলাদেশি প্রৌঢ় বাবু। শুক্রবার তাইল্যান্ড যাওয়ার জন্য গয়া বিমানবন্দরে যান। সেখানেই নিরাপত্তারক্ষী অভিযুক্তকে আটকে দেন। অভিযোগ, বাবুর কাছে আসল পাসপোর্ট বা ভিসা ছিল না। তাঁর কাছে অন্যান্য যে পরিচয়পত্র পাওয়া গিয়েছে, সেগুলো সবই নকল। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ গয়ার মগধ মেডিক্যাল থানার পুলিশের হাতে তুলে দেন অভিযুক্তকে।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, ধৃত ব্যক্তি নকল ভারতীয় পাসপোর্ট নিয়ে আন্তর্জাতিক উড়ানে উঠতে গিয়েছিলেন। তবে বিমানবন্দরে যখন যাত্রীদের কাগজপত্র পরীক্ষা করা হচ্ছিল, তখন অভিযুক্তের শরীরী ভাষা সন্দেহজনক বলে মনে হয় সংশ্লিষ্ট বিমানবন্দরের নিরাপত্তারক্ষীদের। তাঁরা জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন ওই ব্যক্তিকে। তাতেই মেলে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশের দাবি, ধৃত স্বীকার করেছেন যে তিনি ছদ্মবেশে ভারতে রয়েছেন। বৌদ্ধ সন্ন্যাসী সেজে আট বছর ভারতে রয়েছেন। আদতে তিনি বাংলাদেশের নাগরিক। অভিযুক্তের কাছ থেকে মিলেছে বিভিন্ন নামে ভারতীয় পাসপোর্ট। পাওয়া গিয়েছে, বিভিন্ন পরিচয়ের আধার এবং প্যান কার্ড। তা ছাড়া বিভিন্ন বিদেশি মুদ্রা এবং ৩৮০০ টাকা নগদ ছিল অভিযুক্তের কাছে। সেগুলো বাজেয়াপ্ত করা হয়। নাম ভাঁড়িয়ে বিমানযাত্রা চেষ্টার অভিযোগে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তাঁকে আটকে দেন।
বাংলাদেশি প্রৌঢ়ের গ্রেফতারি নিয়ে গয়ার পুলিশ সুপারিনটেন্ডেন্ট আশিস ভারতী বলেন, ‘‘ভিসা, পাসপোর্ট ছাড়া এক বাংলাদেশি ব্যক্তি আট বছর বিহারে বাস করছিলেন। সম্প্রতি তিনি গয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। অভিযুক্তের যত পরিচয়পত্র পাওয়া গিয়েছে, তার সবই নকল এবং ভুয়ো। গয়া বিমানবন্দর থেকে তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৩১৮ (৪), ৩৩৬ (৩) এবং ৩৪০(২) ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। এ ছাড়াও ভারতীয় পাসপোর্ট আইনেও মামলা করা হয়। তদন্তের প্রয়োজনে ধৃতকে বিশদে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।