(বাঁ দিকে) নিহত শ্রদ্ধা ওয়ালকর। শ্রদ্ধার বাবা বিকাশমদন ওয়ালকর (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
বছর দুয়েক আগের কথা। দিল্লির বাসিন্দা শ্রদ্ধা ওয়ালকরকে খুন করে দেহ টুকরো টুকরো করে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন তাঁরই একত্রবাসের সঙ্গী আফতাব আমিন পুণাওয়ালা! ছতরপুরের জঙ্গল থেকে উদ্ধার হয়েছিল নিখোঁজ শ্রদ্ধার দেহ। সেই থেকে তিহাড় জেলে বন্দি অভিযুক্ত আফতাব। কিন্তু আফতাবের শাস্তি হওয়ার আগেই হৃদ্রোগে মৃত্যু হল শ্রদ্ধার বাবা বিকাশমদন ওয়ালকরের। মেয়ের খুনের ন্যায়বিচার স্বচক্ষে দেখে যাওয়া হল না তাঁর!
রবিবার মহারাষ্ট্রের পালঘরে হৃদ্রোগে মৃত্যু হয়েছে বিকাশমদনের। ছেলের সঙ্গে ভাসাই এলাকায় থাকতেন তিনি। রবিবার ভোরে হঠাৎ স্বাস্থ্যের অবনতি হয় তাঁর। দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলেও শেষরক্ষা হয়নি। বিকাশের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। বিভিন্ন সূত্রের খবর, মেয়ের মৃত্যুর পর থেকে অবসাদেও ভুগছিলেন তিনি। ২০২২ সালের ২০ নভেম্বর উদ্ধার হয়েছিল শ্রদ্ধার দেহাংশ। অথচ, সেই ঘটনার পর দু’বছর পেরিয়ে গেলেও শেষকৃত্যের জন্য মেয়ের দেহাংশ পাননি বাবা। মেয়ের দেহাংশ চেয়ে গত বছরই ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে মামলা স্থানান্তরিত করার দাবি জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু লাভ হয়নি।
একটি ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে আলাপ হয়েছিল শ্রদ্ধা-আফতাবের। তার পর তাঁরা একত্রবাস শুরু করেন। ২০২২ সালের ১৮ মে দিল্লির মেহরৌলিতে প্রেমিকা শ্রদ্ধাকে খুন করেন আফতাব। এর পর আমেরিকার এক ওয়েব সিরিজ় থেকে ‘অনুপ্রেরণা’ নিয়ে শ্রদ্ধার মৃতদেহ ৩৫ টুকরো করে ফেলেন আফতাব। মৃতদেহ সংরক্ষণ করে রাখতে নতুন ফ্রিজ়ও কিনে আনেন তিনি। তার পর ১৮ দিন ধরে মেহরৌলির জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় শ্রদ্ধার দেহের টুকরোগুলি ছড়িয়ে দিয়ে আসেন। শ্রদ্ধার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে ২০২২ সালের ১২ নভেম্বর আফতাবকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে ডিএনএ পরীক্ষায় জানা যায়, উদ্ধার হওয়া দেহাংশগুলি শ্রদ্ধারই। আফতাবের বিরুদ্ধে ৬,০০০ পাতার চার্জশিট পেশ করা হয়। সেই থেকে আফতাব তিহাড় জেলেই বন্দি। নভেম্বর মাসে জল্পনা ছড়ায় যে, মুম্বইয়ে বাবা সিদ্দিকি-খুনের তদন্ত করতে গিয়ে মুম্বই পুলিশ জানতে পেরেছে বিশ্নোই গ্যাংয়ের শুটারেরা মারতে চেয়েছিলেন আফতাবকেও। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই জেলের মধ্যে আফতাবের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়।