গত অর্থ বর্ষে মোট ২১৭২ কোটি টাকা এই অজানা সূত্র থেকে সংগ্রহ করেছে সাতটি রাজনৈতিক দল। ফাইল চিত্র।
কোটি কোটি টাকা জমা পড়েছে রাজনৈতিক দলের তহবিলে। অথচ সেই টাকা কোথা থেকে এসেছে, কারা দিচ্ছেন তার কোনও উল্লেখ নেই! গত ২০২১ থেকে ২০২২ সালের এমন ‘অজানা’ দান থেকেই দু’হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থ সংগ্রহ করেছে দেশের ৭টি রাজনৈতিক দল। বিভিন্ন নির্বাচনী কাজে বা দলের প্রয়োজনে সেই অর্থ ব্যয় করা হয়েছে। অর্থ সাহায্য পেয়ে উপকৃতই হয়েছে তারা। কিন্তু কারা সেই রাজনৈতিক দলগুলির উপকারী বন্ধু, তার হিসাব নেই রেকর্ডের খাতায়। একটি অসরকারি সংগঠনের সাম্প্রতিক রিপোর্টে প্রকাশিত হয়েছে এই তথ্য। তারা জানিয়েছে, অজানা বন্ধুদের থেকে উপকৃত এই সাত রাজনৈতিক দলের তালিকায় যেমন কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি রয়েছে। তেমনই রয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএমের মতো দলগুলিও। তবে অদ্ভুত ভাবে ওই ২ হাজার কোটির হিসাবে নাম নেই আম আদমি পার্টির। যাদের বিরুদ্ধে সম্প্রতিই মদের ব্যবসার লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে টাকা তোলার অভিযোগ আনা হয়েছে। নাম নেই উত্তরপ্রদেশের পূর্বতন শাসকদল সমাজবাদী পার্টি, বিহারের ক্ষমতাসীন জেডিইউ বা লালুর দল আরজেডিরও। এমনকি, দক্ষিণ ভারতের শাসক দল ডিএমকে বা বিরোধী এআইএডিএমকের নামও নেই এই তালিকায়।
অসরকারি সংস্থা এআরডি প্রকাশ করেছে এই রিপোর্ট। তারা জানিয়েছে, গত অর্থ বর্ষে মোট ২১৭২ কোটি টাকা এই অজানা সূত্র থেকে সংগ্রহ করেছে ৭টি রাজনৈতিক দল। তারা কারা? রিপোর্ট বলছে এই ৭ রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিজেপি, কংগ্রেস তৃণমূল, সিপিআই (এম) ছাড়াও রয়েছে সিপিআই, এনসিপি, এনপিপি। এই ৭ দলের মোট আয়ের ৬৬ শতাংশই এসেছে অজানা সূত্র থেকে। আর এই ২১৭২ কোটি টাকার অধিকাংশই, প্রায় ১৮১১ কোটি ৯৪ লক্ষ টাকা, এসেছে ইলেক্টোরাল বন্ড মারফত।
এআরডি জানিয়েছে, এই রিপোর্ট তারা তৈরি করেছে রাজনৈতিক দলগুলির দেওয়া বার্ষিক অডিট রিপোর্ট থেকে। যেখানে আয়ের অজানা সূত্রের কথা উল্লেখ করেছে রাজনৈতিক দলগুলিই। অডিট রিপোর্টে উল্লেখ করা ওই অজানা সূত্র যেমন ইলেক্টোরাল বন্ড হতে পারে, তেমনই কুপন বিক্রি, ত্রাণের টাকা, স্বেচ্ছায় দানের অর্থও হতে পারে। এআরডি জানিয়েছে, বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, রাজনৈতিক দলগুলিকে যদি কেউ ২০ হাজার টাকার কম অর্থ দান করেন, তবে তার সূত্র জানানো বাধ্যতামূলক নয়। একই সঙ্গে ইলেক্টোরাল বন্ডের মাধ্যমে আসা অর্থেরও হিসাব দিতে হয় না রাজনৈতিক দলগুলিকে। সেই হিসাবে এই ৭ রাজনৈতিক দলের ৬৬ শতাংশ অর্থের খোঁজ পাওয়া সম্ভবও নয়।