ছবি: পিটিআই।
হিন্দু শবযাত্রাকে রাস্তা ছেড়ে দিয়ে অনেকেরই প্রশংসা কুড়িয়ে নিলেন শাহিন বাগের বিক্ষোভকারীরা।
৫০ দিনেরও বেশি সময় ধরে রাস্তা আটকে বিক্ষোভ। স্থানীয়দের অনেকেরই ক্ষোভ ছিল শাহিন বাগের অবস্থানকে ঘিরে। আর সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন(সিএএ), এনআরসি-র বিরুদ্ধে এই অবস্থান-বিক্ষোভ নিয়ে দিল্লিতে ভোটের মুখে সমালোচনা উচ্চগ্রামে নিয়ে গিয়েছিল বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের কোনও নেতা ‘গালি মারো’-র দাওয়াই দিচ্ছিলেন তো কেউ অভিযোগ আনছিলেন, বিক্ষোভকারীরা ঘরে ঢুকে খুন, ধর্ষণও করতে পারে। দিল্লিতে ক্ষমতায় এলে এক ঘণ্টার মধ্যে শাহিন বাগের বিক্ষোভ-অবস্থান তুলে দেবেন বলেও আগাম জানিয়ে রেখেছিলেন বিজেপির নেতারা।
এই প্রেক্ষাপটেই রবিবার নজির গড়ল শাহিন বাগ। বিক্ষোভস্থলের কাছেই এ দিন পৌঁছেছিল হিন্দুদের একটি শবযাত্রা। তা পৌঁছনোর পরেই রাস্তা খুলে দিয়ে শবযাত্রাকে জায়গা করে দেন বিক্ষোভকারীরা। এই ঘটনাকে অবশ্য অতি স্বাভাবিক বলেই মনে করছেন শাহিন বাগের বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের এক জনের কথায়, ‘‘আমরা সব সম্প্রদায়কেই সম্মান করি। ফলে হিন্দুদের শবযাত্রার জন্য রাস্তা খুলে দিয়ে নতুন কিছু করিনি। এর আগেও আমরা বাস ও অ্যাম্বুল্যান্সকে যেতে দিয়েছি।’’
আরও পড়ুন: মোদীর কেন্দ্রে পৌঁছে সঙ্ঘকে নিশানা প্রিয়ঙ্কার
বিজেপি সাংসদ অনুরাগ ঠাকুর কিংবা প্রবেশ বর্মাদের বিতর্কিত মন্তব্যগুলিই শুধু নয়, রাস্তা খোলার দাবি কিংবা বিক্ষোভ-অবস্থানের বিরোধিতা করার নামে হিংসারও সাক্ষী থেকেছে শাহিন বাগ। এ মাসের শুরুতেই দিল্লি-নয়ডা সীমান্তের একটি গ্রামের বাসিন্দা কপিল গুজ্জর বিক্ষোভস্থলে পৌঁছে শূন্যে গুলি ছোড়ে। সংবাদমাধ্যমের সামনে সে মন্তব্য করেছিল, ‘‘আর কেউ নয়, এ দেশে হিন্দুরা যা চাইবে তা-ই পাবে।’’ তার দাবি ছিল, বিক্ষোভকারীদের উপর সে বিরক্ত। কারণ, দীর্ঘ দিন ধরে রাস্তা বন্ধ থাকায় বিরাট যানজট হচ্ছে। তার বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান রয়েছে। এই যানজটের মধ্যে বাজার করতে যেতে তার খুবই অসুবিধা হচ্ছে। এই অবস্থাতেও অবশ্য শাহিন বাগের বিক্ষোভকারীদের ভিতর থেকে হিংসার কোনও পাল্টা বিবৃতি শোনা যায়নি। বরং শুরু থেকে এখন পর্যন্ত সব ধর্মকে সামনে রেখে এগোনোর কথা বলে যাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা।
আর আজ হিন্দুদের শবযাত্রাকে জায়গা করে দিয়ে সেই ভাবনাকেই আরও জোরালো করে তুলেছেন তাঁরা।