সিসিডি-র কর্ণধার সিদ্ধার্থ। ছবি: টুইটার
সেতুতে গাড়ি রেখে রহস্যময় ভাবে নিখোঁজ হয়ে গেলেন ক্যাফে কফি ডে (সিসিডি)-র কর্ণধার তথা প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী এসএম কৃষ্ণার জামাই ভিজি সিদ্ধার্থ। সোমবার, মেঙ্গালুরুর নেত্রাবতী নদীর উপরের সেতুতে তাঁকে শেষ বারের মতো দেখা গিয়েছিল। সেখানে চালককে গাড়ি থামাতে বলে নেমে পড়েন সিদ্ধার্থ। এরপর থেকেই তাঁর আর কোনও খোঁজ নেই। তাঁর খোঁজে নেত্রাবতী নদীতে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
তাঁর গাড়িচালক বাসবরাজ পাটিল বলেছেন, ‘‘আমরা বেঙ্গালুরু থেকে সকলেশপুর যাচ্ছিলাম। হঠাৎ তিনি আমাকে মেঙ্গালুরুর দিকে গাড়ি ঘোরাতে বলেন। তাঁর নির্দেশেই নেত্রীবতী নদীর উপর সেতুতে আমি গাড়ি থামাই। তারপর গাড়ি থেকে নেমে তিনি হাঁটতে শুরু করেন।’’ গাড়িচালকের বয়ান অনুযায়ী, ‘‘রাত আটটা বেজে গেলেও সিদ্ধার্থ ফেরেননি। তাঁর ফোনও বন্ধ ছিল। উদ্বিগ্ন হয়ে আমি তাঁর ছেলেকে ফোন করি। এরপর, পুলিশে নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়।’’
সিদ্ধার্থের খোঁজে নেত্রাবতী নদীতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। নামানো হয়েছে পুলিশ কুকুর। তল্লাশি অভিযানে সাহায্য করছেন স্থানীয় মৎস্যজীবীরাও। এর মধ্যেই স্থানীয় এক মৎস্যজীবী দাবি করেছেন, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টা নাগাদ এক ব্যক্তিকে তিনি নদীতে ঝাঁপ দিতে দেখেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি তখন নৌকায় ছিলাম। ওই ব্যক্তিকে উদ্ধারের চেষ্টাও করেছিলাম। কিন্তু তাঁকে আর খুঁজে পাইনি।’’ মেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার সন্দীপ পাটিল বলেছেন, ‘‘সিদ্ধার্থ শেষ বার কাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
এই সেতুতে গাড়ি রেখেই নিখোঁজ হন সিসিডি কর্ণধার। ছবি: টুইটার।
আরও পড়ুন: তথ্যচিত্রেও আত্মপ্রচার? বিদ্ধ মোদী
সিদ্ধার্থের এমন ভাবে নিখোঁজ হওয়া নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে। আর তাতে নানা জল্পনা শুরু হয়েছে। জল্পনা আরও বাড়িয়ে নিজের সংস্থার কর্মীদের লেখা সিদ্ধার্থের একটি চিঠি প্রকাশ্যে এনেছে সংবাদ সংস্থা এএনআই। চিঠিতে, লাভ না হওয়ার জন্য সংস্থার ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। সিদ্ধার্থ লিখেছেন, ‘সমস্ত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, আমি লাভ ঘরে তুলতে ব্যর্থ। আমার দায়িত্বেই প্রত্যেকটি আর্থিক লেনদেন হয়েছিল। আইনের কাছে একমাত্র আমিই জবাবদিহি করতে বাধ্য।’ ওই চিঠির সূত্রে স্পষ্ট, ব্যবসায় তেমন ভাবে লাভ হচ্ছিল না সিদ্ধার্থের। প্রসঙ্গত, গত ২০১৭ সালে সিদ্ধার্থের সংস্থায় হানা দেয় আয়কর বিভাগ। তাঁর এই চিঠি জল্পনা আরও উস্কে দিয়েছে।
সিদ্ধার্থের এমন রহস্যময় ভাবে নিখোঁজ হওয়া নিয়ে উদ্বেগে তাঁর পরিবার ও পারিবারিক বন্ধুরা। উদ্বিগ্ন রাজনৈতিক মহলও। খবর পেয়ে, মঙ্গলবার সকালে এসএম কৃষ্ণার বাড়িতে যান কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা। তাঁর বাড়িতে জড়ো হন কংগ্রেস ও বিজেপির বহু নেতা ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা। সিদ্ধার্থের অনুসন্ধানের ব্যাপারে কেন্দ্রের কাছে সাহায্যও চেয়েছে বিজেপি শিবির। কংগ্রেস নেতা ইউটি খদের বলেছেন, ‘‘আমার বন্ধু কত মানুষকে চাকরি দিয়েছে, সেই বন্ধুই গতকাল রাত থেকে রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ। আমি খুব আশ্চর্য হয়ে যাচ্ছি। অনেক রকম সম্ভাবনাই রয়েছে। অন্য কোনও গাড়ির সঙ্গে দুর্ঘটনাবশত সে নদীতে পড়ে যেতেও পারে।’’
আরও পড়ুন: ওয়েস্ট ইন্ডিজ মানেই ছিল দুরু দুরু বুকে সফর, এই শতকে বদলে গিয়েছে ছবিটা