শত্রুঘ্ন সিন্হা
গোটা ‘হিন্দুস্তান’ ‘খামোশ’। কথা বলছেন এখন এক জনই। কিন্তু ২০১৯ সালে মানুষ নীরবতা ভেঙে কী বলে উঠবে, কে জানে!
এই হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন চিত্রতারকা বিজেপি নেতা শত্রুঘ্ন সিন্হা। আজ তাঁর বাসভবনের আড্ডায় নরেন্দ্র মোদীর নাম উচ্চারণ করেননি ‘শটগান’। কিন্তু বুঝতে অসুবিধে নেই, তাঁর আক্রমণের লক্ষ্য প্রধানমন্ত্রীই!
বিহারের পটনা সাহিবের লোকসভা সদস্য এই কায়স্থ নেতা ঝরঝরে বাংলায় বললেন, ‘‘অনেকেই ভাবছেন আমি দলবিরোধী হয়ে উঠেছি। (আসলে) আমি দলের ভালই চাইছি। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার কথা বলছি। এ সব কি দলবিরোধী কার্যকলাপ?’’
শত্রুঘ্নের মতে, মোদী নিজেই বলেছেন, দলের চেয়েও দেশের স্বার্থ বড়। তা হলে যশবন্ত সিন্হা যখন অরুণ জেটলির সমালোচনা করছেন, তখন অন্যরা তাঁকেই আক্রমণ করছেন কেন? যশবন্ত এবং অরুণ শৌরির মতো বিক্ষুব্ধ নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক শত্রুঘ্নের। লালকৃষ্ণ আডবাণীর বাসভবনেও প্রায়ই যাচ্ছেন তিনি। অভিনেত্রী কন্যা সোনাক্ষীও আসেন আডবাণীর মেয়ে প্রতিভার সঙ্গে আড্ডা দিতে। সম্প্রতি আডবাণীর ৯০ বছরের জন্মদিনেও সিন্হা পরিবারের উপস্থিতি ছিল নজরকাড়া।
শত্রুঘ্ন বলেন, ‘‘আমি ’৭৬ সালের ‘কালীচরণ’, ’৭৮ সালের ‘বিশ্বনাথ’— ২০১৭ সালে বুঝেছি, আইনস্টাইন ঠিক বলেছিলেন। রাজনীতি বিষয়টা পদার্থবিজ্ঞানের চেয়ে কঠিন। ওঁকে নকল করে বলছি, ফিল্মের চেয়েও রাজনীতি কঠিন। এখানে অনেকে যা বলে, তা করে না। যা করে, তা বলে না। আমি সোজা কথা সোজা ভাবে বলছি।’’ শত্রুঘ্নের মতে, এখনও ‘শুভবুদ্ধির উদয়’ হলে আডবাণীকেই সভাপতি করবে বিজেপি। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপিতে আমাকে এনেছিলেন আডবাণী। আশীর্বাদ ছিল অটলবিহারী বাজপেয়ীর। তখনও আজকের মতো ‘ওয়ান ম্যান শো’ আর ‘টু মেন আর্মি’ হয়ে ওঠেনি বিজেপি।’’
সম্প্রতি জেডিইউ থেকে সাসপেন্ড হওয়া আলি আনোয়ার আনসারির মতো বিদ্রোহী নেতার বই প্রকাশের অনুষ্ঠানে সীতারাম ইয়েচুরি ও শরদ যাদবের সঙ্গে উপস্থিত থেকে বিতর্ক বাড়িয়েছেন ‘শত্রু’। বলেছেন, ‘‘এক জন উকিল যদি অর্থনীতির কথা বলতে পারেন, এক জন চা-ওয়ালা যদি দেশের সর্বোচ্চ পদে বসতে পারেন, তবে আমিও জিএসটি ও নোট বাতিল নিয়ে কথা বলতে পারি।’’ টুইটারেও আজ লিখেছেন, ‘গুজরাতে এত নেতাকে পাঠিয়ে আমরা কি নিজেদের আতঙ্কিত, মরিয়া চেহারাটাই তুলে ধরছি না? সচরাচর এ ধরনের কৌশল যে খাটে না, দিল্লি আর বিহারেই তা দেখা গিয়েছে।’
আরও পড়ুন: রাহুলের ধর্মও অস্ত্র বিজেপির
আপনার ভয় নেই? যদি দল থেকে তাড়িয়ে দেয়? জবাব এল, ‘‘গণতন্ত্রে ‘মন কি বাত’ বলার অধিকার সবার। তবে ওটা তো প্রধানমন্ত্রীর কপিরাইট। তাই আমি যা বলছি, তাকে বলুন ‘দিল কি বাত’!’’
ওঠার সময়ে শত্রুঘ্ন বললেন, ‘‘গৌতম ঘোষের ছবি করেছি। ‘মেরে অপনে’ করতে তপন সিংহের ‘আপনজন’ দেখেছিলাম বোধ হয় পঞ্চাশ বার। সে দিন বুঝেছিলাম, বাঙালির মস্তিষ্ক ও হৃদয়— দু’টিই শ্রদ্ধেয়। আজ দেশে অসহিষ্ণুতার আবহে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলাকে জানাই সালাম। তবে আপনাদের জামাইবাবু কেন চুপ বলুন তো? (কে?) অমিতাভ বচ্চন! এত টুইট করেন, ‘পদ্মাবতী’ নিয়ে বাংলার জামাইকে প্লিজ একটা টুইট করতে বলুন।’’