ফাইল ছবি
দেশে খাদ্যের ভাঁড়ারে ক্রমশ টান পড়ছে। ফলে বড় ধরনের খাদ্য সঙ্কটের মুখে গোটা দেশ। ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধির মধ্যেই এমন আশঙ্কার কথা জানাল দেশের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। তাদের অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদী সরকারের কৃষক-বিরোধী নীতির জন্যই দেশ এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে। এরই মধ্যে এ দিন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী দেশের বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে আক্রমণ শানিয়ে বলেন, মোদীর উচিত অবিলম্বে ‘জুমলা’ বন্ধ করে আর্থিক সংস্কারে হাত দেওয়া দরকার।
খাদ্য সঞ্চয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে কংগ্রেসের অভিযোগ, দেশের ভাঁড়ারে গত ১৫ বছরের মধ্যে সব চেয়ে কম খাদ্যপণ্যের সঞ্চয় রয়েছে। মাথাপিছু হিসেব ধরলে গত ৫০ বছরে এত কম খাদ্যপণ্য কখনও ভাঁড়ারে থাকেনি। শনিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কিসান কংগ্রেসের প্রধান সুখপাল খৈরা খাদ্য ভান্ডারের করুণ পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে জানান, তিন বিতর্কিত কৃষি আইন প্রত্যাহারের সময় মোদী সরকার কৃষক সংগঠনগুলির জোট, সংযুক্ত কিসান মোর্চাকে প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনও ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নির্ধারণের জন্য আইনি নিশ্চয়তা দেওয়ার কমিটি গঠন করেনি। অবিলম্বে ওই কমিটি গঠনের জন্য মোদী সরকার সক্রিয় হোক বলে দাবি খৈরার।
মোদী সরকারকে কৃষক-বিরোধী বলে উল্লেখ করে কংগ্রেসের ওই কৃষক নেতা এবং কংগ্রেসের মিডিয়া বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মুখপাত্র পবন খেরা অভিযোগ করেন, খাদ্যপণ্যের সঞ্চয় এতটাই কমেছে, যে গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ-সহ অন্তত ১০টি রাজ্যে গমের বরাদ্দ কমিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র সরকার। এ রকম পরিস্থিতি চলতে থাকলে বিপুল সংখ্যক মানুষ খাদ্য সঙ্কটে পড়বেন বলে অভিযোগ করেন তাঁরা। খৈরার অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে কৃষকদের ধানচাষের জন্য জমির পরিমাণ কমানোর কথা বলেছে মোদী সরকার। সেই সরকারের খাদ্য এবং উপভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রী পীযূষ গয়াল এখন রাজ্যগুলিকে ধান উৎপাদন বাড়ানোর জন্য মরিয়া আবেদন করছেন। অথচ সারের অভাব এবং সারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে সঙ্কটে কৃষকেরা। এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে পরিস্থিতি কোথায় পৌঁছেছে, অভিযোগ তাঁর। কোটিপতি বন্ধুদের সাহায্য করার জন্য মোদী সরকার কৃষকদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছে বলেও সরব হন তিনি।
এর মধ্যেই শনিবার এক ফেসবুক পোস্টে মোদী সরকারকে নিশানা করেন রাহুল গান্ধী। ডলারের সঙ্গে টাকার বিনিময়মূল্য প্রায় ৮০-র ঘরে। গোটা দেশের আর্থিক পরিস্থিতি সঙ্কটে। সে কথা উল্লেখ করে মোদীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, অবিলম্বে ‘জুমলার রাজনীতি’ বন্ধ করে আর্থিক সংস্কারে হাত দিন। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে টাকার দামে পতন নিয়ে মোদীর নানা রকম বক্তব্যের উল্লেখ করে রাহুল বলেন, সে সময় মোদী টাকার দাম নিয়ে দীর্ঘ উপদেশ বিলি করতেন। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে মোদী দেশকে ‘দ্বিচারিতার অমৃতকালে’ ঠেলে দিয়েছেন!