স্মৃতি ইরানি। —ফাইল চিত্র।
মাস তিনেক আগে লোকসভা নির্বাচনে অমেঠী কেন্দ্রে হারের পরে স্মৃতি ইরানির রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল বিজেপির অন্দরেই। সম্প্রতি দিল্লিতে প্রাক্তন এই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর নানা রাজনৈতিক তৎপরতার পরে প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি আগামী বছর দিল্লি বিধানসভা ভোটে বিজেপির মুখ একদা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ বৃত্তে থাকা স্মৃতি? বিজেপির অন্দরেও বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা শুরু হয়েছে। যদিও বিজেপিরই একাংশ বলছেন, একা স্মৃতি নন, তাঁর সঙ্গেই তালিকায় রয়েছেন দিল্লি বিজেপির আরও একাধিক মুখ।
লোকসভা ভোটে হারের পরে দেশ জুড়ে নতুন করে সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর উপরে জোর দিয়েছে বিজেপি। সে জন্য সদস্য সংগ্রহ অভিযানও শুরু হয়েছে বিভিন্ন রাজ্যে। দিল্লিতে ২ সেপ্টেম্বর থেকে এই অভিযান শুরু হয়েছে। দিল্লি বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ১৪টি জেলা শাখার মধ্যে সাতটিতে সদস্য সংগ্রহ অভিযানের হাল খতিয়ে দেখার ভার দেওয়া হয়েছে স্মৃতিকে। তার পরেই দলে তাঁর নতুন দায়িত্ব নিয়ে জল্পনা বেড়েছে। সেই জল্পনা আরও বেড়েছে দক্ষিণ দিল্লিতে স্মৃতি নতুন একটি বাড়ি কেনার পর থেকে। লোকসভা ভোটের ঠিক আগেই অমেঠীতে নিজের নতুন বাড়িতে গৃহপ্রবেশ করে স্মৃতি বার্তা দিয়েছিলেন, তিনি ভোটের পরেও অমেঠীতেই থাকবেন। কিন্তু লোকসভা ভোটে কংগ্রেস প্রার্থী কিশোরী লাল শর্মার কাছে বিপুল ভোটে হারের পরে অমেঠীর সেই বাড়িতে বিশেষ থাকেননি স্মৃতি। এ বারে দিল্লিতে তাঁর নতুন বাড়ি কেনার পরে প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি ফের দিল্লিতেই পাকাপাকি ভাবে ফিরে আসছেন এই বিজেপি নেত্রী? এমনকি আগামী বছর দিল্লি বিধানসভা ভোটে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভার পেতে পারেন বলেও জল্পনা ছড়িয়েছে। যার জেরে তাঁকেই পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী মুখ করে বিজেপি দিল্লি বিধানসভায় লড়তে পারে বলে মনে করছেন অনেকে। কিন্তু বিজেপি সূত্রে বলা হচ্ছে, স্মৃতির পাশাপাশি সাংসদ মনোজ তিওয়ারি, প্রয়াত সুষমা স্বরাজের মেয়ে তথা প্রথম বারের সাংসদ বাঁশুরি স্বরাজ, দিল্লি বিজেপির সভাপতি বীরেন্দ্র সচদেব এবং পশ্চিম দিল্লির প্রাক্তন সাংসদ প্রবেশ বর্মার নামও রয়েছে তালিকায়। তবে এঁদের মধ্যে প্রবেশের নাম নিয়ে আপত্তি রয়েছে দলেরই অনেকের।
অমেঠী কেন্দ্রে কংগ্রেসের কিশোরী লাল শর্মার কাছে হারের পর তাঁকে সমাজমাধ্যমে তীব্র আক্রমণ শানান কংগ্রেসের নানা স্তরের নেতাকর্মীরা। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, খোদ রাহুল গান্ধী দলীয় স্তরে বার্তা দেন যে, স্মৃতিকে আক্রমণ বন্ধ হোক। তার পরে এক অনুষ্ঠানে রাহুলের প্রশংসা করেন স্মৃতি। তা নিয়েও জল্পনা তৈরি হয়।
এর আগে ২০১৫ সালে প্রাক্তন আইপিএস কিরণ বেদীকে মুখ্যমন্ত্রী মুখ করে দিল্লি বিধানসভা ভোটে লড়েছিল বিজেপি। কিন্তু সে বার আম আদমি পার্টির কাছে শোচনীয় ভাবে হারে তারা। সে সময় দলের অন্দরেই কিরণ বেদীকে মুখ করা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এ বারে বিজেপি কোন পথে হাঁটে, সেটাই দেখার।