প্রায় দু’দিন নিখোঁজ থাকার পরে উদ্ধার কাফে কফি ডে কর্ণধারের নিথর দেহ।
প্রায় দেড় দিন নিখোঁজ থাকার পরে উদ্ধার হল কাফে কফি ডে-এর কর্ণধার ভি জি সিদ্ধার্থর দেহ। বুধবার সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ একদল মৎস্যজীবী তাঁর নিথর দেহ উদ্ধার করেন নেত্রাবতী নদীর পার থেকে। শেষ বার তাঁকে ওই নদীর ওপরে সেতুতে দেখা গিয়েছিল। পুলিশ তাঁর দেহ উদ্ধার করে ওয়েনলক হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে তাঁর দেহ শনাক্ত করা হয় পরিবারের তরফে। সিদ্ধার্থ প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী ও কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণের জামাই।
সোমবার রাতে বেঙ্গালুর থেকে সকলেশপুরের দিকে রওনা হয়েছিলেন সিদ্ধার্থ। চালকের দাবি, মাঝপথে সিদ্ধার্থ নির্দেশ দেন ম্যাঙ্গালুরুর দিকে যেতে। এর পর ম্যাঙ্গালুরুর কাছে নেত্রাবতী নদীর সেতুর উপর গাড়ি থামাতে বলেন। ‘একটু হেঁটে আসছি’ বলে গাড়ি থেকে নেমে যান তিনি।
সিদ্ধার্থের ফিরতে দেরি হচ্ছে দেখে প্রথমে তাঁকে ফোন করেন গাড়িচালক বাসবরাজ পাতিল। কিন্তু ফোন বন্ধ ছিল। এরপর তিনি ফোন করেন ছেলে ঈশানকে। তিনিও তাঁর বাবার ফোন সুইচড অফ পান। প্রায় দু’ঘণ্টা অপেক্ষার পরেও সিদ্ধার্থ না ফেরায় পুলিশে খবর দেন বাসবরাজ।
আরও পড়ুন : ঋণভার থেকে হতাশা, নিজেদের জীবন শেষ করে দিয়েছিলেন এই ধনকুবেররাও
তল্লাশি শুরু হতে পুলিশকে স্থানীয় এক মৎস্যজীবী জানান, তিনি এক জনকে নদীতে ঝাঁপ দিতে দেখেছেন। অনেক চেষ্টা করেও তাঁর কাছে পৌঁছতে পারেননি। এরপরে ক্রমেই দৃঢ় হতে থাকে তাঁর আত্মহত্যার আশঙ্কা। সোমবার রাত থেকে তন্নতন্ন করে তল্লাশি চলতে থাকে নেত্রাবতী নদী ও তার সংলগ্ন এলাকা। প্রায় ৩৬ ঘণ্টা পরে বুধবার সকালে তাঁর দেহ উদ্ধার হল।
নেত্রাবতী নদীতে তন্নতন্ন করে চলে তল্লাশি।
সিদ্ধার্থের রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই নানা জল্পনা শুরু হয়। জল্পনা আরও জটিল করে নিজের সংস্থার কর্মীদের লেখা সিদ্ধার্থের একটি চিঠি প্রকাশ্যে এনেছিল সংবাদ সংস্থা এএনআই। চিঠিতে, তেমন ভাবে লাভ না হওয়ার জন্য সংস্থার ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। লিখেছিলেন, ‘সমস্ত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, আমি লাভ ঘরে তুলতে ব্যর্থ। আমার দায়িত্বেই প্রত্যেকটি আর্থিক লেনদেন হয়েছিল। আইনের কাছে একমাত্র আমিই জবাবদিহি করতে বাধ্য।’
আরও পড়ুন: নিখোঁজ সিসিডি কর্ণধার সিদ্ধার্থ, চিঠিতে আঙুল আয়করের দিকে
ওই চিঠির সূত্রে স্পষ্ট, ব্যবসায় তেমন ভাবে লাভ হচ্ছিল না সিদ্ধার্থের। প্রসঙ্গত, গত ২০১৭ সালে সিদ্ধার্থের সংস্থায় হানা দেয় আয়কর বিভাগ। চলতি বছরেই মাইন্ডট্রি নামক সংস্থায় থাকা তাঁর ২০ শতাংশ শেয়ার বিক্রিও করে দেন তিনি।
পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, ব্যবসায়ে আর্থিক মন্দার জেরেই আত্মঘাতী হয়েছেন ভি জি সিদ্ধার্থ।
আরও পড়ুন : উন্নাও: ট্রাক দুর্ঘটনার পিছনে কি ষড়যন্ত্র বা প্ররোচনা! তদন্তে সিবিআই
ছবি: এএফপি