উদ্ধব ঠাকরে। —ফাইল চিত্র
অযোধ্যায় রামমন্দিরের ভূমিপুজোর দিনেই নয়া বিতর্কের জন্ম দিল এক সময়ের এনডিএ শরিক শিবসেনা। তাদের দলীয় মুখপত্র ‘সামনা’য় ছাপা একটি বিজ্ঞাপনে ঘিরে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। যার জেরে তীব্র অস্বস্তিতে পড়েছে মহারাষ্ট্রের মহা বিকাশ আঘাড়ি জোটের অন্যতম শরিক কংগ্রেসও।
কী রয়েছে ওই বিতর্কিত বিজ্ঞাপনে? বুধবার ‘সামনা’র সংস্করণে একটি পাতায় বাবরি মসজিদ ধ্বংস করার একটি ছবি ছাপা হয়েছে। তার সঙ্গে রয়েছে প্রয়াত শিবসেনা প্রধান বাল ঠাকরের ছবি। রয়েছে একটি বিবৃতিও। যাতে লেখা, ‘যারা এটা ঘটিয়েছে তাদের জন্য আমি গর্বিত।’ ‘সামনা’য় ওই বিজ্ঞাপনটি দেওয়া হয়েছে শিবসেনার সম্পাদক মিলিন্দ নারভেকরের তরফে। বাল ঠাকরের ছবির পাশাপাশি ছাপা হয়েছে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে এবং তাঁর পুত্র তথা রাজ্যের আর এক মন্ত্রী আদিত্য ঠাকরের ছবিও।
শিবসেনার এই অবস্থান নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছে কংগ্রেস। মহারাষ্ট্রে শিবসেনা এবং এনসিপির সঙ্গে কংগ্রেসের জোট ক্ষমতায় রয়েছে। এ দিন ‘সামনা’য় যে বিজ্ঞাপন ছাপা হয়েছে তা হাত শিবিরের কাছে স্বস্তিদায়ক নয়। যদিও শেষবেলায় পালে হাওয়া টানতে মরিয়া কংগ্রেসও। মঙ্গলবারই প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বলেন, ‘‘দীনবন্ধু রাম নামের সার কথাই হল সারল্য, সাহস, সংযম, ত্যাগ এবং প্রতিশ্রুতি। সকলের মধ্যেই রাম রয়েছেন, রাম রয়েছেন সকলের সঙ্গে। ভগবান রাম ও সীতা মায়ের আশীর্বাদে রামলালা মন্দিরের ভূমিপুজোর অনুষ্ঠান রাষ্ট্রীয় ঐক্য, সৌভ্রাতৃত্ব এবং সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের প্রতীক হয়ে উঠুক।’’
আরও পড়ুন: ‘রামজন্মভূমি মুক্ত হল’, ১৫ অগস্টের সঙ্গে তুলনা টানলেন মোদী
অযোধ্যায় এ দিনের ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য শিবসেনাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তা নিয়ে ক্ষুব্ধ উদ্ধব ঠাকরের দল। তার আঁচ মিলেছে ‘সামনা’-তেও। দলীয় মুখপত্রে দাবি করা হয়েছে, বাবরি মসজিদ ধ্বংসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল শিবসেনা। তবুও রামমন্দিরের ভূমি পূজন অনুষ্ঠানে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তবে সূত্রের খবর দাদরের শিবাজি পার্কের স্মৃতি স্থল থেকে মাটি পাঠানো হয়েছে অযোধ্যায়। ওই স্মৃতি স্থলেই বাল ঠাকরের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
আরও পড়ুন: ‘বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য’, অযোধ্যা নিয়ে উন্মাদনার মধ্যেই বার্তা মমতার
আমন্ত্রণ না পেলেও প্রধানমন্ত্রীকে ওই অনুষ্ঠানের জন্য আগেই শুভেচ্ছা জানিয়েছেন শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত। গত কয়েক দিন ধরেই এ নিয়ে বার্তা দিয়েছে সেনা। শিবসেনা মনে করে, রামের আশীর্বাদ পেলেই দেশ থেকে করোনা সঙ্কট দূর হবে। সেই সঙ্গে লালকৃষ্ণ আডবাণী এবং মুরলীমনোহর জোশীর মতো প্রবীণ বিজেপি নেতাদেরও স্মরণ করা হয়েছে ‘সামনা’য়। বলা হয়েছে, মন্দির নির্মাণের জন্য ওই দুই নেতা যে লড়াই শুরু করেছিলেন এ দিন তার মধুর ফলের সাক্ষী হবেন তাঁরা। এর পর সেনার এ দিনের অবস্থান কংগ্রেসের অস্বস্তি আরও খানিকটা বাড়িয়ে দিল।