প্রবল বৃষ্টির মধ্যেই নির্বাচনী সভায় বক্তৃতা রাখছেন শরদ পাওয়ার। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত
আশি বছর বয়স তাঁর। শরীর অশক্ত। অথচ তুমুল বৃষ্টিতে যখন সবাই মাথা গোঁজার আড়াল খুঁজছে, নির্বাচনী প্রচারের মঞ্চে অবিচল দাঁড়িয়ে রইলেন শরদ পওয়ার। দলীয় সমর্থকদের উদ্দেশে বললেন, ‘‘ভুল হয়েছিল। ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছি।’’
যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে এনসিপি প্রধানের এই জেদকে কুর্নিশ জানাচ্ছে দল। শুক্রবার সাতারার প্রচারসভার ছবিটা সামনে আসতেই নেটিজেনরাও ভেসে গিয়েছে আবেগের জোয়ারে। কেউ বলছেন ‘ফাইটার’, কেউ আবার একধাপ এগিয়ে বলছেন, এই ভাবমূর্তিই সোনা ফলাবে ভোটে।
মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বৃহস্পতিবার কটাক্ষ করেন শরদ পওয়ারকে। মোদীর বক্তব্য ছিল,পওয়ার লোকসভা ভোটে লড়াই করার সাহসটুকুও দেখাতে পারেননি। শুক্রবার সেই নির্বচানী কেন্দ্রেই তুমুল বৃষ্টির মধ্যেই এক প্রচারসভায় দাঁড়িয়ে শরদ পওয়ার বললেন, ‘‘হ্যাঁ, গত লোকসভা কেন্দ্রে দলের শক্ত ঘাঁটিতে প্রার্থী বাছাই ভুল হয়েছে।’’
আরও পড়ুন:বিশ্বব্যাঙ্ক থেকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, সবার হিসেবেই ভারতের সম্ভাব্য বৃদ্ধির হারে নাটকীয় পতন
আরও পড়ুন: রোগিণীকে অজ্ঞান করে ধর্ষণ, নিজের চালেই চার বছর পর গ্রেফতার চিকিৎসক
লড়াইয়ের ময়দানে তাঁর অদম্য জেদ আর অকুতোভয় মেজাজ দলকে অনেকটা অক্সিজেন দিল। কয়েক হাজার কর্মীকে উজ্জীবিত করতে পওয়ার বললেন, ‘‘ভুল করলে স্বীকার করতে হয়। আমিও জনসমক্ষে বলছি, আমার প্রার্থী বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত ঠিক হয়নি এখানে। তবে সেই ভুল শুধরে নিতে পেরে আমি খুশি। সাতারার মানুষ চেয়ে আছেন ২১ অক্টোবরের দিকে।’’
গত লোকসভা ভোটে শিবাজির বংশধর উদয়নরাজে ভোঁসলে এনসিপি-র টিকিটে দাঁড়ান সাতারা লোকসভা কেন্দ্র থেকে। জেতেনও তিনি। কিন্তু মহারাষ্ট্র বিধানসভা ভোটের ঠিক আগেই, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি গেরুয়া শিবিরে ভিড়ে যান উদয়নরাজে। উদয়নরাজেকে টিকিট দেওয়া যে ঠিক হয়নি, সে কথা মেনে নিতে দ্বিধা করেননি প্রবীণ এনসিপি নেতা।
তুমুল বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেও সভা চলিয়ে যাচ্ছেন পওয়ার-এই ছবিটা টুইটার, ফেসবুকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকেন। নেটিজেদেরই একজন টুইট করে বলেন, ‘‘এই উদ্যমই পথ দেখাবে এনসিপিকে। হ্যাটস অফ পওয়ার সাহেব।’’ অন্য এক জন টুইটারে লেখেন, ‘‘লড়াইয়ের এই সাহস মহারাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি প্রজন্মের কাছে শিক্ষনীয় হয়ে থাকবে।’’
সাতারায় ভোট আগামী সোমবার। এনসিপির তরফে প্রার্থী হিসেবে শ্রীনিবাস পাতিলের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। ‘পওয়ার-টনিক’ কতটা জমি পুনরুদ্ধার করতে পারল জানতে অপেক্ষা করতে হবে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত।