অরবিন্দ কেজরীওয়াল। —ফাইল চিত্র।
নির্বাচন কমিশন ভোটের দিনক্ষণ জানানোর আগেই দিল্লির বিধানসভা ভোটে প্রথম দফার প্রার্থী ঘোষণা করে দিয়েছেন তিনি। আম আদমি পার্টি (আপ) প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল এ বার বিধানসভা নির্বাচনে দলের প্রচারের সুর বেঁধে দিলেন। ‘রেউড়ি (খয়রাতির) রাজনীতি’ নিয়ে নিশানা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে।
শুক্রবার দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শুরু করেছেন জনসম্পর্ক অভিযান। যার পোশাকি নাম ‘রেউড়ি পে চর্চা’। উত্তর ভারতে খুবই জনপ্রিয় তিল ও গুড়ের তৈরি ছোট্ট মিষ্টি রেউড়ি। পূর্ব ভারতে যেমন মন্দিরে হরির লুটে, রথযাত্রায় বাতাসা ছড়ানো হয়, উত্তর ভারতে তেমনই রেউড়ি বিলি হয়ে থাকে। প্রধানমন্ত্রিত্বের দ্বিতীয় মেয়াদে মোদী সেই ‘রেউড়ি’-কে আচমকাই রাজনৈতিক অভিধানে তুলে এনেছিলেন। ঘটনাচক্রে, দিল্লির আপ সরকারকে নিশানা করতে গিয়েই।
২০১৫-র বিধানসভা ভোটে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরেই একের পর এক জনসম্পর্কিত ক্ষেত্রে ভর্তুকি এবং বিনামূল্যের পরিষেবা নীতি চালু করেছিলেন কেজরী। প্রধানমন্ত্রী মোদী তার সমলোচনায় সরব ছিলেন সে সময়। ঠাট্টা করে বলতেন, ‘রেউড়ি রাজনীতি’। শুক্রবার ‘রেউড়ি পে চর্চা’র সূচনা করে কেজরী বলেন, ‘‘সাতটি বিনামূল্যের পরিষেবা— বিদ্যুৎ, জল, শিক্ষা, মহল্লা ক্লিনিকগুলিতে চিকিৎসা, মহিলাদের জন্য বাস ভ্রমণ, বয়স্কদের জন্য তীর্থযাত্রা প্রকল্প এবং মহিলাদের জন্য মাসিক ১০০০ টাকা অর্থসাহায্য কর্মসূচি ভোটের প্রচারে আমাদের অন্যতম হাতিয়ার হবে। গত ১০ বছরে আপ সরকার দিল্লিবাসীর জন্য কী কী করেছে, লিফলেট ছাপিয়ে তা প্রতিটি বুথে বিলি করবেন আমাদের কর্মীরা।’’
আপ প্রধান জানান, বিধানসভা ভোটের আগে দিল্লি জুড়ে তাঁরা ৬৫ হাজার ছোট-বড় সভা করবেন। জাতীয় রাজধানী অঞ্চল দিল্লি পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা না পাওয়ায় সীমিত ক্ষমতার মধ্যে থেকেই তাঁদের কাজ করতে হচ্ছে বলেও জানান কেজরী। প্রসঙ্গত, আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে দিল্লিতে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রে ডিসেম্বরের শেষে ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করা হতে পারে। কেজরী বৃহস্পতিবার প্রথম দফায় ১১ জন দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন। ঘটনাচক্রে, তাঁদের মধ্যে ছ’জনই দলবদলু। প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনে দিল্লির ৭০টি আসনের মধ্যে ৬২টি আসনে জয়ী হয়েছিল কেজরীর দল। বিজেপি পেয়েছিল আটটি আসন। আবগারি দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত কেজরী সাড়ে ন’বছর মুখ্যমন্ত্রিত্ব সামলানোর পরে গত সেপ্টেম্বরে ইস্তফা দেন। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন অতিশী।