তিস্তা দিয়ে জল না বইলে ইলিশ রফতানিতে ভাটাই থেকে যাবে! দেড় বছর আগে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঢাকা সফরে ইঙ্গিতে এ কথাই তাঁকে বুঝিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিস্তা এখনও সেই তিমিরে। ইত্যবসরে জামদানি শাড়িকে কাজে লাগিয়ে দ্বিপাক্ষিক সাংস্কৃতিক সামাজিক এবং বাণিজ্যিক লেনদেন বাড়াতে উৎসাহী কেন্দ্র। আজ নয়াদিল্লিতে ইনস্টিটিউট অব স্যোশাল অ্যান্ড কালচারাল স্টাডিজ আয়োজিত ভারত-বাংলাদেশ বহুপাক্ষিক সহযোগিতা বিষয়ক একটি সম্মেলনে কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি প্রস্তাব দিয়েছেন, ‘‘আমরা তো জামদানি-পর্যটন শুরু করতে পারি। বাংলাদেশের জামদানির উৎস যেখানে, সেখানে যেতে পারেন আমাদের দেশের ক্রেতা, বিক্রেতা, সংশ্লিষ্ট কর্তারা। আবার ওখানকার ব্যবসায়ীরাও এখানে এসে জামদানির বাজারকে সমৃদ্ধ করতে পারেন।’’ ইতিহাস বলছে, বাংলাদেশের ঢাকা জেলাই জামদানির জন্মস্থান। এখানেই মেলে সব চেয়ে ভাল মানের জামদানি। ঢাকার সোনারগাঁও, ধামরাই, তিতাবাড়ি, বাজিতপুর, জঙ্গলবাড়ি এলাকা ক্রমে জামদানির জন্য বিখ্যাত হয়ে উঠেছিল। ১৭৪৭ সালে দিল্লির বাদশা, বাংলার নবাব ও জগৎ শেঠের জন্য প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টাকার জামদানি কেনা হয়েছিল এই সব এলাকা থেকে। ইউরোপীয়, ইরানি, আর্মেনীয় ও মোগলরা ক্রমশ জড়িয়ে পড়েন জামদানি ব্যবসায়ে। স্মৃতির দাবি, ‘‘বস্ত্রশিল্পের ক্ষেত্রে আমরা হাত ধরতে পারলে গোটা বিশ্বের শাড়ির বাজারে আধিপত্য করতে পারব।’’
তবে জামদানি এবং অন্যান্য বস্ত্রের আমদানি রফতানির ক্ষেত্রে কিছু সমস্যার কথাও আজ বলেন ইরানি। দু’দেশের মধ্যে সীমান্ত-হাটগুলির আধুনিকীরণ আশু প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন স্মৃতি।
তা ছাড়া বস্ত্রপণ্যের মান (স্ট্যান্ডার্ড টেস্টিং) নিয়েও সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে ভারতকে। একটি বিশেষ ধরনের রং (অ্যাজো ডাই) ব্যবহারে কড়া নিষেধাজ্ঞা রয়েছে ভারতের, যা জামদানি এবং অনেক বস্ত্রে ব্যবহার করে বাংলাদেশ। নিষেধাজ্ঞা জারির কারণ, এই রঙে রয়েছে ক্যানসারের বীজ।
স্মৃতির কথায়, ‘‘এটা না জেনেই বাংলাদেশের অনেক ব্যবসায়ী আসেন। অ্যাজো ডাই তাঁদের দেশে নিষিদ্ধ নয়। আমাদের তখন তাঁদের বুঝিয়ে বলতে হয়, অ্যাজো ডাই যে নেই, রফতানির আগে সেই সরকারি সার্টিফিকেট দাখিল করুন।’’