Cap-শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত।
লোকসভায় নাগরিকত্ব বিলের পক্ষে ভোট দিয়েছিল শিবসেনা। রাহুল গাঁধীর গোঁসার পরে রাজ্যসভায় ওয়াক আউট করে বিল পাশে আরও সুবিধেই করে দিল তারা।
সংসদের উচ্চকক্ষে দিনভর আলোচনার পরে রাতে যখনই ভোটাভুটি ঘোষণা হল, সঞ্জয় রাউতের নেতৃত্বে রাজ্যসভা ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন শিবসেনার সাংসদেরা। ফলে গত কাল উদ্ধব ঠাকরের বক্তব্যের পরে বিরোধীদের যে আশা জেগেছিল তাতে জল ঢালল শিবসেনা। বিরোধীরা ভেবেছিলেন, শিবসেনা বিলের বিপক্ষেই ভোট দেবে। কিন্তু সভাকক্ষ ত্যাগ করে পরোক্ষে বিজেপির সুবিধেই করে দিল তারা। কংগ্রেস সেনার অবস্থানে বেজায় খাপ্পা। বিজেপির একাংশের মনে ফের আশা তৈরি হয়েছে, অদূর ভবিষ্যতে আবার সেনার সঙ্গে মিলে সরকার হবে মহারাষ্ট্রে। সেনার প্রবীণ নেতা মনোহর জোশীও যে আশা গত কালই প্রকাশ করেছেন।
লোকসভায় বিলের পক্ষে ভোট দেওয়ার পর সেনার অবস্থানে ফোঁস করে উঠেছিলেন রাহুল গাঁধী। উদ্ধব ঠাকরেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, জোটধর্ম না মানলে কংগ্রেস মহারাষ্ট্র সরকার থেকে সমর্থন তুলে নেবে। এ দিনের অবস্থানেও কংগ্রেস যে খুশি, এমন নয়। তবু শিবসেনা কংগ্রেসকে বোঝানোর চেষ্টা করছে, রাতারাতি একেবারে বিপরীত মেরুতে হাঁটা যায় না। কোনও কিছু বদলও করতে হয় ধাপে ধাপে। রাজ্যসভা থেকে বেরিয়ে সঞ্জয় রাউত বলেন, ‘‘আমরা এই বিলের ভোটাভুটি বয়কট করেছি। যে সব প্রশ্নের উত্তর আমরা চেয়েছিলাম, সরকারের কাছ থেকে তার জবাব পাইনি।’’
রাজনীতিকদের মতে, এটি নিছক বাহানা। সে কারণে রাজ্যসভাতেই সেনাকে খোঁচা দিয়ে অমিত শাহ বলেন, ‘‘ভেবে আশ্চর্য হই, ক্ষমতার জন্য লোকে কেমন রং বদলায়! শিবসেনা লোকসভায় বিলকে সমর্থন করেছে। মহারাষ্ট্রের জনতা জানতে চায়, রাতে এমন কী হল যে আজ অবস্থান বদলাতে হল?’’ যদিও তার আগে রাজ্যসভায় আজ চোখা আক্রমণ করে রাউত বলেন, ‘‘জাতীয়তাবাদ কিংবা হিন্দুত্বের সার্টিফিকেট আমাদের কারও থেকে নেওয়ার প্রয়োজন নেই। যে স্কুলে আপনারা পড়েন, সেখানকার হেডমাস্টার আমরা। বালসাহেব তাঁর হেডমাস্টার ছিলেন। অটলবিহারী বাজপেয়ী, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়দেরও সম্মান করি।’’
এ সব দেখে বিজেপির অনেক সাংসদের মত, খেলা তো সবে শুরু হল। দলের সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর বক্তব্য, ‘‘শিবসেনা যে হিন্দুত্বেই আটকে থাকল, সেটি সুলক্ষণ। অন্তত তারা বিপক্ষে ভোট দেয়নি। বিজেপির উচিত তাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করা। আড়াই বছরের মুখ্যমন্ত্রিত্ব ভাগ নিয়েও আলোচনা করা উচিত।’’