Shopian Fake Encounter

পুরস্কারের লোভে জঙ্গি তকমা, খুন ভুয়ো সংঘর্ষে

শোপিয়ানের আদালতে পেশ করা চার্জশিটে পুলিশ জানিয়েছে, বিলাল আহমেদ লোন রাজসাক্ষী হতে রাজি হয়েছেন। ঘটনার বিবরণও দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২১ ০২:৩২
Share:

সেনা বাহিনীর গুলিতে আমশিপোরায় নিহত হন তিন যুবক। ছবি: সংগৃহীত।

পুরস্কার পাওয়ার জন্যই দক্ষিণ কাশ্মীরের শোপিয়ানের আমশিপোরায় তিন যুবককে ভুয়ো সংঘর্ষে খুন করা হয়েছিল বলে জানাল পুলিশ। ওই ঘটনায় সেনার ক্যাপ্টেন ভূপেন্দ্র সিংহ এবং দুই স্থানীয় বাসিন্দা তাবিশ নাজ়ির ও বিলাল আহমেদ লোনের বিরুদ্ধে শোপিয়ানের আদালতে চার্জশিট পেশ করা হয়েছে। তাতে পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) জানিয়েছে, জঙ্গি তকমা দিয়ে তিন যুবককে হত্যা করে ২০ লক্ষ টাকা পুরস্কার হিসেবে পাওয়ার ষড়যন্ত্র করেছিলেন ভূপেন্দ্র ও তাঁর দুই স্থানীয় সহযোগী।

Advertisement

আমশিপোরায় গত বছরের ১৮ জুলাই ইবরার আহমেদ, ইমতিয়াজ় আহমেদ ও ইবরার আহমেদ নামে তিন যুবক বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়। সেনার তরফে দাবি করা হয়, ওই তিন যুবক জঙ্গি দলে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু পরে ওই তিন যুবকের পরিবার দাবি করে, তাঁরা কাজের খোঁজে শোপিয়ানে গিয়েছিলেন। ভুয়ো সংঘর্ষে তাঁদের হত্যা করা হয়েছে। এর পরেই তদন্ত শুরু করে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। নিয়ম মেনে আলাদা তদন্ত শুরু করে সেনাও।

শোপিয়ানের আদালতে পেশ করা চার্জশিটে পুলিশ জানিয়েছে, বিলাল আহমেদ লোন রাজসাক্ষী হতে রাজি হয়েছেন। ঘটনার বিবরণও দিয়েছেন তিনি। সাক্ষী হিসেবে ক্যাপ্টেন সিংহের নেতৃত্বাধীন সেনার দলের সুবেদার গারু রাম, ল্যান্স নায়েক রবি কুমার, জওয়ান অশ্বিনী কুমার ও জওয়ান যোগেশের বক্তব্যও উল্লেখ করেছে পুলিশ।

Advertisement

পুলিশের অভিযোগ, পুরস্কার পাওয়ার জন্যই এই ষড়যন্ত্র করেছিলেন ক্যাপ্টেন ভূপেন্দ্র। সে দিন আমশিপোরায় জঙ্গি গতিবিধির খবর পাওয়া গিয়েছে বলে সেনার একটি দলকে নিয়ে বেরোন তিনি। সঙ্গে ছিল তাবিশ নাজ়ির ও বিলাল আহমেদ লোনও। সেনার দলের অন্য সদস্যেরা জানিয়েছেন, তাঁদের নির্দিষ্ট এলাকা ঘিরে ফেলার নির্দেশ দেন ক্যাপ্টেন। কিন্তু তাঁরা এলাকা ঘিরে ফেলার আগেই গুলির শব্দ শোনেন। পরে ক্যাপ্টেন দাবি করেন, জঙ্গিরা পালানোর চেষ্টা করছিল। তাই তিনি গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছেন।

ইতিমধ্যে সেনার ‘কোর্ট অব এনকোয়্যারি’-ও জানিয়েছে, এ ক্ষেত্রে এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে ‘আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ারস অ্যাক্ট’ (আফস্পা)-র অধীনে দেওয়া ক্ষমতার অপব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। সেনা সূত্রে খবর, আফস্পা-র ক্ষমতা অপব্যবহার ও সেনাপ্রধানের তৈরি কর্তব্যের বিধি না মানার ফলে ‘কোর্ট মার্শাল’ হতে পারে অভিযুক্ত ক্যাপ্টেনের।

প্রাক্তন সেনাপ্রধান জেনারেল শঙ্কর রায়চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘কাশ্মীরের মতো এলাকায় অনেক সময়েই সেনার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগও ওঠে। সব সময়েই প্রথমে কোর্ট অব এনকোয়্যারি গঠন করে অভিযোগের সত্যাসত্য ও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে থাকা প্রমাণ খতিয়ে দেখে সেনা। উপযুক্ত প্রমাণ পাওয়া গেলে সেনা আইন মেনে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হয়। কোর্ট মার্শালে অভিযুক্ত উপযুক্ত আইনি সাহায্য পান।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement