কাছে: ইতালির প্রধানমন্ত্রী পাওলো জেন্তিলোনির সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী। সোমবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।
ভারতে মৎস্যজীবী হত্যার দায়ে দুই ইতালীয় সেনার বিচারকে ঘিরে গত পাঁচ বছর তলানিতে ঠেকেছিল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সমীকরণও ধাক্কা খেয়েছিল পরোক্ষে। ইতালির প্রধানমন্ত্রী পাওলো জেন্তিলোনির সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর শীর্ষ বৈঠকের পরে আজ সেই শৈত্য অনেকটা কেটেছে বলে দাবি করছে বিদেশ মন্ত্রক।
দীর্ঘ এক দশক পর কোনও ইতালীয় প্রধানমন্ত্রী পা রাখলেন নয়াদিল্লিতে। আজ হায়দরাবাদ হাউসে পরপর ছ’টি চুক্তি সই করল দু’দেশ। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শক্তি, রেল সুরক্ষার মতো বিষয়গুলিতে চুক্তির পাশাপাশি মোদী ও জেন্তিলোনির মধ্যে আলোচনা হল সন্ত্রাসবাদ বিরোধিতা এবং পরিকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্যপদে ভারতের আবেদন নিয়েও কথা হয়েছে। প্রতিনিধি পর্যায়ের আলোচনার পর প্রকাশিত হয়েছে যৌথ বিবৃতিও। মোদীর কথায়, ‘‘জেন্তিলোনির সঙ্গে আলোচনায় আমরা উপলব্ধি করেছি যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে দু’তরফেরই উৎসাহের কমতি নেই।’’
২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ভারত মহাসাগরে একটি ইতালীয় তেল ট্যাংকার পাহারা দেওয়ার সময় দুই মেরিন সেনা দু’জন ভারতীয় মৎস্যজীবীকে গুলি করে হত্যা করে। দিল্লি তাৎক্ষণিক ভাবে ওই দুই মেরিনকে আটক করলেও পরে জামিনে মুক্তি দেয়। ওই ঘটনার পর থেকে কার্যত বন্ধ হয়ে ছিল ভারত-ইতালির মধ্যে কূটনৈতিক আদানপ্রদান। জেন্তিলোনির সফরের পরই যে দু’দেশ মামলা প্রত্যাহার করে নেবে, এমন নয়। কিন্তু তিক্ততা কমল বলেই মনে করা হচ্ছে।
আসলে চিন প্রাচীন সিল্ক রুট বরাবর নতুন ‘ওবর’ সড়ক প্রকল্প ঘোষণা করার পর থেকে বেশ চাপে রয়েছে সাউথ ব্লক। জাপান, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরে সহযোগিতা বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে তারা। ইউরোপের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর কথা ভাবা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে পুরনো বিবাদ এবং তিক্ততা কিছুটা উপেক্ষা করতেও রাজি মোদী সরকার। ডিসেম্বরে দিল্লি আসছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ-ও।