গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
খলিস্তান-বিতর্কে এক মাসের কূটনৈতিক টানাপড়েনের পরে নরেন্দ্র মোদীর সরকার বুধবার কানাডার নাগরিকদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ শিথিল করেছে। আর তার পরেই এই ঘটনা নিয়ে নয়াদিল্লিকে কূটনৈতিক খোঁচা দিল কানাডা়র প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সরকার। সে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হরজিৎ সিংহ সজ্জন বৃহস্পতিবার ভারত সরকারের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। কিন্তু সেই সঙ্গেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘উদ্বেগজনক পরিস্থিতির পর ভাল সময় এসেছে। ভিসা পরিষেবা বন্ধ করা কখনও উচিত নয়।’’
বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বুধবার জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) থেকে ‘এন্ট্রি ভিসা’, ‘বিজনেস ভিসা’, ‘মেডিক্যাল ভিসা’ এবং ‘কনফারেন্স ভিসা’ দেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, কানাডার মাটিতে সে দেশের খলিস্তানি নেতা হরদীপ সিংহ নিজ্জরকে খুনের ঘটনার জেরে গত এক মাসের বেশি সময় ধরে উত্তেজনার পারদ চড়েছে দ্বিপাক্ষিক কূটনীতিতে। উত্তেজনার সেই আবহে গত ২১ সেপ্টেম্বর কানাডার নাগরিকদের ভিসা দেওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ বলবতের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিদেশ মন্ত্রক। বিদেশ মন্ত্রকের নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, পরবর্তী বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত কানাডার নাগরিকদের ভিসা দেওয়া স্থগিত রাখা হবে। বুধবারে সেই নিষেধাজ্ঞায় আংশিক ইতি টানে বিদেশ মন্ত্রক।
ঘটনাচক্রে ট্রুডো সরকারের মন্ত্রী হরজিতের বিরুদ্ধেও খলিস্তানপন্থীদের মদত দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। কানাডার মাটিতে সে দেশের খলিস্তানি নেতা নিজ্জরকে খুনের ঘটনায় ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা ‘র’-এর ‘ভূমিকা’ রয়েছে বলে ১৮ সেপ্টেম্বর অভিযোগ করেছিলেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো। ঘটনাচক্রে, ট্রুডোর ওই বিবৃতির পরেই কানাডার এক ভারতীয় কূটনীতিককে বহিষ্কার করা হয়। ট্রুডো সরকারের বিদেশমন্ত্রী মেলানি জোলি অভিযোগ করেন, ওই ভারতীয় কূটনীতিক আদতে ‘র’-এর আধিকারিক।
কানাডার ওই পদক্ষেপের জবাবে ভারতও সে দেশের কয়েক জন কূটনীতিককে বহিষ্কার করে। টানাপড়েনের এই আবহে ভারত থেকে ৪১ জন কূটনীতিককে সরিয়ে নেওয়ার কথা জানায় কানাডা। এই কূটনীতিকদের পরিবারের ৪২ জন সদস্যকেও সরিয়ে নেওয়া হয়। কানাডার বিদেশমন্ত্রী জোলি সাংবাদিক বৈঠকে জানান, নয়াদিল্লির বার্তা পেয়ে বাধ্য হয়েই এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তাঁরা। চণ্ডীগড়, মুম্বই এবং বেঙ্গালুরুতে কানাডার যে কনস্যুলেট রয়েছে, সেগুলির কাজ আপাতত স্থগিত করে দেওয়া কথাও ঘোষণা করেছিলেন। অন্য দিকে, ভারতের বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর ভিসা দেওয়ার কাজ স্থগিত রাখার কারণ হিসাবে জানিয়েছিলেন, খলিস্তানিদের হামলার আশঙ্কায় কানাডার ভারতীয় হাই কমিশন এবং কনস্যুলেটগুলির স্বাভাবিক কার্যকলাপ ব্যাহত হচ্ছে। সে কারণেই এই সিদ্ধান্ত।