Shivraj Singh Chouhan

শিবরাজ বললেন বিভীষণও দরকার

আজ সকালে ভোপাল রওনা হওয়ার আগে সিন্ধিয়া রাজনাথ সিংহ ও অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেন। দু’দিন আগে মোদী-শাহের সঙ্গে তাঁর ‘গোপন’ বৈঠকের ছবি এখনও প্রকাশ হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২০ ০৪:৪২
Share:

ভোপালের বিজেপি দফতরে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে স্বাগত জানালেন শিবরাজ সিংহ চৌহান।—ছবি পিটিআই।

কিসের করোনা আতঙ্ক? ভোপাল বিমানবন্দরে গিজগিজে ভিড়। বিজেপির নতুন সদস্য জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া নামতেই হুল্লোড়। বিমানবন্দর থেকে বিজেপি দফতর— রাস্তার দু’পাশে বিজেপি সমর্থকদের ভিড়। আর নতুন নেতাকে স্বাগত জানাতে বিজেপি দফতরে হাজির শিবরাজ সিংহ চৌহান।

Advertisement

ঠিক ওই সময়টিতেই সংসদ ভবন চত্বরে হাজির রাহুল গাঁধী। করোনাভাইরাস আর মুখ থুবড়ে পড়া শেয়ার বাজার নিয়ে বলবেন। বিকাল পাঁচটা নাগাদ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতেই প্রশ্ন উঠল সিন্ধিয়া নিয়ে। বারবার এড়িয়ে গিয়েও অবশেষে বলেই ফেললেন মনের কথা। বললেন, ‘‘এত বার জানতে চাইছেন, বলেই ফেলি। এটি আদর্শের লড়াই। ক্লিয়ার কাট। একদিকে কংগ্রেসের আদর্শ, অন্য দিকে বিজেপি-আরএসএসের। জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার আদর্শের কথা জানি। ও আমার সঙ্গে কলেজে ছিল। খুব ভাল চিনি। আসলে রাজনৈতিক ভবিষ্যতের ভয় পেয়ে গিয়েছে। আদর্শ (বুক) পকেটে রেখে আরএসএসের সঙ্গে গেল! বাস্তব হল, ওখানে সম্মান পাবে না। ও বুঝে যাবে। আমার সঙ্গে পুরনো বন্ধুত্ব। কিন্তু ওর মনে যা আছে আর মুখে যা বেরোচ্ছে, তা আলাদা।’’

আর প্রায় একই সময়ে বিজেপি দফতরে পৌঁছে শিবরাজের পাশে দাঁড়িয়ে সিন্ধিয়া বলছেন, ‘‘আমার কাছে আজ অনেক আবেগের দিন। যে দল ও পরিবারে কুড়ি বছর কাটিয়েছি, আমার পরিশ্রম, ঘামের এক এক বিন্দু পড়েছে, সব পিছনে ফেলে আপনাদের হাতে নিজেকে সঁপে দিচ্ছি। আমি ধন্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, অমিত ভাই (শাহ), নড্ডা সাহেবের (জগৎ প্রকাশ) আশীর্বাদ পেয়েছি। তাঁরা আমার জন্য দরজা খুলে দিয়েছেন।’’ এর পরেই শিবরাজের সঙ্গে নিজেকে সমগোত্রে ফেলে সিন্ধিয়া বললেন, ‘‘মধ্যপ্রদেশে সম্ভবত দু’জন নেতা গাড়িতে এসি চালান না। শিবরাজ সিংহ চৌহান ও জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। এই এক ও এক মিলে দুই নয়, এগারো হবে।’’ সদ্য দলে আসা সিন্ধিয়ার এমন তুলনায় অস্বস্তিতে পড়ে শিবরাজ বললেন, ‘‘কমল নাথের লঙ্কা যতক্ষণ জ্বালিয়ে না দিচ্ছি, শান্তিতে বসব না। লঙ্কা দহনে বিভীষণের দরকার আর আমাদের কাছে সিন্ধিয়া আছেন!’’ প্রশ্ন উঠেছে, সদ্য কংগ্রেসত্যাগী সিন্ধিয়াকে কি তা হলে বিভীষণের সঙ্গে তুলনা করলেন শিবরাজ?

Advertisement

আজ সকালে ভোপাল রওনা হওয়ার আগে সিন্ধিয়া রাজনাথ সিংহ ও অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেন। দু’দিন আগে মোদী-শাহের সঙ্গে তাঁর ‘গোপন’ বৈঠকের ছবি এখনও প্রকাশ হয়নি। আজ অমিত সিন্ধিয়ার সঙ্গে নিজের ছবি টুইট করে বললেন, ‘‘আমি নিশ্চিত, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া আসায় মধ্যপ্রদেশের মানুষের সেবার লক্ষ্যে বিজেপি আরও শক্তিশালী হবে।’’ রাজ্যসভার মনোনয়নের শেষ দিন আগামিকাল। বিজেপির হয়ে মনোনয়ন পেশ করবেন সিন্ধিয়া। ভোপালে নিজের জন্য বড় আয়োজনের অনুরোধ আগেই করেছিলেন। অনুগামীরা যে পোস্টার লাগিয়েছেন, তাতে পেল্লাই ছবি সিন্ধিয়ার, মোদী-শাহদের ছোট-ছোট।

যে কথা রাহুল বলছেন প্রকাশ্যে, বিজেপিরও অনেকের সেই মত। সিন্ধিয়ার কাজের ধরনের সঙ্গে বিজেপির অনেক ফারাক। তবু প্রশ্ন হল, মধ্যপ্রদেশের কমল নাথ সরকার বাঁচবে কি? রাহুল আজ এ প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান। কিন্তু তাঁর ঘনিষ্ঠদের অনেকেই চাইছেন, কমল নাথের সরকার পড়ে যাক। বিজেপি ১৬ মার্চ শক্তিপরীক্ষার দাবি জানিয়েছে। কিন্তু অনেক কিছুই নির্ভর করছে, ইস্তফা দেওয়া বিধায়কেরা বিধানসভার স্পিকারের কাছে গিয়ে কী অবস্থান নেন, তার উপরে। শুক্রবার পর্যন্ত সে সময় দিয়েছেন স্পিকার। বেঙ্গালুরুতে সিন্ধিয়া-ঘনিষ্ঠ বিধায়ক-মন্ত্রীদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে আজ কর্নাটকের পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় কমল নাথের দুই শীর্ষ মন্ত্রীর। দিগ্বিজয় সিংহ বলেন, বিজেপি বন্ধক রেখেছে বিধায়কদের। স্পিকারের কাছে সশরীরে এসে ইস্তফা না দিলে আস্থা ভোট হবে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement