নাগরিক সংশোধনী বিল নিয়ে কেন্দ্রকে তোপ শিবসেনার। গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি সময়ের বন্ধুত্বে ছেদ পড়েছে আগেই। এ বার নাগরিক সংশোধনী বিল (সিএবি) নিয়েও বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণে শান দিল শিবসেনা। তাদের অভিযোগ, শুধুমাত্র হিন্দু অনুপ্রবেশকারীদের নাগরিকত্ব দিয়ে ‘ধর্মযুদ্ধে’ ইন্ধন জোগাচ্ছে মোদী সরকার। হিন্দু ও মুসলিম, এই দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে অদৃশ্য বিভাজন তৈরির চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
সোমবারই লোকসভায় বিতর্কিত নাগরিক সংশোধনী বিল পেশ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তার আগে এ দিন দলের মুখপত্র ‘সামনা’য় প্রকাশিত সম্পাদকীয়তে ওই বিলের তীব্র সমালোচনা করে শিবসেনা। বলা হয়, ‘নাগরিক সংশোধনী বিলের আড়ালে আসলে ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি চলছে। এই বিল জনস্বার্থের পরিপন্থী।’
বেছে বেছে শুধু হিন্দু ও অমুসলিম অনুপ্রবেশকারী নাগরিকত্ব দেওয়া নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয় ওই প্রতিবেদনে। বলা হয়, ‘এটা সত্যি যে ভারত ছাড়া হিন্দুদের আর কোনও দেশ নেই। কিন্তু বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে থেকে বেছে বেছে খালি হিন্দুদের নাগরিকত্ব দিলে, তা কি ধর্মযুদ্ধে ইন্ধন জোগানো নয়?’
আরও পড়ুন: বিতর্ক সঙ্গে নিয়েই লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশ অমিত শাহের
সার্জিক্যাল স্ট্রাইক এবং বালাকোট প্রসঙ্গ টেনে এনেও মোদী সরকারকে একহাত নেয় শিবসেনা। বলা হয়, ‘প্রধানমন্ত্রী তো ইতিমধ্যেই দেখিয়েছেন যে, উনি থাকলে অনেক কিছুই সম্ভব। অনুপ্রবেশকারী রুখতেও এমন সাহসিকতা দেখাচ্ছেন না কেন? তা হলে তো নিজেদের দেশ ছেড়ে কাউকে আসতেই হয় না। আর আমাদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাও আরও মজবুত হয়।’’ নাগরিকত্ব দেওয়ার বদলে সমস্ত বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো উচিত বলেও মন্তব্য করে শিবসেনা।
আরও পড়ুন: কর্নাটকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখছে বিজেপি, হালে পানি পেল না কংগ্রেস-জেডিএস
ধর্মীয় নিপীড়ণের জেরে পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে এ দেশে প্রবেশকারী হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি ও খ্রিস্টান জনগোষ্ঠীকে ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে নাগরিক সংশোধনী বিলে, যা নিয়ে বরাবর আপত্তি তুলে আসছে বিরোধীরা। এই বিল ভারতের সংবিধান, ধর্মনিরপেক্ষ ঐতিহ্যের পরিপন্থী বলে দাবি তাদের।