ছবি: পিটিআই।
নবীন বনাম প্রবীণের দ্বন্দ্ব সামলাতেই জেরবার কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। হরিয়ানায় অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব মেটানোর চেষ্টা হয় তো মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানে তা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।
সামনেই হরিয়ানা বিধানসভার ভোট। তার আগে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটাতে আজ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিংহ হুডাকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ঘোষণা করে দিল কংগ্রেস। প্রকাশ্যে বলা না হলেও স্পষ্ট, এই জাঠ নেতাকেই মুখ্যমন্ত্রীর মুখ হিসেবে সামনে রেখে কংগ্রেস ভোটে নামবে। একই সঙ্গে হুডার সঙ্গে যাঁর প্রধান বিরোধ ছিল সেই তরুণ নেতা অশোক তানোয়ারকে সরিয়ে দলিত নেত্রী কুমারী শৈলজাকে প্রদেশ কংগ্রেসের সভানেত্রী করে দেওয়া হল।
ছাত্র, যুব কংগ্রেস থেকে উঠে আসা অশোক তানোয়ার ‘টিম রাহুল’-এর সদস্য হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু তানোয়ারকে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি করা হলেও হুডার মতো প্রবীণ নেতারা তাঁকে কখনও স্বস্তিতে থাকতে দেননি।
সনিয়া গাঁধীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত শৈলজাকে সংগঠনের দায়িত্ব দিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্বের আশা, হুডা-শৈলজা জুটি রাজ্যের জাঠ ও দলিত ভোটব্যাঙ্ককে সদর্থক বার্তা দিতে পারবেন। কংগ্রেসে একমাত্র হরিয়ানাতেই কোনও মহিলা রাজ্য নেতৃত্বের শীর্ষ পদে বসলেন।
হুডা কার্যত দল ছাড়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। তানোয়ারকে উপেক্ষা করে নিজের অনুগামীদের নিয়ে কমিটিও গঠন করে ফেলেছিলেন। জনসভা করে দাবি করেছিলেন, কংগ্রেস ভুল পথে চলছে। এআইসিসি-তে হরিয়ানায় ভারপ্রাপ্ত নেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, ‘‘ও সব এখন অতীত। এখন ওঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। উনি কংগ্রেসকে সঠিক পথে নিয়ে আসবেন।’’
হরিয়ানায় নবীন বনাম প্রবীণে কার্যত প্রবীণেরা জিতে গেলেও, মধ্যপ্রদেশে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এখনও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি কমল নাথ রাজ্যে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদেও রয়েছেন। কিন্তু সিন্ধিয়া সভাপতির পদ চাইছেন। রাজ্যের মন্ত্রী উমঙ্গ সিঙ্ঘার অভিযোগ তুলেছিলেন, কমল নাথ মুখ্যমন্ত্রীর আসনে থাকলেও আসলে পিছন থেকে আর এক প্রবীণ নেতা দিগ্বিজয় সিংহই সরকার চালাচ্ছেন। আজ কমল-দিগ্বিজয় শিবিরকে চাপে ফেলতে সে দিকে আঙুল তুলে সিন্ধিয়া বলেন, ‘‘আমরা ১৫ বছর পরে মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতায় এসেছি। কমল নাথের উচিত উমঙ্গের কথা শোনা এবং এর তদন্ত করা।’’ কমল নাথ অবশ্য বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, মুখ্যমন্ত্রী কে, তা নিয়ে কোনও বিভ্রান্তি নেই। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আমিই সরকার চালাই। আমি নিজের দায়িত্ব পালনে সক্ষম।’’
রাজস্থানেও নবীন বনাম প্রবীণ বিরোধ থামছে না। সেখানে আবার প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি পদে রয়েছেন তরুণ নেতা, উপ-মুখ্যমন্ত্রী সচিন পাইলট। মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতের সঙ্গে তাঁর বিরোধের মধ্যে গহলৌত শিবির দাবি তুলেছে, এক ব্যক্তি, এক পদ নিয়ম চালু হোক। যিনি উপ-মুখ্যমন্ত্রী, তিনিই কেন প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি হবেন।