শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত।—ছবি সংগৃহীত।
কুর্সির দখল নিয়ে মহারাষ্ট্রে দড়ি টানাটানি অব্যাহত রইল আজও।
সমাধানসূত্র মেলা তো দূর, উল্টে আজ রাজ্যপালের সঙ্গে দু’পক্ষের আলাদা করে সাক্ষাৎ জোটের ভবিষ্যৎ নিয়েই প্রশ্ন তুলে দেয়। এরই মধ্যে সন্ধেয় সুর আরও এক ধাপ চড়িয়ে শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত কংগ্রেস ও এনসিপি-র হাত ধরে সরকার গড়ার সম্ভাবনাও উস্কে দেন। বিজেপি সঞ্জয় রাউতের ওই মন্তব্যকে চাপ বাড়ানোর কৌশল বলে ব্যাখ্যা করলেও, সব মিলিয়ে শিবসেনার অনড় অবস্থানে রীতিমতো অস্বস্তিতে অমিত শাহ-নরেন্দ্র মোদীরা। দু’দলই তলে তলে সংখ্যা বাড়াতে যোগাযোগ শুরু করেছে নির্দল বিধায়কদের সঙ্গে।
আজ সকালে প্রথমে শিবসেনা নেতা দিবাকর রাওতে এবং পরে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী দেবেন্দ্র ফডণবীস রাজ্যপাল ভগৎ সিংহ কোশিয়ারির সঙ্গে দেখা করেন। দু’জনেই ওই সাক্ষাৎকে দীপাবলির পরে শুভেচ্ছা সাক্ষাৎ বলে দাবি করেন। কিন্তু সন্ধ্যায় শিবসেনার সঞ্জয় রাউত এনসিপি ও কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলানোর সম্ভাবনা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘‘সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। রাজনীতিতে কেউই সাধু-সন্ত নয়। কিন্তু শিবসেনা নীতিতে বিশ্বাস করে। আমরা শেষ পর্যন্ত বিজেপির জন্য অপেক্ষা করব। আশা করি বিজেপি আমাদের বিকল্প পথে যেতে বাধ্য করবে না। জোট ভাঙার ভাগীদার হতে চায় না শিবসেনা।’’
রাউতের এই হুমকির পরেও কিন্তু শিবসেনাকে মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়ার প্রশ্নে অনড় বিজেপি। সেনার সাহায্য ছাড়া বিজেপির সরকার গড়া যে অসম্ভব, তা স্পষ্ট হতেই আড়াই বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রিত্বের দাবিতে সরব হয়েছেন উদ্ধব ঠাকরেরা। তাঁদের যুক্তি, লোকসভা ভোটের সময়ে অমিত শাহ ৫০-৫০ সমীকরণ মেনে চলার কথা বলেছিলেন। বিধানসভাতেও সেই সূত্র প্রযোজ্য হোক।
কিন্তু শুরু থেকেই শিবসেনাকে আড়াই বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়তে আপত্তি আছে বিজেপির। তারা বরং উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়তে রাজি। কিন্তু সঞ্জয় রাউতদের মতে, ‘‘দল কোনও ভাবেই মুখ্যমন্ত্রীর পদের দাবি ছাড়তে রাজি নয়। প্রয়োজনে বিকল্প পথ ভাববে দল।’’
রাউত যে বিকল্প পথের কথা বলছেন, তা হল এনসিপি আর কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়া। তবে কার্যক্ষেত্রে সেটা কতটা বাস্তবায়িত হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে শিবসেনার অন্দরমহলেই। বিশেষ করে এনসিপি নেতা শরদ পওয়ার কিংবা কংগ্রেসের রাহুল গাঁধী— দু’দলের নেতৃত্বই শিবসেনাকে সঙ্গে নিয়ে সরকার গড়ার প্রশ্নে বিশেষ আগ্রহী নন। তবু সেনা-এনসিপি সরকার গঠনের প্রচেষ্টা তলে তলে চালু রয়েছে। সেই জোটকে বাইরে থেকে সমর্থন দেবে কংগ্রেস, এমনই আজ দাবি করা হয় শিবসেনা সূত্রে।
টানাপড়েনের এই আবহে নির্দলদের কাছে টানতে তৎপর হয়েছে দুই দলই। দেবেন্দ্র ফডণবীসের দাবি, অন্তত ১৫ জন বিধায়কের সমর্থন বিজেপির পক্ষে রয়েছে। তাঁদের মধ্যে আজ দু’জন নির্দল বিধায়ক প্রকাশ্যে বিজেপিকে সমর্থন করার কথা জানানও। পিছিয়ে নেই উদ্ধবও। শিবসেনা সূত্রে জানানো হয়েছে, আজ একাধিক নির্দল বিধায়কের সঙ্গে বৈঠক করেছেন শিবসেনা প্রধান। যার মধ্যে অন্তত তিন জন শিবসেনাকে সমর্থন করার আশ্বাস দিয়েছেন।