বিয়েতে ফাঁস হবে মিথ্যে, বলেছিলেন শিনা

মিডিয়া ব্যারন পিটার মুখোপাধ্যায়ের ছেলে রাহুলের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হলে মায়ের বলা মিথ্যেগুলো ফাঁস হয়ে যাবে— ছোটবেলার বান্ধবীকে ই-মেলে এমনই লিখেছিলেন শিনা বরা। সিবিআইয়ের সাম্প্রতিক চার্জশিট থেকে এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৩:১৩
Share:

মিডিয়া ব্যারন পিটার মুখোপাধ্যায়ের ছেলে রাহুলের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হলে মায়ের বলা মিথ্যেগুলো ফাঁস হয়ে যাবে— ছোটবেলার বান্ধবীকে ই-মেলে এমনই লিখেছিলেন শিনা বরা। সিবিআইয়ের সাম্প্রতিক চার্জশিট থেকে এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে।

Advertisement

শিনার সেই বান্ধবীর নাম সঞ্জনা রক্তিম। দু’দিন আগে শিনা হত্যা মামলার নয়া চার্জশিট জমা দিয়েছে সিবিআই। তাতে ইন্দ্রাণীর স্বামী পিটারের বিরুদ্ধে সরাসরি খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে। সঞ্জনা সিবিআইকে জানিয়েছেন, ২০০২-এ শিনা তাঁকে খবরের কাগজের একটি কাটিং দেখিয়েছিলেন। তাতে ইন্দ্রাণী ও পিটারের ছবি-সহ বিয়ের খবর ছিল। সঞ্জনার কথায়, ‘‘শিনা কাঁদতে কাঁদতে বলেছিল মিখাইল আর ও জানে যে, ইন্দ্রাণীই ওদের মা।’’ যদিও ইন্দ্রাণী সর্বত্র বলে বেড়াতেন শিনা আর মিখাইল তাঁর ভাই-বোন। শিনা রাহুলের সঙ্গে সম্পর্কের কথা ২০১০ সালে সঞ্জনা ও তাঁর স্বামীকে জানিয়েছিলেন। ইন্দ্রাণী যে ওই সম্পর্কের ঘোর বিরোধী, জানিয়েছিলেন সেই কথাও।

সিবিআইয়ের চার্জশিটে সঞ্জনার বক্তব্য তুলে ধরে বলা হয়েছে, ‘‘শিনার সঙ্গে রাহুলের বিয়ে হলে মুম্বইয়ে ওদের পরিচিত মহলে জানাজানি হয়ে যেত যে, শিনা ইন্দ্রাণীর বোন নয়, মেয়ে। যার ফলে ইন্দ্রাণীকে যথেষ্ট বিপত্তির মধ্যে পড়তে হতো।’’

Advertisement

২০০৯-এর ২৬ অক্টোবর একটি ই-মেলে সঞ্জনাকে শিনা লিখেছিলেন, ‘‘মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। মা পাল্টাবে না, আমি বুঝে গিয়েছি। আমাদের সম্পর্ক ভাল করার জন্য মা কিছু করেননি। বিশেষত দিল্লির ঘটনার পরে সেটা আর ভাবতেও পারছি না। এখন আবার মা চেষ্টা করছে, যাতে আমার চাকরিটা যায়। ওকে আমি ক্ষমা করতে পারব না।’’ দিল্লির কোন ঘটনা? তার ব্যাখ্যা পাওয়া যাচ্ছে ওই বছরেরই ২২ জুন সঞ্জনাকে পাঠানো শিনার অন্য একটি ই-মেলে।

চার্জশিটে রয়েছে, শিনা সেই সময় তাঁর শৈশবের বান্ধবীকে জানিয়েছিলেন, ইন্দ্রাণী তাঁকে ভুল ওষুধ খাইয়েছেন। তাই দিল্লির হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে তাঁকে। সঞ্জনাকে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘অনেক নাটক হয়েছে। আমার কাছে ফোন নেই। দেখা হলে সব বলব।’’ এর কিছু দিন পরে সঞ্জনাকে ফোন করে শিনা জানান, ইন্দ্রাণী তাঁকে বেঙ্গালুরু পাঠিয়ে দিয়েছেন। ২০০৯ সালেরই ২৬ অগস্ট শিনা ফের ই-মেলে জানান, ইন্দ্রাণী তাঁর চাকরি যাওয়ার বন্দোবস্ত করছেন।

সঞ্জনা জানিয়েছেন, শিনা চট করে মেজাজ হারানোর মেয়ে ছিলেন না। শিনা কখনও কোনও মাদক নিতেন বলেও বিশ্বাস করেন না তিনি। সিবিআইকে সঞ্জনা জানিয়েছেন, ২০১২ সালের ২৪-২৫ তারিখ নাগাদ শিনার মোবাইল থেকে মেসেজ এসেছিল তাঁর কাছে। সিবিআইয়ের দাবি, ২০১২ সালের ২৪ এপ্রিলই ইন্দ্রাণী বাকিদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে শিনাকে খুন করেন এবং তাঁর দেহ রায়গড়ের জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে মাটিতে পুঁতে দেন।

ওই দিনেই শিনার নম্বর থেকে মেসেজ পান সঞ্জনা। শিনার বয়ানে তাতে লেখা ছিল, রাহুলের সঙ্গে তাঁর ব্রেক আপ হয়ে গিয়েছে। অন্য এক জনের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। ফেসবুকে তাঁকে (শিনা) আপাতত কিছু দিন পাওয়া যাবে না। মোবাইল নম্বরও পাল্টে ফেলছেন তিনি। সেই নম্বর সঞ্জনা জানতে পারবেন। কিন্তু তিনি যেন কোনও ভাবেই তা রাহুলকে না দেন। যদিও রাহুল সেই সময়ে শিনার উধাও হয়ে যাওয়া নিয়ে সঞ্জনাকে ফোন করেছিলেন। সঞ্জনাও শিনাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চালিয়েছিলেন। শেষমেশ গত

বছর অগস্টে শিনা খুনের খবর প্রকাশ্যে আসার পরে টিভিতে বন্ধুর পরিণতি জানতে পারেন সঞ্জনা। শিনা-ইন্দ্রাণীর মধ্যে সম্পর্ক যে ঠিকঠাক ছিল না, তা মুম্বই পুলিশকে ফোনে জানান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement