সীতারাম ইয়েচুরি। ফাইল চিত্র।
রাজ্যপাল হিসেবে জগদীপ ধনখড়ের ভূমিকা নিয়ে সরব হলেও উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সেই ধনখড়ের বিরুদ্ধেই তৃণমূল ভোট দেয়নি কেন, তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুললেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি।
বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলিতে বিজেপি রাজ্যপালদের রাজনৈতিক স্বার্থে কাজে লাগাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে বিরোধী দলগুলিকে এক মঞ্চে আনতে চাইছে সিপিএম। ইয়েচুরি এ বিষয়ে নতুন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। ডিএমকে প্রধান, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন। এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার হাসপাতালে ভর্তি। ছাড়া পেলে তাঁর সঙ্গেও কথা বলবেন ইয়েচুরি। কিন্তু তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলা নিয়ে প্রশ্নে ইয়েচুরির জবাব, ‘‘তৃণমূলের মুখ্যমন্ত্রী কখন কোন দিকে অবস্থান করছেন সেটাই তো জানা নেই। যে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে উনি অভিযোগ করেছিলেন, সেই রাজ্যপালকেই উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কার্যত সমর্থন করেছিলেন।’’ উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী ধনখড় ও বিরোধী শিবিরের প্রার্থী মার্গারেট আলভার মধ্যে কাউকেই ভোট না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল।
বাম শাসিত কেরলের পিনারাই বিজয়ন সরকারের সঙ্গে রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানের সঙ্গে সংঘাত বেধেছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হিসেবে তিনি একাধিক উপাচার্যকে শো-কজ় করেছিলেন। সে সময় কেরলে বিরোধী দল হিসেবে কংগ্রেস রাজ্যপালকে সমর্থন করেছিল। সেই হিসেবে ইয়েচুরির সঙ্গে খড়্গের কথা তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ইয়েচুরির বক্তব্য, কংগ্রেসকে এ বিষয়ে অবস্থান নিতে হবে। কংগ্রেস-শাসিত রাজ্যেও রাজ্যপালদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ইয়েচুরি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল, তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওদের সঙ্গেও কথা বলতে পারেন। রাজ্যপালকে আচার্যের পদ থেকে সরিয়ে বিধানসভায় বিল পাশ করিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। রাজ্যপালকে আচার্যের পদ থেকে সরিয়ে বিল আনার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে কেরল সরকারের ভিতরেও। তবে কেরল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক এম ভি গোবিন্দনের মন্তব্য, ‘‘এখনও এ ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা চাই রাজ্যপাল সংবিধান ও আইন মেনে চলুন।’’
ইয়েচুরি আজ জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী যে ভাবে নতুন সংসদে ভবনে হিন্দু মতে পুজো করছেন, যে কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচির আগে মন্দিরে যাচ্ছেন, তাতে সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি লঙ্ঘন করে হিন্দু ধর্মকেই রাষ্ট্রের ধর্ম হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। এ বিষয়েও বিরোধী দলগুলির সঙ্গে কথা বলে বিরোধিতার চেষ্টা করা হবে।