অভিযুক্ত আফতাব আমিন পুনাওয়ালা এবং নিহত প্রেমিকা শ্রদ্ধা ওয়ালকর। ফাইল চিত্র।
ক্রমশই খুলছে শ্রদ্ধা হত্যাকাণ্ডের জট। তদন্তে নেমে আরও এক তথ্য উঠে এল তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকদের হাতে। পুলিশ সূত্রে খবর, শ্রদ্ধা খুনের পর পরই আফতাব নিজের পুরনো মোবাইল ফোনটি বিক্রি করে দিয়েছিলেন। বিক্রি করে দেওয়া সেই ফোনে এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে একাধিক তথ্য লুকিয়ে রয়েছে বলেও মনে করছে তদন্তকারী দল। পুলিশ ইতিমধ্যেই এই ফোন উদ্ধারের চেষ্টা করছে বলেও সূত্রের খবর।
শুধু ফোন বিক্রিই নয়, গত কয়েক মাসে আফতাব বহু বার সিম বদলেছেন বলেও তদন্তে উঠে এসেছে। প্রশ্ন উঠছে, শ্রদ্ধা খুনের পর কেন পুরনো ফোন বিক্রি করে দিয়েছিলেন অভিযুক্ত আফতাব? কেনই বা বার বার সিম বদলাতে হয়েছিল তাঁকে। পুলিশ সূত্রের খবর, শ্রদ্ধা ছাড়াও অন্য মহিলাদের প্রতি আসক্ত ছিলেন আফতাব। আর সেই মহিলাদের সঙ্গে তিনি আলাপ জমাতেন ‘ডেটিং অ্যাপ’-এর মাধ্যমে। সেই মহিলাদের সঙ্গে কথা বলার যাবতীয় প্রমাণ ওই ফোনে ছিল বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। মনে করা হচ্ছে আফতাবের ব্যবহার করা ‘ডেটিং অ্যাপ’ সংক্রান্ত অনেক তথ্যও রয়েছে ওই ফোনে। প্রমাণ লোপাট করতে তড়িঘড়ি ওই ফোন তিনি বিক্রি করে দিয়েছিলেন বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। একই সঙ্গে মনে করা হচ্ছে, শ্রদ্ধা খুনের পর অন্য মহিলাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে আফতাব আলাদা আলাদা সিম ব্যবহার করতেন। আর তার জেরেই এই সিমবদল।
দিল্লির মেহরৌলীতে ২৭ বছর বয়সি শ্রদ্ধা ওয়ালকার হত্যাকাণ্ড নিয়ে ইতিমধ্যেই একাধিক তথ্য পুলিশের হাতে উঠে এসেছে। তবে এখনও বহু প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায়নি বলেও পুলিশ সূত্রে খবর। যেমন খুঁজে পাওয়া যায়নি খুনের জন্য ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র এবং টুকরো করা দেহের বহু অংশ।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ মে দিল্লির মেহরৌলীতে একত্রবাসে থাকা প্রেমিকা শ্রদ্ধাকে খুন করার অভিযোগ রয়েছে প্রেমিক আফতাব আমিন পুনাওয়ালার বিরুদ্ধে। এর পর নাকি আমেরিকার এক ওয়েব সিরিজ় থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে শ্রদ্ধার মৃতদেহ ৩৫ টুকরো করে ফেলেন আফতাব। সেই মৃতদেহ সংরক্ষণ করে রাখতে কিনে আনা হয় নতুন ফ্রিজ। এর পর ১৮ দিন ধরে কাছের জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় শ্রদ্ধার দেহের টুকরোগুলি ছড়িয়ে দিয়ে আসেন অভিযুক্ত আফতাব। সন্দেহ এড়াতে আফতাব রোজ রাত ২টো নাগাদ একটি পলিব্যাগে করে শ্রদ্ধার দেহের টুকরো নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোতেন বলেও পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে।
শ্রদ্ধার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করার পর দিল্লি পুলিশ গত শনিবার আফতাবকে গ্রেফতার করে। তার পর থেকেই অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। প্রমাণ খুঁজে বার করতেও তৎপর হয়েছে পুলিশ।