প্রতীকী ছবি।
করোনার টিকাকরণের গতি বাড়ছে সারা বিশ্বে। অথচ টান পড়ছে টিকা তৈরির কাঁচামালে। এ নিয়ে বিশ্ব ব্যাঙ্কের একটি প্যানেলে একযোগে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন সিরাম ইনস্টিটিউটের সিইও আদার পুনাওয়ালা এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু)মুখ্য বিজ্ঞানী
সৌম্যা স্বামীনাথন।
অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার কোভিশিল্ড এবং নোভাভ্যাক্সের টিকা তৈরির বরাত পেয়েছে বিশ্বের সব চেয়ে বেশি টিকার উৎপাদক সংস্থা সিরাম। পুনাওয়ালার অভিযোগ, আমেরিকার একটি আইনের দৌলতে সে দেশ থেকে ব্যাগ এবং ফিল্টার-সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপকরণের রফতানি আটকে যাচ্ছে। অন্য দিকে স্বামীনাথন জানিয়েছেন, ভায়াল, কাচ, প্লাস্টিক বা স্টপারের পর্যাপ্ত সরবরাহ নেই। এর ফল ভুগতে হচ্ছে টিকা উৎপাদক সংস্থাগুলিকে। গত দু’মাসে ৫১টি দেশে সিরাম ৯ কোটি ডোজ় টিকা সরবরাহ করেছে বলে জানিয়ে পুনাওয়ালা বলেন, ‘‘নোভাভ্যাক্সের টিকার অন্যতম বড় উৎপাদক আমরা, এর জন্য আমাদের কিছু উপকরণ দরকার আমেরিকা থেকে। আমরা সারা বিশ্বের টিকা উৎপাদনের ক্ষমতা বাড়ানোর কথা বলছি, কিন্তু এই সমস্ত কাঁচামাল জোগানের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। তা নিয়ে এখনও কেউ কিছু করতে পারেনি।’’
বিশেষজ্ঞদের মতে, টিকার কাঁচামাল নিয়ে এই উদ্বেগের শুরু হয় মূলত জো বাইডেন প্রশাসনের একটি সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের পরে। কাঁচামালের অভাবে সে দেশে ফাইজ়ারের টিকার উৎপাদন ধাক্কা খাচ্ছিল। এই অবস্থায় টিকা, গ্লাভস ও মাস্ক তৈরি এবং করোনা পরীক্ষায় যুদ্ধকালীন গতি আনতে উৎপাদন সংক্রান্ত প্রতিরক্ষা আইন জারি করেন বাইডেন। আমেরিকার মধ্যে টিকা তৈরির পর্যাপ্ত কাঁচামালের বন্দোবস্ত করা এই আইনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। পুনাওয়ালার কথায়, ‘‘এখানেই বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা প্রয়োজন। তাদের বোঝানো প্রয়োজন যে, সব কিছুই যথেষ্ট পরিমাণে আছে। আমরা সারা বিশ্বে নিখরচায় টিকা সরবরাহের কথা বলি। কিন্তু আমেরিকা থেকে যদি কাঁচামালই না-আসে, তা হলে বিষয়টা গুরুতর হয়ে দাঁড়াবে।’’ স্বামীনাথন বলেন, ‘‘কাঁচামালের অভাব রয়েছে। এ নিয়ে বিশ্ব জুড়ে সমঝোতা দরকার। রফতানি যাতে নিষিদ্ধ না-হয়, সমন্বয় দরকার তা নিয়ে।’’ আগামী সোম ও মঙ্গলবার টিকা সংক্রান্ত সহযোগীদের সঙ্গে এ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বৈঠকে বসবে বলে জানান তিনি।
এ দিকে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, সারা দেশে এখনও পর্যন্ত ১.৮ কোটির বেশি মানুষ করোনার টিকা নিয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন সংক্রমিতের সংখ্যা আবার ১৬ হাজার পেরিয়েছে, যা একই সময়ে সুস্থের সংখ্যার চেয়ে প্রায় তিন হাজার বেশি। তবে সুস্থতার হার ৯৭.০১ শতাংশে পৌঁছেছে।