লাইন বাংলার, মুখ বাঙালি

লাইনে জয়, আরও বাঙালি পলিটব্যুরোয়

দীর্ঘ লড়়াইয়ের পরে পার্টি কংগ্রেসে গৃহীত হল বাংলা সিপিএমেরই রাজনৈতিক লাইন। আর সেই সঙ্গেই পলিটব্যুরোয় নতুন যে দুই মুখের অন্তর্ভুক্তি ঘটল, তাঁরা দু’জনেই বাঙালি।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

হায়দরাবাদ শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:০৭
Share:

পার্টি কংগ্রেস থেকে এ বার মাথা উঁচু করে বেরোল বাংলা!

Advertisement

দীর্ঘ লড়়াইয়ের পরে পার্টি কংগ্রেসে গৃহীত হল বাংলা সিপিএমেরই রাজনৈতিক লাইন। আর সেই সঙ্গেই পলিটব্যুরোয় নতুন যে দুই মুখের অন্তর্ভুক্তি ঘটল, তাঁরা দু’জনেই বাঙালি। নবাগত নীলোৎপল বসু ও তপন সেনকে ধরে সিপিএমের নতুন পলিটব্যুরোয় বাংলাভাষীর সংখ্যা দাঁড়়াল সাত।

হায়দরাবাদে ২২তম পার্টি কংগ্রেসের শেষ দিনে দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দ্বিতীয় বারের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন সীতারাম ইয়েচুরিই। রাজনৈতিক প্রস্তাবে তাঁর যুক্তি পার্টি কংগ্রেস মেনে নেওয়ার পরে ইয়েচুরির ফের সাধারণ সম্পাদক হওয়া প্রত্যাশিতই ছিল। পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটি, দুই ক্ষেত্রেই ইয়েচুরিপন্থীদের সংখ্যা বেড়়েছে। রাতারাতি আগের কমিটির ভারসাম্য পুরোপুরি উল্টে দেওয়া যায় না বলে কারাটপন্থীরা এখনও এগিয়ে। তবে এই পার্টি কংগ্রেসে যুক্তির জোরে অধিকাংশ রাজ্যের দলকে নিজের দিকে টেনে এনেছেন ইয়েচুরি।

Advertisement

পলিটব্যুরোয় নতুন যে দুই বাঙালি মুখের জায়গা হয়েছে, দলের কাজে দু’জনেই এখন দিল্লিবাসী। পলিটব্যুরোয় যাওয়ার পরে নীলোৎপলবাবুর মন্তব্য, ‘‘দলের লাইনে অনেক স্পষ্টতা এল। এক দিকে যেমন আমাদের জন্য কঠিন সময়, তেমনই আবার সঙ্ঘ-বিজেপির রাজনীতির দৌলতে আমাদের সামনে সুযোগও প্রচুর।’’ সিটুর সাধারণ সম্পাদক তপনবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘রাজ্যসভার পাট চুকে যাওয়ায় এ বার সংগঠনের দিকে আরও বেশি সময় দেওয়া যাবে।’’

শ্রমিক ফ্রন্টের কে হেমলতা এবং কৃষক ফ্রন্টের অশোক ধওয়ালেকে নিয়ে বিতর্ক না মেটায় তাঁদের কাউকেই পলিটব্যুরোয় নেওয়া হয়নি। পুরনোদের মধ্যে বাদ গিয়েছেন শুধু এ কে পদ্মনাভন। পলিটব্যুরোর কলেবর ১৬ থেকে বেড়়ে ১৭ হয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, কেরল থেকে কট্টরপন্থী নতুন কারও প্রবেশ সেখানে ঘটেনি!

মোট ৯৫ জনের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটিতে বাংলা খেকে নতুন মুখ চার— সুজন চক্রবর্তী, রবীন দেব, অমিয় পাত্র ও আভাস রায়চৌধুরী। এঁদের মধ্যে রবীনবাবু গত পার্টি কংগ্রেসে ছিলেন না বাংলায় পুরভোটের জন্য, এ বার আসতে পারেননি পঞ্চায়েত ভোটের জন্য। দলের নির্দেশে কখনও লোকসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়়িয়ে হেরেছেন, কখনও জয়ের অঙ্ক নেই জেনেও দলের কথায় রাজ্যসভায় প্রার্থী হয়েছেন। শেষ ‘ছাই ফেলতে ভাঙা কুলো’র স্বীকৃতি মেলায় খুশি দলের অনেকেই। সুজনবাবু এবং অমিয়বাবু বলেছেন, ‘‘দায়িত্ব বেড়়ে গেল।’’ কন্ট্রোল কমিশনের চেয়ারম্যানও বাংলা থেকে বাসুদেব আচারিয়া।

অসুস্থতার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে অব্যাহতি চেয়ে চিঠি দিয়েছিলেন গৌতম দেব। একই কারণে আমন্ত্রিত সদস্যপদ থেকেও সরে গিয়েছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বাংলা থেকে আরও বাদ গিয়েছেন মদন ঘোষ ও দীপক দাশগুপ্ত।

দিনের শেষে কেন্দ্রীয় কমিটির এক নতুন সদস্যের মন্তব্য, ‘‘অন্যান্য বার পার্টি কংগ্রেসে আসি, অন্যদের কথা শুনি। এ বার বাংলার মত জোর গলায় বলা হয়েছে, অন্যদের বোঝানোও হয়েছে।’’ এক দক্ষিণী সম্পাদকের হাত ধরেই এ বার পার্টি কংগ্রেসে ‘জাগো বাংলা’!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement